অন্তরালে মায়ার খেলা
তাহমিনা শিল্পী
কারওয়ান বাজার মেট্রোস্টেশনের সিঁড়িতে তাকে দেখলাম। এটাই প্রথম দেখা,হয়ত এটাই শেষবার।উঁচু হিল জুতো পরে প্রথম হাঁটতে শেখা শিশুর মত গুটি গুটি পায়ে নামছে। মনে হল যেন সিঁড়ি গুণেগুণে নামছে। বাদামী রঙের ভেজিটেবল ডাইয়ের শাড়ির সাথে মানানসই সাজ। মাঝারি লম্বা খোলা চুল পিঠের উপর ছড়ানো। বয়স বড়জোড় কুড়ি কিংবা বাইশ। মুগ্ধনয়ন হৃদয়স্পর্শ করলো। কথা বলার ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখলাম না।
পাশ থেকে নামতে নামতে ডান কাঁধে আলতো স্পর্শ করতেই ঘুরে তাকালো। হরিণি চোখে অপার বিস্ময়!
স্বল্প হাসিতে মুগ্ধতা প্রকাশ করে বললাম,
- অপূর্ব! প্রথম শাড়ি পরেছো?
- না,আগেও কয়েকবার পরেছি। (ইষৎ হাসিতে খুশির দোলা)
- শাড়ি উল্টো করে পরেছো তো। আঁচল উল্টো দিকে দিয়েছো।
- ওহ্, একা একা পরেছি তো। (একটু বোধহয় লজ্জা পেলো)
- ইউটিউব দেখে শিখেছো?
-হ্যাঁ (লাজুক হাসিটা দারুণ ছিল)
- শোন, শাড়ি সবসময় ডান দিকের কোমরে গুঁজবে। ডান হাতের দিকটা ফ্রি রাখবে। আঁচল এবং কুঁচির ভাঁজ ডান হাতের বিপরীত দিকে থাকবে। এই তিনটি পয়েন্ট মনে রাখবে। ব্যস, আর ভুল হবে না।
-কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো। কোনরকম সুযোগ না দিয়ে দ্রুত কার্ড পান্স করে বের হয়ে গেলাম।আর একটু জোরেশোরেই বললাম,তোমাকে কিন্তু দারুণ লাগছে! খুব সুন্দর!
ফুট ওভার ব্রিজের অংশটি হেঁটে এগোতে এগোতে আমিও যেন অবচেতনে পা গুণেগুণে ব্যাকগিয়ারে এগিয়ে চললাম।
আহা আমার কৈশোরকাল! প্রথমবার মায়ের পাটভাঙা শাড়ি পরে বাড়ির তিনতলার ব্যালকনিতে দাড়িয়ে থাকা।বোকা এক সাইকেল সাওয়ারি,আর শেষ বিকেলের সেই জারুল মায়া!
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
ওঃ , অপূর্ব 👌
ReplyDelete