অঞ্জন দাস এর কবিতা
১.
আগুন শিখছি কাছাকাছি
।।করবীতলা
রাতের বন্ধুত্ব এখনো রয়েছে ফুলে
ভরদুপুরে নাবালিকা রোদ
ঝাঁটায় কুয়াশা
তুমিআমি ছায়ার ভেতর আগুন শিখছি কাছাকাছি
।। অপর্যাপ্ত ক্রোধে
আমাদের সীমানা ছোট করে গাছ
ফুল ফল পাতা পড়ে তখন ভাবিনি বড়করে ;
রোপনের নির্জনতা তারও তেমন পাওয়া চাই
।।স্বর্ণগ্রাম
যেসব কুয়াশা ছিল মাঠে রিলটানা রোদ
বৃষ্টিরা ওড়না চমক পলাতক তারা খোঁজহীন আমরা সবাই...
আমাদের পরবর্তী সন্তান নেই। মাঠ মাটি করবী তলা
আর বিশ্বাসী মা নেই, নেই অনুভূতি ভেঙে যাচ্ছে পাড়া
।।সন্তান আছে
নেশাগ্রস্ত ক্লাবের পুরুষ ওরা সমাজ সেবক
শুধু বাঁচা আর বেড়ে উঠবার শর্তে
ওরাই ওদের বলে খানকির ছেলে
কি চেয়েছে কি পেয়েছে কিছুই জানেনা
শুধু অসঙ্গত অন্যায়এর সংজ্ঞা হয়েছে
।। রয়েছে ধর্ষণ
বাবার ভয় আর মায়ের অবিশ্বাসে বড় হচ্ছে মেয়ে
মেয়ে ফেরেনা সময়ে মানে নেই, ধারা যেতে পারে এখন সময়
।। শহরের মতো
এখানে ও ধর্ষক রয়েছে এক চেন
ভয়ংকর ভয় পাতার ঝিরিঝিরি
শহুরে দাপুটে নেতার মস্তান রয়েছে
আর একটি যুদ্ধে সাজো সাজো গাঁ
অনেকেই মাঠ থেকে ফেরেনি
কোনোকালে ফিরবে না ওরা
।।অবলীলায়
সমস্ত সংস্কৃতি লোকজন মা হীন
গাঁয়ের মায়েরা পুরুষ হয়েছে
সমস্ত শ্রী নিয়ে লোভ চকচকে
।।উওর সন্তান
শ্মশান কালির মায়ালোক
একদিন পুরুষেরা ব্যাবি দিতে পারে
হয়তো ফিরতে পারে আমাদের পৌষ আর পিঠের পার্বণী...
এখন ঘুমাও তুমি প্রিয়ে চলছে নাটক
……………….........
২.
হেনার জঙ্গল
মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি
ছুতোর মোড়ে যত পুরনো কাঠের গুঁড়ি
ভাগ হচ্ছে চেরাই মেশিনে
স্রোতাদের যাবতীয় আসবাবে সেজে ওঠে ঘর
মেপে নেওয়া ফিতের অহঙ্কার পরপর গুটিয়ে পড়েছে
যাবতীয় জ্যোতি কেড়ে নিচ্ছে পূজক নলিনী
পোক্ত বুকের পাটা ;
হেনার জঙ্গল
যেখানে বিষাক্ত সাপ আশ্রয় নেয়
কাদামমী প্রান্ত জঙ্গলে বেড়ে ওঠে অর্কিড
আলোহীন সভ্যতার অদৃশ্য পাখি
ডেকে চলে যাও ছোট নদী মুথা তুলসী বুকে
পাখার ভেতর থেকে খসে পড়ে অনন্ত জিজ্ঞাসা
জাগে অন্ধকার নখীয় ভদ্রতা
আমাদের শান্তি ঘাটে এখন বাজার বসে
সহজ দামে বিক্রি হয় গভীর জলের মাছ
নাপিত চুল কাটে তোমাদের মস্তদাড়ি ছর করে নিও
আর নিও দরিদ্র মানুষের গ্রাস
নলিনীর উপন্যাস সেসব মেটাবে
মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি
…………….........
৩.
ম্যারাথন স্ট্রিট
বৃষ্টি রাতের গাড়ি পরপর ওভারটেক করছে
সামনে দীর্ঘাঙ্গী কালো মেয়ে বাকের পরে বাঁক
আমি যে রমণীর রূপোর পয়তা দেখেছি হৃদ বরাবর
বুধবারের পাড়ে লাল লাল চুমকি বসাবো
নিসর্গ রাতের জোনাকি, আচ্ছন্ন সমস্ত হেডলাইট
বিপরীত ঝলকানি খুঁজে দিচ্ছে উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ সংলাপ
ম্যারাথন স্ট্রীট ল্যাম্প নিভিয়ে নিওনা
রাতের কান্না ঝরে পড়ছে সারিবদ্ধ আবহমানের স্থায়ী চোখে
স্বর্গীয় ঝলকানি ,শহরে জমা হচ্ছে গম্ভীর শব্দেরা
কাঁচের উপরে দুটি সাপ মুছে দিচ্ছে ভ্রম
ড্রাইভার জানে রেডিয়াম স্টিকার এর যাবতীয় সংকেত
আমাদের চোখে কিলোমিটারের বাতি
ব্রিজের পাশে সারিবদ্ধ বামন বালক
ছুটছে বিলো হর্ণ নো পার্কিং জোনে ভিজে যাচ্ছে একটি উন্মাদ
জীবনের টোল ট্যাক্স মূল্য আদায় করে
চকচকে জীবনের কালো পা
থেমে গেল।
বাতাসের ব্যাকরণে আমাদের সমস্ত গতীপথ
পেছনে ফেলতে চায় তোমাকে
অদ্ভুত আনন্দ জয়ের উল্লাসে
কালো মেয়ের গায়ে ছড়িয়ে পড়ে রক্ত
বলি না কখনো ডাইভার আস্তে চালাও
আর একটু ভরে নাও ইন্ডিয়ান অয়েল
আমরা এগোচ্ছি নেশা মুক্ত চিমনির দিকে
সামনে জগন্নাথ চোখ, পোস্টার দিদিকে বলো
উড়াল পুলের নিচে টিকে আছে আর এক সভ্যতা
বৃষ্টি রাতের গাড়ি পর পর ওভারটেক করছে
মুহূর্তের ভেসে আছে চমৎকার জীবন
রূপকথা নিয়ে শহর থেকে ফিরছি।
আমাদের সমস্ত ম্যারাথন স্ট্রিটে শুয়ে থাকে কাল মেয়েরা
কাজ চলছে আস্তে চালান
আমাদের চোখে কিলোমিটারের বাতি।
……………….......
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
প্রচ্ছদ - কবিতা সামন্ত
ঠিকানা -সুরতপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
দারুণ সব লেখা। ভালো লাগলো। কবির প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। 🌷❤️
ReplyDelete