মঞ্জির বাগ এর কবিতা
১.
প্রিয়
তাল লয় ভেঙ্গে কি খেলায় মেতেছো, বসন্ত
এখন নৃত্য করে পাতায় পাতায় অসাম্য খেলা
যে বিন্দুতে স্বপ্ন অবস্থান করে, সেই বিন্দুতে রাষ্ট্র গিলে খেতে চায় কৃষকের ধান জমি। স্বপ্ন দেখি ঘুম ভেঙ্গে যায় বিলকুল। ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে জ্বলন্ত লাভা স্রোত ছড়িয়ে পড়ে গৃহস্থ করিডরে।
তোমার আগ্রাসী ঠোঁট উড়িয়ে দেয় বকের ডানা
এমন হতে পারে জানা ছিল না, হৃদস্পন্দন লাবডুব। স্বপ্নে আমি জিয়ল মাছের মত লাফিয়ে উঠেছি।। আমার সমুদ্রে বসে তোমার নদীর গান আমার শাখায় বাসা বেধেছে। অনেকগুলি পাখির সাথে দু-একটা শকুন কখন যে ফোকরের খোঁজে
ভোরের আকাশে এখনো ঘুম লেগে আছে
ঘুম লেগে আছে আমার চোখে । ঢেউ গোনার কাজে বসিয়ে দিয়ে কেউ কখন যে হারিয়ে যায় জানা থাকে না বলেই, আমরা স্বপ্ন দেখি
এ কথা জেনেছি দীর্ঘ পথভ্রমণে অধিকারহীন স্বপ্নের গন্তব্য অজানাই থাকে,
ভালোবাসার কোন গন্তব্য হয় না। কোন স্বপ্ন
ভঙ্গের গল্প হয় না। ভালোবেসে চলতে থাকাই একমাত্র গন্তব্য….
২.
বন্য
বুনো ঘ্রাণ দখল করে নিতে চায় আমার শরীর ।
শরীরের ভিতর গান আছে। বাদ্য বাজনা আছে
ইদানিং আমাদের বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে।
হাজার বদ্ধ দুয়ার আমাদের দেখে
হেসে উঠছে খিল খিল। হৃদস্পন্দনের ভেতর জলের শব্দ। আমি জল থেকে স্নান সেরে উঠে
নিজেই নিজেকে বলি, প্রিয় ; ভালোবাসি…
ভালোবাসার গল্প টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে বেঁচে আছে যে সে এক বুনো ঘ্রাণ।
হয়তো বনের পথে যেতে যে আগুন জ্বালিয়ে নৃত্য করেছি। আগুন নিভে গেলে পড়ে থাকে ছাই
বসন্তের পলাশ , তোমার মুগ্ধতা রক্তিম লাল
এ পৃথিবীর পথে সবাই আসে ,সবাই চলেও যায়
থেকে যায় শুধু আমার হৃদয়ে তোমার হৃদস্পন্দন।
সেতারটা বাজছে অতি মৃদু স্বরে,
একটি বুনো-ঘ্রাণ ধীরে ধীরে ঢেকে দিচ্ছে আমায়
স্বপ্নের ভেতর আমি ঘুমিয়ে
আমার বুকের উপর এক রাশ পলাশ ফুল
৩.
জল নামের উপাখ্যান
পলকের অবকাশে নিজেকে লুকিয়ে
একান্ত আড়াল
অসময়ের বৃষ্টি এলে বলি ,থেমে যাও
স্বপ্ন বপনের জমির খোঁজ পায়নি এখনো
অমরত্ব করায়ত্ব করার জন্যেই আমার জলের ভেতরে ডুব
আগুন জ্বলে না সহজে। হারিয়ে যাওয়া
চাঁদ স্রোতে ভেঙ্গে যায়
চাঁদ ভেঙ্গে গেলে ,নিভে যায় আকাশ
গানটিকে থামাবার মত নিষেধ আমার জানা নেই
গানটি আমার ভেতর বাজে
লবণাক্ত জলের কাছে বিলিয়ে দেওয়ার
মন্ত্র শিখে নেয় রূদ্র বীণা
৪.
ড্রাকুলা
তোমাকে লুকিয়ে রাখি আড়াল
মৃত্যু অবধারিত জেনেও জলে ডুব দিয়ে
অপার্থিব পলাশ তুলে আনার কৃষ্ণচূড়া সময়
আমাদের জানা ছিল না নিমগ্নতাও প্রাচীন বা এত কঠিন।নিষ্কাম প্রেমের উদাসীন গান গায় অপরাহ্ণের শালিক গন্ধ। সাইকেলের গলিভাঙা
শব্দে জেগে ওঠে যে তাকে রাত বলে ডাকাই যায়।
আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে যখন তখন।আমরাও রাক্ষস খোক্কস।বিছানায় একটা জোনাকি
জেগে দেখছে,আমাদের পড়ে থাকা জামারা উড়ছে
নতুন ডানায়। নতুন বের হওয়া শ্বাদন্তে তুমি চুষে নিচ্ছ রক্তিম স্রোত…
৫.
ঝুমুর
মেঘের ভাষায় কথা বলে উন্মাদ আকাশ
বৃষ্টির গান ঝরে পড়ে। ঝরে পড়ে আশ্লেষ...
কম্পনাঙ্ক বাড়ায় চাঁদ, নদী দেখলে ভাসতে ইচ্ছে
দুরন্ত মাছজন্মের মতো যখন সাঁতার
শ্রাবন আসছে বলে বৃষ্টির সব প্রেম বাতাসের সাথে
স্তব্দ চাঁদ,প্রিয় ঠোট গোপন গুহা প্রিয় ক্ষেতফসল
কথার মাঝে অঝোর বৃষ্টি;এবার বন্যা হোক।সুনামী
সময় হলেই দেখ, আমার গানের শরীরে তোমার ভেঙে যাওয়া খাতা
কারো বুকে আকাশ থাকে,আলোর আকাশ.. আগুন সরণি আলো জ্বেলে হাঁটি পথ, তুমিই গন্তব্য
হৃদয়কে পথিক জেনে যে গান গায় তার গানেই
বেজে ওঠে ঝুমুর…
……………………….
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment