Saturday 10 February 2024

মঞ্জিরবাগ এর কবিতা // ই-কোরাস ১৬৭

 



মঞ্জিরবাগ এর কবিতা

নিশানা টোপ‌‌ 


জলের ভেতর ভেঙে ফেলি আয়নার আত্মরতি।


এ জীবনে কখনো নিজের  মুখ দেখা হলো না

যা দেখেছি তা আয়নার প্রতিবিম্ব,

ভেঙে  ফেলবো বলে আয়না তার ভেতরেই লুকিয়ে রাখে আমার আত্মাকে।

কতদিন আত্মার মুখোমুখি বসা হয়নি

স্বপ্ন নামক মায়ায় আমাকে কাঁদায় বোবা অক্ষর


 হারিয়ে ফেলার মাতন খেলায়

আমি নিজেকেই খুঁজে পেয়েছি

হাওয়া বাতাস বসন্তের গিলোটিন

মাঝি ফেলে গেলে নৌকো বসন্ত খেলায় মাতে

গোপন মাছ ধরার জন্য নিশানা টোপে মাছও বিলাস

আত্মরতি খেলা জানলেই হারিয়ে যায় দুঃখ বিলাস



কোকিলের গান


নিভৃত প্রহরের সুধা বিতরণে

 কোকিল গান গায়

তেমনভাবে গান গাইতে পারলে

 হয়তো কোকিল হতাম

উড়ে বেড়ানোর অনিষিক্ত ভালো লাগে যার

 সে কখনো বাসা বাঁধে না

যৌবনের বিষন্নতা রেণুও রক্তকণিকা

 মন ফকিরের একতারা

ভালোবাসা এক নিরাময়হীন রোগ

প্রতি পাঠে উপনিষদ অধ্যায়

মোহহীন ভাবে ছেড়ে না দিতে পারলে

ভালোবাসায় সংযুক্ত হয় না মন

একবার নিজের ভেতর ভ্রমণ সারো ,মন

ভালোবাসা কোন সংবিধান আদালত নয়

বিপন্নতা অসহায় তা সম্পর্কে শূন্যতা পেরিয়ে

ঋণী হয়ে যাই ভালবাসার পর্যটনে

বৃন্তচ্যুত ভালোবাসা, কোকিলের গান

 আমার জন্য নয়



রক্তের উপাখ্যান


সভ্যতার কোটের প্রতিটি বোতামাটা আঁটা

আস্তানায় লুকানো আছে নখ

রক্তাক্ত হাতটি লুকিয়ে রেখে 

পরিশীলিত হাসি হাসে ব্রহ্মাণ্ড দানব, 

চুরচুর হয়ে যাবার শব্দে কেঁপে উঠেছে পৃথিবী। পাখিরা দুঃখ পেলে খসে যায় ডানার পালক। আমাদের ঘর গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে বোমার আঘাতে


অন্ধকার আমাদের রাষ্ট্র-নির্ধারিত পাঠক্রম।

অবক্ষয়ের পথে হাঁটতে হাঁটতে চেতনা শূন্য আমাদের অন্তর, পলেস্তারা খসা মানবতা

ভিতরে ভিতরে ভেঙে যায় সমস্ত সৃজন

শুদ্ধ জলের আকাঙ্ক্ষা করে। এই রক্তনদীর স্রোতে  লজ্জা পায় শতাব্দীর সভ্যতা



খোঁজ এক আত্মদর্শন


পথ হারিয়েছি। এ কথায় নিজেই বিপথগামী


যে পথ হারায় তার নিজেকে খুঁজে নেবার আকাঙ্ক্ষা থাকে। ভেতরে ভেতরে ভেঙ্গে যাই 

আর গলে যাই বলে 

 পুননির্মাণের আকাঙ্ক্ষা থাকে 

অশুদ্ধ সম্পর্ক এক অনিকেত সংকেত।


চেতনার বাইরে হওয়া আরেক চেতনা যেন মাটির গভীরে থাকা ঘুমন্ত সত্যের হিরে

নক্ষত্রের নির্দেশেই আলোর দিকে ঘুরে দাঁড়াই

পালক ছিঁড়তে ছিঁড়তে এক নতুন ডানার জন্মে

নতুন আকাশ খুঁজে এই পৃথিবীর নতুন গ্রহ উপগ্রহ

অহংবৃত্ত ছড়িয়ে হেঁটে যায় এক একান্ত বাউল

যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতর দিয়ে। হাতের একতারা 

রক্তমাখা পদচিহ্ন পেরিয়ে 

পৌঁছায় মেঘের অভিযোজনে



পদ্ম জলের মেয়ে


জলের ধারে বসে স্বপ্ন আঁকে, এক পদ্ম


শীতের সকালে শুকনো পাতার অলংকার  বাজিয়ে

হেঁটে যায় এক ক্ষুধার জীবন।শরবন ও ধানখেতের মাঝে যে অবিছিন্ন মাঠ,তার পাশে শুয়ে আছে যিশু


অন্ধকারের পথ মাড়িয়ে মারিয়ম ও কুন্তী চোখের জল মোছে, চোখ থেকে রক্ত শোনিত


আমার মায়ের হাঁড়িতে চাল ছিল না। 

শুকনো দুধহীনবুকে কুনকো ভরা ভালবাসা।

আমরা মেনে নিতে নিতে রহস্য ঘেরা নদীর আড়াল

 কেঁদেছি কত না।।  নদী আমাদের বাঁচতে শিখিয়েছে


মাঠ থেকে বীজধান খুঁটে প্রথম যে নারী,মাটির বুক

 জুড়ে পুঁতে দেয় ধানকণা, সে নারীই পৃথিবীর মতো


আমার কান্নার নাম বৃষ্টি।আমার ক্রোধের নাম আগুন


যে মেয়েটির বসন আকাশে ওড়ে হিংস্র উল্লাস

তাকে আমি ধ্বংস  বলে জানি।

তার ক্রোধে  পুড়ে যাবে পৃথিবীর সমস্ত পাপ

আবার নতুন আলোর সাথে জাগার গানে নতুন ঘাস

শিশির পাতায় পদ্ম জলের মেয়ে…..

              ……………………….. 



সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪


No comments:

Post a Comment

ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭৮

  ইতি মণ্ডল এর কবিতা   ১. পতিতা আমার জঠর থেকে নিষিক্ত ডিম্বানু দিয়ে, সৃষ্টি করো তোমাদের কাল জয়ী  নারীশক্তি…                      দেবী দুর্...