Sunday, 26 May 2024

ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৮১

 


ইতি মণ্ডল এর কবিতা 

মনের ভিতর মন


৬.

আমি একটা গাঁও চাই !

যে গাঁয়েতে আছে আমার 

ফেলে আসা স্মৃতি আধার।

আঁকা বাঁকা মেঠো পথের

দু,ধারেতে সোনার প্রলেপ।

এলো চুলের ছোট্ট বেনী

দুলতো শুনে মোহন ধনী।

পাঠশালাতে ছুটির দিনে

আমরা ভাসি শাপলা বিলে।

শিউলি তলে আঁচল পেতে

ভরিয়ে নিতাম দিনে রাতে। 

সাঁঝের বেলা পাঠের টোলে

আসতে তুমি দেখার ছলে।

মিষ্টি চোখের চাহ নিতে 

আমার তুমি মন ভোলাতে।।



৭.

আমি একটা বৃষ্টি বেলা চাই!

যে বৃষ্টির দমকা হাওয়া 

উড়িয়ে দেবে চাওয়া পাওয়া।

টাপুর টুপুর ছন্দ দোলায়

ঝরবে অঝোর সকাল বেলায়।

মুখোমুখি মনের ঘরে                                                               বসবো দুজন প্রানের পরে।         

শূন্য ঘরে শূন্য মনে

ভরিয়ে নেবো আপন জনে।

ছিটকে আসা বৃষ্টি ফোঁটায় 

সিক্ত হবো তোমার ছোঁয়ায়।।



৮.

আমার একটা তুমি চাই!  

যে তুমিকে চাইবো সাথে

জ্যোৎস্না ঝরা মধুর রাতে।

 নয়ন বেয়ে জল গড়ালে 

অনু রাগের ছোঁওয়া দিয়ে,           

আলতো করে সোহাগ ভরে           

মুছিয়ে দেবে জুঁই রুমালে।

বলবে তুমি আদর গলায় 

রাগ করেছো আমার কথায়?

বিষাদ মনে মেঘলা দিনে

শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে,

বসবে এসে আমার পাশে

এক পশলা প্রেমের টানে।

খোঁপায় দেবো বেলির কুঁড়ি 

আতর মাখা মন ময়ূরী,

উঠবে নেচে পেখম মেলি

বাজবে রিনি হাতের চুড়ি।

মিষ্টি চোখের মিষ্টি হাসি 

আকাশ রাতে শলমাজরি

আলতো করে আলতা ঠোঁটে

ভরিয়ে দেবে আমায় চুমে।।



৯.

তুমি যখন আকাশ হয়ে

ঢাকবে মেঘে বেলা

আমি তখন বৃষ্টি হয়ে

ভাসবো নিয়ে ভেলা।


তুমি যখন সূর্য হয়ে

জ্বালবে অগ্নি পাখা

আমি তখন ছায়া হয়ে

মিলবো শত শাখা।


তুমি যখন পাহাড় হয়ে

পাথর হবে রেগে

আমি তখন নদী হয়ে

চলব আপন বেগে।


তুমি যখন ডিঙি হয়ে

ভাসবে নদীর বুকে 

আমি তখন ঢেউ হয়ে

দুলবো তোমার চোখে।


তুমি যখন বৃষ্টি হয়ে

ঝরবে উঠান মাঝে

আমি তখন নূপুর পায়ে 

নাচবো রঙিন সাজে।


তুমি যখন অস্ত যাবে 

রাঙিয়ে আকাশ শেষে

আমি তখন রাঙা হয়ে

ছড়িয়ে  বিশ্ব বেশে।।


১০.

কালবৈশাখী তুমি কি আসবে?

ঘুটঘুটে কালো মেঘ নিয়ে

গুরু গুরু  রব তুলে

গোমড়া মুখে অম্বর মাঝে।

তপ্ত ধূলা উড়িয়ে দিয়ে 

দুর্নিবারের ঘূর্ণি পাকে 

অশ্বমেধের ঘোড়ার সাজে

রুদ্র বেশে ভুবন মাঝে।


মেঘ তুমি কি আসবে?

বজ্রসহ বৃষ্টি নিয়ে 

শিলে শিলে ভরিয়ে দিয়ে 

ঝমঝমিয়ে খরার মাঝে।

গাছের তৃষা মিটিয়ে দিয়ে

ক্ষেতের ফসল ফলিয়ে নিয়ে

পরান মাঝির গান শুনিয়ে

নদী হয়ে সাগর মাঝে।


বৃষ্টি তুমি কি আসবে ?

শাওন গগন ভেদ করে 

সোঁদা মাটির গন্ধ মেখে

ভালোবাসার বন্ধু নিয়ে 

আকাশ সমান প্রেম নিয়ে 

হারিয়ে যাওয়া হৃদয় মাঝে।।

..........................


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - অভিষেক নন্দী

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

Sunday, 19 May 2024

তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা // ই-কোরাস ১৮০

 



তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা

১.

মহানির্বাণ

 

চুন্দ, চুন্দ, এখনি এই শূকর মাংস

মাটির গভীরে পুঁতে ফেলো,

পৃথিবীতে এমন কেউ নেই

যে এই মাংস পরিপাক করতে পারে,

আঃ আনন্দ, শালবৃক্ষের অন্তরালে

বড় সুন্দর শয্যাটি পেতেছ,

শাল আমার বড় প্রিয় -

শাল, শ্বেতহস্তী, হস্তীর মাথায় চাঁদ •••

এই শয্যায় সিংহভঙ্গিমায় শুয়ে শুয়ে বলে যাই

এই জীবনের শ্রেষ্ঠ তিন সুখাদ্যের কথা -

চুন্দের দেওয়া শূকরমাংস,

হ্যাঁ আনন্দ, তুমি সবাইকে বোলো

চুন্দর মাংসটি বড় উপাদেয় হয়েছিল;

আর সুজাতার পরমান্ন।

আনন্দ এসো আমার নিকটে এসো,

আমার স্বর বড় দুর্বল,

অত দূর থেকে শুনতে পাবে না,

তৃতীয়, তৃতীয়টি যশোধরা দিয়েছিল,

না না সেটিই প্রথম,

আনন্দ কাউকে বোলো না,

তোমাকে শুধু তোমাকেই বলে গেলাম

যশোধরা আমাকে অমৃত পান করিয়েছিল,

তার সুবর্ণকলসের মতো স্তনের অমৃত…

আঃ আনন্দ শালবনে অন্ধকার নামছে,

এখন নিজেকে জ্বালো,

নিজের প্রদীপ হয়ে ওঠো ।


২.

সিঁড়ি


আমি একটা মানুষকে চিনি,

যার কাজ মন্দিরের সিঁড়ি ধোয়া,

পাহাড়ের ওপরে সে মন্দির,

যেখানে সবাই ছোট ছোট ঘণ্টা বেঁধে আসে,

হাওয়ায় ঘণ্টা নড়ে

আর এ পাহাড় থেকে ও পাহাড়ে ছড়িয়ে যায় টুং টাং টুং....


গুণে দেখেছি 

মোট ৭৭৭ টা সিঁড়ি ভেঙে সে মন্দিরে উঠতে হয়,

প্রতিদিন মানুষটা সেই ৭৭৭ টা সিঁড়ি ধোয়,

এটাই তার দিনের প্রথম কাজ,

তারপর তার হয়তো অনেক কাজ থাকে,

খেতিবাড়ি, চৌকিদারি, ড্রাইভারি,

কিংবা চুপচাপ নদীর ধারে একটা পাথরের ওপর বসে থাকা-

আমি শুধু তাকে সিঁড়ি ধুতে দেখেছি,

আমরা যখন হাঁপাতে হাঁপাতে

সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরে উঠছিলাম,

আর মাঝে মাঝেই দাঁড়িয়ে পড়ে

মোবাইলের টাওয়ার খোঁজার চেষ্টা করছিলাম,

আর না পেয়ে একটার পর একটা সেলফি তুলছিলাম,

তখন লোকটা কোনদিকে না তাকিয়ে সিঁড়ির পাথর ধুয়ে চলছিল,

আর তার মুখে ফুটে উঠছিল  বিশুদ্ধ আনন্দ!


কত কাজ পড়ে,

তবু তার কোন তাড়া ছিল না,

তাকে দেখে মনে হচ্ছিল

পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো কাজটা সে করছে!


আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই

৭৭৭ কিংবা তার বেশি সিঁড়ি আছে,

আমরা সবাই তা বেয়ে

কোথাও না কোথাও ওঠার চেষ্টা করি,

কিন্তু কি আশ্চর্য, সেই সিঁড়ির ধাপগুলো

এত ভালবেসে ধোয়ার কথা কেউ ভাবি না....

.....................................




সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - অভিষেক নন্দী

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

Thursday, 16 May 2024

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা // ই-কোরাস ২০

 



পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা ২০

রূপছায়া টকিজ – বালিচক

শ্রীজিৎ জানা


সিনেমাহলে প্রবেশের আগে, এক প্রস্থ অন্য কথা হোক। আরে মশাই!  বিরক্ত হন কেন! দেখুন না ক্যামন রুমাল থেকে বিড়াল করে দিই! মানে মিলিয়ে দেব সিনেমার সাথে সিনে -ম্যানের। আসলে তিনি মানুষটা ছিলেন অন্য মনের — অনন্য মনের। এক প্রকার জসিদার বলা- ই যেতে পারে। নাম রাসবিহারী করসিংহ। বাবা ভজহরি করসিংহ। মাতা চম্পকলতা দেবী। পড়াশুনা তাঁর মাত্র ক্লাস এইট অব্দি। কিন্তু তিনি শিক্ষাদরদী এবং দূরদর্শী। এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য  দান করলেনযৃ পঁয়ষট্টি একর জমি। গড়লেন বাবার নামে ভজহরি উচ্চ বিদ্যালয়, বালিচক। মায়ের নামে ছাত্রদের জন্য গড়লেন 'চম্পকলতা' ছাত্রাবাস। একটা নয় তিনখানা ছাত্রাবাসের বিল্ডিং! আবাসিবক ছাত্ররা যাতে মাছ ভাত খেতে পারে সেইজন্য দু'খানা পুকুর কাটলেন! শুধু কী পড়াশুনা! খেলাধূলাকে উৎসাহিত করতে চালুন করলেন মায়ের নামে ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করলেন – চম্পকলতা শিল্ড। বাইরের রাজ্য থেকে দল অংশগ্রহন করত সেই টুর্নাসেন্টে। আর সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে স্থাপন করলেন বিনোদনের কেন্দ্র রূপছায়া টকিজ।


 রূপছায়া টকিজ -এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে চারটি পরিবার। বালিচকের করসিংহ, রায়, জানা এবং রাধামোহনপুর গ্রামের হুই পরিবার। রাসবিহারী করসিংহ হলেন রূপছায়ার প্রতিষ্ঠাতা। অজিত রায়,সুরেশ হুই, ত্রৈলোক্যনাথ জানা প্রমুখরা ছিলেন রূপছায়া টকিজের অংশীদার। সিনেমাহলের শুরুটা হয় একটু অন্য ভাবে। ওই চার পরিবার প্রথমে বালিচক রেললাইন সংলগ্ন চার একর বিয়াল্লিশ ডেসিমাল জায়গা ব্যাবসার জন্য কেনেন। চালু করেন শশী রাইস মিল।  ওই মিলের শশীবালাম চাল  কলকাতার বাজারে যথেষ্ট কদর ছিল। রাইস মিল চলছে রমরমিয়ে। হঠাৎ খেয়াল চাপল সিনেমাহল করার। ওই মিলের দক্ষিণ পূর্ব কোণে গোটগেড়া মৌজার দশ ডেসিমাল এবং গৌরাঙ্গপুর মৌহার আঠার ডেসিমাল জায়গার উপর তৈরি হল রূপছায়ার কাঠামো। কংক্রিটের দেয়ালের মাথায় বসল টিনের চাল। রূপছায়া পথ চলা শুরু করে ১৯৫৪ সালে। তখন মেঝেতেআর পাটাতনে  বসে দর্শকরা সিনেমা দেখতেন। টিকিট মূল্য ছিল চার পয়সা, দশ পয়সা। মেসিনপত্র সব ভাড়ায় আনা হয়েছিল। কিন্তু ভাল সাড়া মেলায় মালিক পক্ষ এবার সিনেমাহলের দিকে একটু বাড়তি নজর দিলেন। কলকাতার জনৈক বিশ্বনাথ সেনগুপ্তকে ধরে কিনে আনলেন প্রোজেক্টর। কাঠের চেয়ার বসানো হল। টকিজ চলতে লাগল সগৌরবে।


কিন্তু ১৯৮৪ সালের মে মাসে সিনেমাহল বন্ধ হয়ে যায়। কারণ একটি অভিযোগ। প্রেক্ষাগৃহের যেদিকে পর্দা, সেই দিকেই ছিল পস্রাবখানা।  দুর্গন্ধ ছড়ানোর জনবয প্রক্ষাগৃহে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ অথবা কারা তৎকালীন ডি. এম সাহেবের কাছে অভিযোগ জানান। লাইসেন্স রদ করেন। তারপর আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয় রূপছায়াকে। এবার সিটে গদি লাগানো হয়। ব্যালকনি করা হয়। এরই মাঝে ওই অংশীদাদের মধ্যে অজিত রায়, যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এমনকি পরে তাঁর অংশ বিক্রি করে দেন। এবার বাকি  তিন অংশীদারদের মধ্যে করসিংহ পরিবারের স্বপন করসিংহ সিনেমাহলের দায়িত্ব নিলেন। নতুন করে সেজে উঠল সিনেরমাহল। তাঁর আমলে প্রথম ছবি চলল  আগামীকাল'। আগে রূপছায়ার সিট সংখ্যা ছিল ৫২০। কিন্তু এবার তা বাড়িয়ে করা হল ৬১৪ আর ব্যালকনিতে রাখা হল ১০০ টি আসন। এমন সময় হঠাৎ রূপছায়া টকিজের টিনের চাল ভেঙে পড়ে। ফলে আবার নতুন করে গড়তে হয়।এবার কিন্তু ব্যালকনিতে দুজন করে বসার জন্য কাঁচের ঘরের বক্স করা হল। নীচে টিকট মূলবয ছিল ১০ টাকা,১৫ টাকা ২০ টাকা আর বক্সের জন্য ছিল ১০০ টাকা। তবে পরে নীচের তিনটে রো এর জন্যই ২৫ টাকা দর্শনী করে দেন। রূপছায়ার শো টাইম ছিল ২.৪৫ মিনিট, ৫.৪৫ মিনিট এবং ৮.৪৫ মিনিট। তবে মূলত দুটো শো হত। আপ ও ডাউন ট্রেন আসত ২টা ১০ মিনিট। ফলে প্রথম শো তে ভীড় থিকথিক করত। হাউর, ক্ষীরাই, মাদপুর, জকপুর, শ্যামচক, রাধামোহনপুর থেকে দর্শক আসতেন।


     প্রতি শুক্রবার গাড়িতে প্রচার হত। এছাড়া রিক্সাতে প্রতিদিন প্রচার করতেনশঙ্কর সুর। বিরতির মাঝে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি ভেসে উঠত রূপছায়ার ৩২ ফুট বাই ২৮ ফুট পর্দায়। মাসে পঞ্চাশ টাকা ভাড়া নেওয়া হত প্রতি বিজ্ঞাপনে। ওই বিরতি চলাকালীন ছোলা, বাদাম বিক্রি করতেন স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ গাঙ্গুলী। স্টাফ ছিলেন প্রথম দিবকে একুশ জন। পরে তের জন থাকতেন। চিফ অপারেটর ছিলেন সাধন জানা (বালিচক), রাধেশ্যাম দে (নরসিংহপুর), নব চ্যাটার্জি (বালিচক)  প্রমুখ। কলকাতা থেকে বই আনতেন অশোক দে (বালিচক)।  সিনেমাহল বন্ধের পর প্রত্যেককে সেইসময় এককালীন তিরিশ হাজার করে টাকা দেন মালিকপক্ষ।  অনেকে বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। তাঁদের অনেকেই আজ জীবিত নেই। দু'একজনের এখনো পান দোকান রয়েছে বালিচক বাজারে।


 রূপছায়া নামের সিবনেমাহল আরও আছে। হাওড়ার বেড়াচাপাতে আছে রূপছায়া এবং ঝাড়গ্রামে আছে রূপছায়া।  কিন্তু ডেবরা ব্লকের বালিচক স্টেশন সংলগ্ন রূপছায়া ছিল বাংলা ছবির স্টেশন। সংঘর্ষ, বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না, প্রতিবাদ প্রভৃতি বই টানা তিন মাস, ছ'মাস করে চলে। সেই সময় 'নবাব নন্দিনী' সিনেমা চলাকালীন আসেন নায়িকা পল্লবী এবং নায়ক—। শুরুর দিকে ১৫ ই আগষ্ট স্টুডেন্টদের জন্য ফ্রিতে দেশাত্মবোধক ছবি দেখানো হত। রূপছায়াতে সিনেমা প্রদর্শনের বাইরে সাংস্কৃতিক প্রসার ও প্রচার কার্যে ভাড়ায় হত। বালিচকের আকাশকুসুম সংস্থার উদ্যোগে বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠান হয় রূপছায়া প্রেক্ষাগৃহে। আসেন শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নচিকেতার মতো নামীদামী সংগীতশিল্পী বৃন্দ। রপছায়াতে সিনেমার শুটিং পর্যন্ত হয়েছিল। রূপছায়ার মালিকপক্ষের মধ্যে প্রফুল্ল রায় এবং বিভূতি হুইয়ের নেশা ছিল সিনেমায়। কলকাতায় তাঁরা গড়লেন ডিস্ট্রিবিউটার হাউস। নাম রাখলেন ভবতারিণী পিকচার্স। তাঁদের প্রোডাকশনে মুক্তি পেল 'ত্রৈলঙ্গ স্বামী',  'জন্মতিথি', 'বীরেশ্বর বিবেকান্দ', 'লবকুশ' প্রভৃতি সিনেমা। এদের মধ্যে জন্মতিথি ছবি জাতীয় পুরস্কার পায়। যার শুটিং হয় রূপছায়া সিনেমাহলে এবং পার্শ্ববর্াতী রায়খাঁ গ্রামের হরিসায়র পুকুরে। 


এত ঘটনাবহুল রূপছায়া বন্ধের প্রধান কারণ হিসেবে তায়ী করলেন স্বপন করসিংহ জানালেন শরীকী ঝামেলাকে। রূপছায়ার অংশীদার তিনটি পরিবারের সদস্য মিলে অনেক ছিল। সেইসব চাপ এড়াতেই ২০১৬ ৩১ শে মার্চ বন্ধ হয়ে যায় রূপছায়া। আজ বালিচক পৌঁছে ট্রেন লাইনের ক্রসিং পেরিয়ে হাঁটা দেবেন দক্ষিণে। মাথার উপরে ওভার ব্রিজ ঝুলে থাকবে। খুজবেন রূপছায়াকে। কিন্তু সেই একসময়ের বাংলা ছবির স্টেশন রূপছায়া, রূপ মিলিয়ে গেছে কোথায়! শুধু তাঁর ছায়াটুকু স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে স্টশন চত্বরের অনেকের মনে।


তথ্যসূত্র :—

শ্রী স্বপন করসিংহ – বালিচক,ডেবরা।




সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪


Sunday, 12 May 2024

ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭৯


 


ইতি মণ্ডল এর কবিতা 

মনের ভিতর মন

আমার  একটা বসন্ত চাই! 

যে বসন্তে প্রিয়ক  হয়ে,

বসবে তুমি আমার পাশে। 

শিমূল পলাশ চূড়ার তলে,

গুন গুনিয়ে কথা কবে।

সূর্য যখন পাটে যাবে 

রামধনু রঙ খোয়াই তটে।

হাতের উপর হাতটি রেখে,

ঠোঁটের উপর ঠোঁটটি দিয়ে-

গুনগুনিয়ে গান শোনাবে।।


২.

আমার একটা ফাগুন চাই!

যে ফাগের রঙে উড়িয়ে দিয়ে 

দুঃখ চেপে হৃদ্ মাঝারে,

আমায় তুমি আপন করে 

অশোক রঙে রাঙিয়ে দেবে। 

রঙ তুলিরই কার সাজিতে 

আমায় তুমি সাজিয়ে নেবে,

রঙিন মনের ক্যানভাসেতে। 

শূন্য শাখে কিশলয়ে 

জীবন তৃষা ভরিয়ে দিয়ে,

বাঁধবে তুমি হৃদয় ডোরে।।


৩.

আমার একমুঠো ঝরা পলাশ চাই! 

ঝরা ঝরা পাপড়ি গুলো 

ঝেড়ে নিয়ে তাদের ধূলো ,

রং তুলিরই ধোওয়া জলে 

একটা একটা ডুবিয়ে নেবো।

রঙিন হবে শুকনো পলাশ

থোকে থোকে তাদের আবার 

নিঃশ্ব শাখে গেঁথে দেবো।

খিলখিলিয়ে উঠবে তারা 

আমরা আবার প্রেম বিলাবো।।


৪.

আমার একমুঠো ঝরা আবির চাই!

প্রান্তিকের ওই আবির গুলোয়

ভরে নেবো হাতের মুঠোয়।

হারিয়ে যাবো অনিয়মে 

লুকিয়ে আছে যে প্রিয়রা 

আমার মনের অঙ্গনে।

তাকিয়ে দেখে ফ্যাল ফেলিয়ে

মাতাল হওয়া রঙিন দিনে।

বেরঙিন ওই জীবন মাঝে 

ক্ষুধার জ্বালায় যাপন কাটে।

ব্রাত্য ওরা সবার কাছে, 

আলতো করে ওদের গালে 

আঁকবো আমি রঙের প্রলেপ।

খিলখিলিয়ে উঠবে ওরা 

তোমার আমার প্রেম প্রাসাদে।।


৫.

আমার একটা তরণী চাই!

যে তরীতে হালটি ধরে 

বসবো আমি নাবিক হয়ে। 

মরছে যারা কাতরে কাতরে

যন্ত্রণার ই মরণ ফাঁদে।

উজান ভাটার বক্ষ চিরে 

নিয়ে যাবো সুখের তীরে ।

যেখানে তে আছে আমার

চাঁদের হাটের ছোট্ট কুঁড়ে।

ভাসবে তারা স্বপ্ন নীড়ে 

তোমার আমার প্রেম সাগরে।।



সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - প্রেম মুখার্জি

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

অমৃত মাইতি এর গদ্য // ই-কোরাস ১০৮

  আমি এক নদী অমৃত মাইতি আমি এক আঁকাবাঁকা নদী। জন্মের পর থেকেই শুধু বাধা বাধা আর  বাধা। বাধার পাহাড় বেরিয়ে আমি কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি মোহনার ...