Saturday 31 December 2022

নিউইয়ার সেলিব্রেশন অথবা গমগম ফসফস // ই-কোরাস ৮৯

 



নিউইয়ার সেলিব্রেশন অথবা গমগম ফসফস 

শ্রীজিৎ জানা

বাইশ ফুরোলে তেইশ। সোজাসাপ্টা হিসেব। আবির রঙের রোগা লিকলিকে চেহারার ধারাপাত। তার জমিতে কালো অক্ষরে ছাপা সংখ্যার ক্রম। একে চন্দ্র, দুয়ে পক্ষ। এসব ডিঙিয়ে দু'দশ দুই বাইশ। দু'দশ তিন তেইশ। বিকু স্যারকে জানো না! বিজয় কুমার সামন্ত। খাতায় সই করতেন --বি.কু। অঙ্কেরর ক্লাসে সংখ্যার জাগলারি খেলতেন। বাইশের আগে কত? পিছে কত? বাইশ-তেইশের মাঝে কত? বাইশ মানে জমজ দুই। যেন মানিকজোড়  দু'ভাই। এমন করে সংখ্যা নিয়ে লোফালুফি করতেন তাতে সবার পিলে চমকে চমকে উঠত। 

তবে কথা হচ্ছে তিন সাড়ে তিন দশক আগের। তখনো দেখা হলে কেউ কাউকে বলত না  'হ্যালো গাইস্'! কুশল জানতে পিঠে ধাঁই করে থাবড়া মেরে বলত না--হোয়াটস্ আপ ব্রো? খারাপ কিছু দেখলেই বিস্ফারিত চোখে বলতে শুনিনি --ও সিট্! মেয়ের বান্ধবী সেদিন বললে;

:আঙ্কেল তোমাকে হেব্বি কূল লাগছে!

বললুম ----তা টপাকুল, নারকেল কুল নাকপ মরাডাঙ্গা বনের বেতকুল?

মেয়ে তো আকাশ থেকে সোজা ধপাস। টপা আর বেতকুলের কুলকিনারা পেতে  কুলকুন্ডলীর ভেতর দিয়ে তার কুলকুল করে গরম স্রোত বয়ে যাওয়ার জোগাড়। কুল শব্দদ্বয় তার হেডের উপর দিয়ে বাউন্স করে সোজা গ্যালারির বাইরে। কুল চিনবে কি, মনে মনে রাগে তার কূলপাণা চক্কর! কুল বলতে মেয়ে তো নারকেল কুল বই চেনেনা। চিল বলতে চেনে 'চিল বিয়ার'! তিরঙ্গা বলতে চেনে গালের দেওয়াল টেনে চোয়াল ঘেঁষে ঠুসে দেওয়া তামাকজাত মশলা। "দোষ কারো নয় গো মা"। দেশের নায়ক-নায়িকারা লোভেরর পসরা সাজিয়ে বলছেন--- জুবা পে কেশরী। দানে দানে মে কেশর। অথবা সর্বগ্রাসী  বলিউড শেখাচ্ছে গান---পিয়া নেহি তো পার্টি ক্যায়সি?

এতসব কথার মাঝে তেইশের আগমন। কিন্তু বাইশ যাবে তেইশ আসবে। তাকে নিয়ে এত লাফানঝাঁপান কিসের বাপ? নটুদা বললে,

-----তুমি বুড়িয়ে গেছো বাপ্। সাইডে গ্যারেজ হয়ে যাও। আজ ফুল নাইট মস্তি চলবে। নিউ ইয়ারকে ওয়েলকাম করতে চোখে নো ঘুম।অনলি ধামাকা। সাথে ঢুকুঢুকু আর ঢকাঢকা। মানে গানে-পানে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন। পুরাতন দুখ্যু, যন্তণা ফেলিওর সবকে ঝাড়পুঁচ করে দেব। নতুন বছরের দেওয়ালে নতুন ড্যামপ্রুফ কালার লাগিয়ে দেব। নিউ ড্রিম, নিউ রেজুলেশন। 'করবো লড়বো জিতবো রে"। চোখ খুলে দেখো কাকা হোল ওয়ার্ল্ডে নাইটে লাইটে সেজে উঠবে। আর আতশবাজিতে ফুঁসফুঁসিয়ে উঠবে বাতাস। সামান্য কলকাতাকে দেখো কিংবা হাফপ্যান্টের শহরগুলোর আয়োজন দেখলে ভির্মি খাবে। ডিজে উইথ ডিজে গার্ল।  সময়ের সঙ্গে "কদম কদম বাড়ায়ে যা,"! সোসাইটি চাইছে সেলিব্রেশন! এন্টারটেনমেন্ট! মানে "মেক সাম নয়েজ "! এসব মানতে পারলে থাকো নইলে বাপি বাড়ি যা।

শান্তি পেতে গুরুদেবকে পাকড়াও করলুম,

--- গুর্দেব বাইশ গজের খেলা তো শেষ। মাঠের ভিতরে স্কোর বোর্ডে স্কোর গোল্ডেন ডাক। গ্যালারির বাইরে আত্মীয় পরিজন সবার কাছ থেকেই উদুম স্লেজিং। জীবনের বাইশ সালটা কাটলো এমবাপের মতো ট্রাজিক হিরো হয়ে। চীনের করোনা, সরকারের দক্ষিণা আর নিরাকারের করুণায় মোটের উপর দাঁতে দাঁত চেপে টপকে গিয়েছে সালটা। সামনের তেইশ কেমন কাটবে সবিস্তারে বর্ণনা করুন।

গুরুদেব উবাচ--- গতস্য শোচনা নাস্তি। গানটা শুনিস নি 'যা গেছে তা যাক'। পঞ্জিকার মতে তেইশও বেগ দেবে বিস্তর। তবে মনে জোর রাখ আর গুরুপদে মতি। তাহলেই সদগতি।

----- না, মানে, শনি রাহু কেতুবাবুরা কি স্বস্থানে অবস্থান করবেন? নাকি মিউজিকাল চেয়ার খেলে বেড়াবেন? তাহলে প্রতিকার বলে দিন গুর্দেব। দশ আঙ্গুল ভরে গেছে পাথরে। এবার পুরো আস্ত একটা পাহাড় মাদুলি করে গলায় ধারণ করব।

-----ধুর্ ব্যাটা বুড়বক্  গ্রহরা তো ঘুরবেই। নইলে খেলা হবে কি করে? আগে তারা টেস্ট ম্যাচ আর ওয়ান ডে খেলতো। এখন টি-টোয়েন্টি আর টি টেন খেলছে। মানে ধর তক্তা মার পেরেক। এই দেখলে ভিখারি, এই সে রাজা। এই দেখলি জ্যান্ত কৈ মাছের মত ধড়ফড় করে লাফাচ্ছে, এই তাকে দেখবি ক্লিনবোল্ড। সবই গ্রহের কেরামতি। ভাবিস না। মহা মৃত্যুঞ্জয় কবচ দেবো,। দক্ষিণা একটু মোটা লাগবে। মোটা মানে কেষ্ট বিষ্টুর মত মোটা।

মরা কইভোলা মাছের মত মুখ করে চেয়ে রইলুম গুরুদেবের শ্রীবদন পানে।

দিনকাল তারর আপন ছন্দেই পাল্টাচ্ছে স্বরূপ। হ্যাপি নিউইয়ার নাকি শুভ নববর্ষ! বাংলাপক্ষ ইংরেজিপক্ষ দুজনেই নারদ -নারদ! 'হ্যাপি' আর 'নিউ' শব্দ দুটো আজকাল বড্ড ভাবায়! হ্যাপি কে? অথবা কারা? হ্যাপি থাকার মন্ত্র কি? নিউ আসলে কত দিন নিউ? শুভ-অশুভের ফারাক বুঝতে চাইছে কি  নতুন প্রজন্ম? নিউইয়ার আর নববর্ষ আসলে যে দুটো সংস্কৃতিকে তুলে ধরে তার ফারাক বুঝতে চেয়েছে কি আজকের যৌবন?  ওদেশ হ্যাপি থাকতে চায়। এদেশ নতুনবর্ষে শুভ কামনা করে। সুখ ক্ষনিক। শুভের ফল সুদূরপ্রসারী। যদিও-

 "ঘুচে যাক গ্লানি 

মুছে যাক জরা

শুদ্ধ স্নানে শুচি হোক ধরা"

-র মতো প্রার্থনা নিউ ইয়ারের সেলিব্রেশনের রাতে  আজকের তারুণ্যের কাছে বড্ড বোরিং সং মনে হবে। আজকে উদযাপন মানেই ফুল মস্তি। ফুল নাইট পার্টি। উদম নৃত্য সাথে পাটিয়ালা পেগ। 'জিও জিন্দেগি জি ভরকে'! এমন আনন্দ কতক্ষণের! এমন উদযাপন কতটা শান্তি দ্যায় মনকে। নাকি ভেতর ঘরের দৈন্যতাকে ঢাকার জবরদস্তী আয়োজন। গ্লাসে গ্লাস ঠুকে যে আনন্দ বিনিময় সেই আনন্দের উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখছি কি ভেতরে ভেতরে একা হয়ে যাওয়া পাশের মানুষটাকে!নটুদা বল্লে --হয়তো হতাশার মতো শোনাবে। তবু এত যে আড়ম্বর আসলে সবই ফক্কা। সারারাতের হ্যাং ওভার কাটতে না কাটতেই খবর পাবি ধর্ষণের,রাশিয়ার বোম ফেলার,নেতাদের বাটপারি। সবই দেখানেপনা। মার্কেটিং স্ট্যাটিজি।আমার কাছে নিউইয়ার মানে বেলুন,রঙিন ফিতে,টুনি বাল্ব আর আতসবাজি। কিন্তু নববর্ষ মানে মাটির প্রদীপ,মঙ্গলশঙ্খ,ধূপধূনো,আরতি, মন্ত্রোচ্চারণ। 

"সমারোহে এসো হে পরমতর

সুন্দর এসো হে"। 

মেলেনা রে দুটোতে কিছুতেই। জোর করে বকচ্ছপ সাজাছি।

----কিন্তু কালচারের আদানপ্রদান হলে দোষ কোথায়? রবি ঠাকুর তো বলেছেন--দেবে আর নেবে মিলাবে মিলিবে।

----কি নিয়েছিস?রাস্তায় দাঁড়িয়র চুমু খাওয়টা যেমন নিবি তেমনি রাস্তায় ফকফক করে পিক না ফেলার সুঅভ্যাসটাও নে। খামোখা ধার করতে যাস না।ঋণ করা বড় দোষ।

মনের কোনে মেঘ জমে। মন হেঁটে যায় ডাউন মেমোরি লেনে। সেই সবে গাঁ-গঞ্জে নিউইযার গ্রিটিংস বিক্রির সবে চল এসেছে। এক টাকা দামের গ্রিটিংস কিনে তাতে ছড়া লিখেছিলুম--- 

পাকা জাম মিষ্টি

গোল লঙ্কা ঝাল 

তোমার আমার বন্ধুত্ব 

থাকবে চিরকাল। 

তেমন বন্ধুত্বের তার কেটে গেছে কবেই।অনেকের সাথে আজ আর যোগাযোগ নেই।  ফেসবুক যদিও ফিরিয়ে দিয়েছে অনেককে। এই নিউইয়ারে তাদের সাথে শুকনো শুভেচ্ছা চালাচালি হবে জোরকদমে।  তারপর---আজ দুজনার পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে।  ফেসবুকে ফ্রেন্ড হয় না। ফ্যান হয়। বন্ধুত্ব আর কোন গুণমুগ্ধের তফাৎ বিস্তর। নতুন বছরের সামনে দাঁড়িয়ে তবু স্বপ্ন দেখা। স্বপ্ন দেখতে চাই বলেই হয়তো ভুবন ভরে এত আয়োজন। কথায় বলে-- শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আবার কেউ বলে---সকালেই নাকি দিনের পরিচয়। আসুক একটা রোদ ঝলমলে নতুন সকাল। মনমরা বেকারের চোখে ফুটে উঠুক কাজ পাওয়ার আনন্দ রোদ্দুর! রাজপথের ধরনাতলার হাতে পৌঁছে যাক বাদামী খামের হাস্নুহানা ফুল। চা -দোকানের বাচ্চা মেয়েটা একটা গোটা পাউরুটি আর এক গ্লাস দুধ -চা পাক। প্লাটফর্মের ছেলেটাকে কেউ তো দিক একটা গরম সোয়েটার। গাুয়ের দলুই পাড়ার মাধবীদিকে বিয়ে করে নিয়ে যাক কেউ। সবার জন্য একটা শক্তপোক্ত ছাত তৈরি হোক। প্রতিদিন একসাথে কফিতে চুমুক দিক পুতিন--জেলেনেস্কি। সীমান্তগুলি বারুদের চিৎকার থেমে যাক। পার্লামেন্ট যেন হট্টমালার আখড়া না হয়। এসেম্বলি যেন বিরোধীদের একটু জায়গা দেয়। নেতারা একটু সৎ হতে শিখুক। অভিনেতা আর অভিনেত্রীরা শুধু অভিনয়ই করুক। স্কুলে পড়া হোক। হাসপাতালে চিকিৎসা। আদালতে বিচার। সরকারি দপ্তরে সময়মতো কাজ হোক। সবাই কথা বলুক মুখ খুলে,সাহসে। যে যার মতাদর্শে সৎ থাকুক। ঘোড়া কেনাবেচা বন্ধ হোক। জেল- গারদে অপরাধীরা থাকুক। পাঠ্যবই- এ লেখা হোক আলোকিত মানুষদের কথা। আলোর কথা। খবর পড়া মেয়েটি হাসিমুখে ছড়িয়ে দিক খুশির খবর। নিউ ইয়ারের রাতে পার্ক স্ট্রিটে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াক ঘরের মেয়েরা।

সর্বোপরি নতুন বছরের, ঝাল বেশি দিলে যেমন ধমকাই ফুচকাওয়ালাকে তেমনি যেন পাড়ার নেতাকে  জাল জোচ্চুরি করলে ধমকে বলতে পারি- শুঁটিয়ে লাল করে দেব। নোংরামি বের করে দেব। তা নাহলে বর্ষবরণের এত্ত আড়ম্বর বটুদার কথায়--গমগম ফসফস।

                         ..........................


গ্রাম সংখ্যার প্রকাশিত হয়েছে। আপনি সংগ্রহ করতে পারেন।


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - নিজস্ব

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614


Sunday 25 December 2022

কবিতা সামন্ত এর কবিতা // ই-কোরাস ৮৮

 




কবিতা সামন্ত এর কবিতা

আগাছা

          

শতাব্দীর পর শতাব্দী কেটে যায় 

গোধূলির রঙ মাখা সমুদ্রের 

বুকে ঝাঁপ দেয় জীবন।


কোনটা যে সূর্যাস্ত আর কোনটা 

যে সূর্যোদয় 

গুলিয়ে যায় সব কিছু!


মাথা নত করে সোনালী ধানের 

ক্ষেত তার বিনম্রতার 

প্রমাণ দেয়।


এখানে তরতরিয়ে বেড়ে 

চলে আগাছার দল।


মেদ ঝরা জীবনের সাথে সাথে 

শিরদাঁড়া বেঁকে বসে 

আছে কুঁজি বুড়ি মন্থরার মতো।

       ……………………


জোছনার আঁশটে গন্ধে 


জোছনা যখন

আঁশটে গন্ধ ছড়ায়

তুমি তখন ষোড়শী আর

আর আমি তখন একুশ।


রস থাকলেই যে পিঁপড়েতে চেটে খাবে

তুমি কি জানো না?

যদি নাই জানো তবে

জোছনা লাগতে দিওনা তোমার অঙ্গে।


ষোড়শী হয়ে উঠোনা শরীরের ঘ্রাণে 

নরম পাহাড়ের মায়া ছড়াইও না

ফুল ফুটতে দিওনা

রক্ত জবায় নিজেকে রাঙিও না।


পারবে কি এতোগুলো 

শর্তে নিজেকে বেঁধে রাখতে?

…………………..


শব্দের আয়নাবাজী 


শব্দেরা যখন আয়নাবাজী করে

তখন দুষ্কর হয়ে ওঠে তাকে মিথ্যে মিথ্যে 

সুন্দর করে তোলা।


গলাবাজী করে রূপ আর অবয়ব নিয়ে 

কথা ভারি নাকি সৌন্দর্য!


অবয়ব চাও নাকি মরিচিকার মতো আলেয়া!


সত্যিটা মেনে নিয়ে দেখো

আসলে মরিচীকা ক্ষণিকের অতিথি।


আর অবয়ব আত্মার পরিধি।

……………………



হেমন্তের বৈষ্ণবী



শরতকে শেষ বিদায় জানিয়ে 

হেমন্তের শিশিরভেজা ধানের গাল ভর্তি 

দুধ তখন দামোদর মাসের বৈষ্ণবী 

গান ধরে একলা হরির সামনে।


কদিন পরেই উথ্থান একাদশীর 

প্রাক্কালে শ্রীহরি রাধিকার প্রেমে মজে 

রাস রচনা করবে।


বৈষ্ণবী তখনও তিলক ধারণা করে

সাধন ভজনে ডুবিয়ে রাখবে নিজেকে।


রাসের প্রেমময় চাঁদের জোছনা তখনও 

বৈষ্ণবীর মন ছোঁবেনা।


কারণ বৈষ্ণবীর ললাটে বিরহ যন্ত্রণা লেখা

ওদিকে ধানের গাল ভর্তি দুধের শিশুও 

পোক্ত হয়ে উঠেছে।


সবাই মেতে যাবে লক্ষ্মীর 

আগমনের উল্লাসে।

সেদিনও বৈষ্ণবী হরিনামের মালা জপবে।

দূরে কোথাও রাতের পেঁচার ডানা 

ঝাপটানি শুনতে শুনতে হরিকে ডাকবে।

…………………..


গুচ্ছ কবিতা


 ১.    

যখন আমি খিদের চোটে 

পশু হয়ে উঠি...


সেসময় কখনো কখনো 

মনে হয় 


ওই যে অধরা 

চাঁদটাকেও গিলে খাই।

...........


.

মেঠো হাওয়ার পরশে 

প্রেমের ছোঁয়া লাগলে...


আলপথের সুজনি 

শাকের সঙ্গেও 

ভালো লাগা তৈরি হয়ে যায়।


শূন্য মাঠের বুকেও 

জ‍‍োছনা রূপসী মনে হয়।

...........


৩.

নির্বিশেষে আমি তোমাকে ভালোবাসিনি

পরিশেষেও আমি তোমাকে ভালোবাসিনি।


ভালোবেসেছি শুধু তোমার কথা বলাকে...

ভালোবেসেছি তোমার চাওয়াটাকে...

ভালোবেসেছি তোমার গোটা পৃথিবীটাকে।


এর পরেও জানতে চাইবে

আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি?

......................


৪.

ও চাষী বৌ...

তোমার জন‍্য মেঠো শামুক 

হতে ইচ্ছে করে।

তোমার জন‍্য ঘাসফুল 

হতে ইচ্ছে করে।

তোমার জন‍্য ঘাসফড়িং 

হতে ইচ্ছে করে।

তোমার জন‍্য সাদা বক 

হতে ইচ্ছে করে।

তুমি যখন মাঠে কাদাজল মাখো

বুঝলে...

আমার তখন তোমার গায়ের 

কাদা হতে ইচ্ছে করে।

……………………




গ্রাম সংখ্যার প্রকাশিত হয়েছে। আপনি সংগ্রহ করতে পারেন


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - কবিতা সামন্ত

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614

Saturday 17 December 2022

কবিতা সামন্ত এর কবিতা // ই-কোরাস ৮৭

 



কবিতা সামন্ত এর কবিতা

১.

স্মৃতি শুধু থেকে যায় সময়ের অন্তরালে

              

জানো,একটা সময় ছিলো শুধুই ভালো লাগার। সকাল থেকে রাত্রি যেন সময় তৃষ্ণার্তের মতো লাগতো। কতো কথা কতো গল্প সব যেন বলেও বলা আর শেষ হতো না।

একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস আর একই উত্তর তবুও বারবার শোনা আর বলা।


আদর মাখানো ভাদরের মন কেমনের সময় বসন্তের রঙে রঙিন হয়ে লেগে থাকতো কাঁচা বাঁশ আর ভ্রমরের গল্পে।

বিছানার চাদরে আতরের গন্ধ ম ম করতো।

ভোরের নরম রোদ জানালার হালকা পর্দার ওপার থেকে আরও নরম হয়ে ভেদ করতো।


ঠোঁট আর বুকের মাঝে অনেকটা সময় আটকে থাকতো দুষ্টুমি ভরা ভালোবাসায়।

শাড়ীর আঁচলে আদর বাঁধা থাকতো বারবার টান পড়তো বিছানায় থাক দুষ্টুমি হাতের মুঠোয়।


তারপর একটা একটা করে দিন পার হয়ে মাস বৎসর চলে যেতে লাগলো ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে। কথায় বার্তায় সময় উঠে এলো দায়িত্বের পরিধি চক্র নিয়ে।

সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে সরে সরে যায়।রোদ জ্বলা দুপুর হেসে বলে মধ‍্যাহ্ন সময়।


এখন আর ভালো লাগার সময় খোঁজার মতো সময় হয়ে ওঠেনা। মেঘলা আকাশের মতো মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে ক্লান্তির হাত ধরে।

জানালার ওপাশে অরণ্যের ভেতর থেকে অন্ধকার এসে জানালা ছুঁয়ে যায়। ছোট ছোট চারা গাছেরাও বৃক্ষে পরিণত হয়েছে নিজের মাথায় রোদ ধরতে ব‍্যস্ত দেওয়াল বেয়ের রোদও আসতে পারেনা ইচ্ছে হলেও।


যে ব‍্যালকনিটাতে বসে দখিণা বাতাসে চুল খুলে হাওয়া লাগাতাম গান শুনতে শুনতে সে ব‍্যালকনিতে শ‍্যাওলা জমেছে।ওখানে আর বসা যায়না সেভাবে।টবে রাখা ফুলের গাছ গুলো কবেই হাসি হারিয়ে নিজেদের মরদেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ঠাঁয়।


রাতের আকাশের তারাদের দিকে কতদিন সেভাবে তাকানো হয় না।বলা যায় ইচ্ছে করেনা।মনে হয় কোন বর্ষাদিনের কাঁদন মেঘের বন্ধ চোখের পাতার নীচে  ওরাও চাপা পড়েছে।

ঠিক খোঁজ নেওয়া হয়নি ওরা আজও সেই চোখ পিটিয়ে মিটিমিটি চায় নাকি!


রূপালী রাতে চাঁদের মোম গালিচা জোছনার রূপ যৌবন পূবের পুকুরের জলে এসে ভালোবাসার খেলায় মেতে ওঠে নাকি তাকানো হয়নি।

দেখার সময় বড্ড ক্লান্তির ঘুম জড়িয়ে ধরে চোখের পাতায় চুমু দিয়ে যায়।ওদের আদর আবদারে আমি গলে গিয়ে চোখ বন্ধ করে দিই বিছানার কোন এক পাশে।


ভোরের সূর্য পর্দার গায়ে লুকোচুরি খেলার আগেই চলে যাই সমুদ্র ডুব দিতে তাই নরম রোদের দুষ্টুমি আমার আর ধরা হয়না।

যে যার মতো করে থাক।আমি নাহয় আর ভালো লাগা খুঁজবো না।

                          …………………. 



২.

যাপন

      

কনের জল সইতে যাওয়া হলুদের রঙ লেগে থাকে হেমন্তের গায়ে। একটা অধ‍্যায় শেষ করে তবেই নতুন অধ‍্যায়ের শুভ সূচনার সূত্রপাত।

কারা যেন হৈ হৈ করে আদরে যতনে নবান্নের নবাআব নন্দিনীকে ঘরে নিয়ে আসে।


এরাও একদিন চোখের কোণে অনেক স্বপ্ন বুনে ছিল। এখন তার সত্যি হওয়ার আনন্দে উৎফুল্ল সবাই।

এখনো বসন্তের রঙ লাগতে অনেক বাকি।


মাঝখানে শুধু বিরহের হাহাকার যন্ত্রনা ঠিক যেন মেয়ে বিদায়ের আগে বাপের বাড়ির মায়া পিছুটান থেকে নিজেকে আলাদা না করতে পারার যন্ত্রণা।


এক জীবনে দু নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না। এটাই প্রকৃতির নিয়মনীতি। প্রিয়ার ঘরের সমস্ত সুখ কুড়িয়ে নিতে হলে পিতার ঘরের মায়া ত‍্যাগ করাটাই নারী জীবনের বিশাল বড় অধ‍্যায়ের জন্ম হয়।


হলুদ রঙের ঝরা পাতা গুলো যেন পিতার ঘরে কাটানো সেই সব দিনের সমস্ত আলপনা আবছায়া হয়ে মুছে যেতে চায়।কিছুদিন মেমরি থেকে সবটা ডিলিট হয়ে খালি এ‍্যলবামের মতো পড়ে থাকে এক কোণায়।আবার এবাড়ি ওবাড়ি সব জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে নতুন করে গড়ে তোলা কতো রঙিন ছবি।


নতুন করে আলপনা আঁকতে হয় নতুন খুশির স্রোতের বুকে।

ততদিনে পাতার মর্মর কান্নার শব্দ কমে আসে আর উঁকি দেয় শাখায় শাখার কচি নরম বাদামি লাল সবুজের কতো ছোট ছোট পাতারা।


একটু বসন্তের হালকা দখিণা হাওয়া দিয়েছে কি দেয়নি অম্নি ফুলে ফুলে রঙিন হতে শুরু করে প্রকৃতির বুক। ঠিক বোঝা না বোঝা নতুন বৌয়ের সাজে মেয়েটির মতো।কতো আর পিছুটান ধরে কান্না করবে! এবার তো আপন বধূর ভালোবাসার পরশে নিজেকে বদলাতেই হবে। হাজার হোক তার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে পরিপাটি করে সাজিয়ে তুলতেই হবে।


সবটাই যে ভুলে গিয়ে নতুনভাবে নতুনের সঙ্গে ঘর বাঁধা।বিরহ না থাকলে পাওয়ার আনন্দটাই যে বৃথা।

ক্ষেতে ক্ষেতে ফসলের সবুজ মায়া আর গাছে গাছে ফুলের।ফাগুয়া রাঙিয়ে দিয়ে যায় গোটা প্রকৃতির বুক।

পাখিরদের কলতান উঠোনে খেলা করে কৃষ্ণ‍চূড়ার রাঙা পাপড়ি।

মধুমাসের যাপন কথা শুরু হয় ফাগের রঙিন পাখনায়।

                       ………………….. 


৩.

পূর্বপুরুষের উঠোন

                         

আমাদের এখন পাখির মতো পাখনা গজিয়েছে। উড়তে উড়তে কোথায় যে উড়ে যাচ্ছি কিছুই জানিনা। মরচে পড়া ঘরের তালা আর শ‍্যাওলা জমা উঠোন ব‍্যবহার করিনা তবুও কখনও কখনও সামনের ব‍্যক্তিকে নাক উঁচিয়ে বলি এই তুমি কি জানো? আমি কোন বংশের বংধর?


আমার সাত পুরুষের পূর্ব পুরুষরা এই করেছেন সেই করেছে। লজ্জায় কুঁচকে থাকা ছাতিটা লোকের কাছে ছাপ্পান্ন ইঞ্চির থেকেও বেশি হয়ে যায়।


কখনও ঠাকুরদার তৈরি সেই শ‍্যাওলা জমা ঘাটের জলে পুঁটি মাছেদের সঙ্গে বসে গল্প করা হয়নি।জলে ডুব  সাঁতার দিয়ে কতোটা শ্বাস আছে আমাদের ফুসফুসে তাও জানা হয়না।কেমন করে রান্না ঘরের চালে বসে শালিক জোড়া তাদের ভালোবাসার খুনসুটি ঝগড়া করে তাও দেখা হয়না।উঠোনে শরতের গন্ধ মাতাল করা শিউলী গাছটার দিকে ঝুড়ি নিয়ে গিয়ে কখনও ফুল ভরে পুরানো ঠাকুর ঘরের দরজা খুলে রেখে আসা হয় না।


নিয়ম করে কুলদেবার আরাধনায় ধ‍্যানে বসাও হয় না।

মা কাকিমাদের রান্না ঘরে গল্প জমে ওঠেনা।হাওয়া বদলের হাসি ঠাট্টা কখনও কখনও আবার রাগে চুড়ির ঝনাৎ কিংবা কড়া খুন্তির বেশিই শব্দ করে কথা বলা অথবা শীল নড়ার ঝগড়ার শব্দ আর আসেনা।সেভাবে পাত পেড়ে একসাথে বসে খাওয়াও হয়না।বলতে গেলে শরীরের মধ‍্যাংশ মানে পেটটা বাইরে বেড়িয়ে না আসে সেই ভয়ে রসে বসে বাঙালী কথাটাই ভুলে গেছি।


দেখনদারির নবাবীআনাতে পেটের কোন কোণে কতোটা খালি সেটাও লুকিয়ে রাখার ভনিতা করতে শিখেছি।


শিখেছি তো হরবোলা পাখির মতো অন‍্যের ভাষা।পোষ মানা পাখিদের মতো আদব কায়দা।আর অনেকটা  সংকীর্ণ হৃদয় যেখানে পূর্বপুরুষের বানানো নিয়মনীতি তাদের চিতার আগুনেই সহাঃ করে দিতে দুবার ভাবিনি।


তবুও বলি আমি অমুক বংশের আমি তমুক বংশের। ঘুরে ফিরে সেই পূর্বপুরুষের উঠোনেরই খুঁটি ধরে বেঁচে থাকি। সত‍্যি বলতে যতই তর্কাবিতর্কের দলিল দিই কিন্তু আদৌ নিজেদের পরিচয় তৈরী করে উঠতে পারিনি আজও আমরা।

                         ………………… 

গ্রাম সংখ্যার প্রকাশিত হয়েছে। আপনি সংগ্রহ করতে পারেন।  


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - কবিতা সামন্ত

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614








Saturday 10 December 2022

অঞ্জন দাস এর কবিতা // ই-কোরাস ৮৬

 



অঞ্জন দাস এর কবিতা


১.

আগুন শিখছি কাছাকাছি     


।।করবীতলা

রাতের বন্ধুত্ব এখনো রয়েছে ফুলে 

ভরদুপুরে নাবালিকা রোদ 

ঝাঁটায় কুয়াশা 

তুমিআমি ছায়ার ভেতর আগুন শিখছি কাছাকাছি         

।। অপর্যাপ্ত ক্রোধে 

আমাদের সীমানা ছোট করে গাছ

ফুল ফল পাতা পড়ে  তখন ভাবিনি বড়করে ;

রোপনের  নির্জনতা তারও তেমন পাওয়া চাই

।।স্বর্ণগ্রাম      

যেসব কুয়াশা ছিল মাঠে রিলটানা রোদ

বৃষ্টিরা ওড়না চমক  পলাতক তারা খোঁজহীন আমরা সবাই...

আমাদের পরবর্তী  সন্তান নেই। মাঠ মাটি করবী তলা

আর বিশ্বাসী মা নেই,  নেই  অনুভূতি   ভেঙে যাচ্ছে পাড়া  

।।সন্তান আছে   

নেশাগ্রস্ত ক্লাবের পুরুষ ওরা সমাজ সেবক 

শুধু বাঁচা  আর বেড়ে উঠবার শর্তে  

ওরাই ওদের বলে খানকির ছেলে    

কি চেয়েছে কি পেয়েছে কিছুই জানেনা

শুধু অসঙ্গত অন্যায়এর সংজ্ঞা হয়েছে

।। রয়েছে ধর্ষণ  

বাবার ভয় আর মায়ের অবিশ্বাসে বড় হচ্ছে মেয়ে

মেয়ে ফেরেনা সময়ে   মানে নেই, ধারা যেতে পারে  এখন সময়   

।।  শহরের মতো

এখানে ও ধর্ষক  রয়েছে  এক চেন

ভয়ংকর ভয় পাতার ঝিরিঝিরি

শহুরে দাপুটে নেতার মস্তান রয়েছে 

আর একটি যুদ্ধে সাজো সাজো গাঁ

অনেকেই মাঠ থেকে ফেরেনি

কোনোকালে ফিরবে না ওরা     

।।অবলীলায়    

সমস্ত সংস্কৃতি লোকজন মা হীন 

গাঁয়ের মায়েরা পুরুষ হয়েছে   

সমস্ত শ্রী নিয়ে লোভ চকচকে

।।উওর সন্তান 

শ্মশান কালির মায়ালোক        

একদিন পুরুষেরা ব্যাবি দিতে পারে       

হয়তো ফিরতে পারে আমাদের পৌষ আর পিঠের পার্বণী... 

এখন ঘুমাও তুমি প্রিয়ে চলছে নাটক

              ……………….........


২.

হেনার জঙ্গল


মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি

ছুতোর মোড়ে যত পুরনো কাঠের গুঁড়ি

ভাগ হচ্ছে চেরাই মেশিনে

স্রোতাদের যাবতীয় আসবাবে সেজে ওঠে ঘর

মেপে নেওয়া ফিতের অহঙ্কার পরপর গুটিয়ে পড়েছে


যাবতীয় জ্যোতি কেড়ে নিচ্ছে পূজক নলিনী

পোক্ত বুকের পাটা ;

হেনার জঙ্গল

যেখানে বিষাক্ত সাপ আশ্রয় নেয়

কাদামমী প্রান্ত জঙ্গলে বেড়ে ওঠে অর্কিড

আলোহীন সভ্যতার অদৃশ্য পাখি 

ডেকে চলে যাও ছোট নদী মুথা তুলসী বুকে

পাখার ভেতর থেকে খসে পড়ে অনন্ত জিজ্ঞাসা

জাগে অন্ধকার নখীয় ভদ্রতা


আমাদের শান্তি ঘাটে এখন বাজার বসে

সহজ দামে বিক্রি হয় গভীর জলের মাছ

নাপিত চুল কাটে তোমাদের মস্তদাড়ি ছর করে নিও

আর নিও দরিদ্র মানুষের গ্রাস

নলিনীর  উপন্যাস সেসব  মেটাবে 


মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি

               …………….........


৩.

ম্যারাথন  স্ট্রিট



বৃষ্টি রাতের গাড়ি পরপর ওভারটেক করছে

সামনে দীর্ঘাঙ্গী কালো মেয়ে বাকের পরে বাঁক

আমি যে রমণীর রূপোর পয়তা দেখেছি হৃদ বরাবর

বুধবারের পাড়ে লাল লাল চুমকি বসাবো

নিসর্গ রাতের জোনাকি, আচ্ছন্ন সমস্ত হেডলাইট

বিপরীত ঝলকানি খুঁজে দিচ্ছে উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ সংলাপ

ম্যারাথন স্ট্রীট ল্যাম্প নিভিয়ে নিওনা

রাতের কান্না ঝরে পড়ছে সারিবদ্ধ আবহমানের স্থায়ী চোখে

স্বর্গীয় ঝলকানি ,শহরে জমা হচ্ছে গম্ভীর শব্দেরা

কাঁচের  উপরে দুটি সাপ মুছে দিচ্ছে ভ্রম

ড্রাইভার জানে রেডিয়াম স্টিকার এর যাবতীয় সংকেত

আমাদের চোখে কিলোমিটারের বাতি

ব্রিজের পাশে সারিবদ্ধ বামন বালক

ছুটছে বিলো হর্ণ নো পার্কিং জোনে ভিজে যাচ্ছে একটি উন্মাদ

জীবনের টোল ট্যাক্স মূল্য আদায় করে 

চকচকে জীবনের কালো পা

থেমে গেল।

বাতাসের ব্যাকরণে আমাদের সমস্ত গতীপথ

পেছনে ফেলতে চায় তোমাকে

অদ্ভুত আনন্দ জয়ের উল্লাসে

কালো মেয়ের গায়ে ছড়িয়ে পড়ে রক্ত

বলি না কখনো ডাইভার আস্তে চালাও

আর একটু ভরে নাও ইন্ডিয়ান অয়েল

আমরা এগোচ্ছি নেশা মুক্ত চিমনির দিকে

সামনে জগন্নাথ চোখ, পোস্টার দিদিকে বলো

উড়াল পুলের নিচে  টিকে আছে আর এক সভ্যতা

বৃষ্টি রাতের গাড়ি পর পর ওভারটেক করছে

মুহূর্তের ভেসে আছে চমৎকার জীবন

রূপকথা নিয়ে শহর থেকে ফিরছি।

আমাদের সমস্ত ম্যারাথন স্ট্রিটে শুয়ে থাকে কাল মেয়েরা

কাজ চলছে আস্তে চালান

আমাদের চোখে কিলোমিটারের বাতি।

            ……………….......




সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - কবিতা সামন্ত

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614

ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭৮

  ইতি মণ্ডল এর কবিতা   ১. পতিতা আমার জঠর থেকে নিষিক্ত ডিম্বানু দিয়ে, সৃষ্টি করো তোমাদের কাল জয়ী  নারীশক্তি…                      দেবী দুর্...