মঞ্জির বাগ এর কবিতা
বিবাগী অস্তিত্বের সন্ধান
ঠিকানা চেয়েছি নিজেকে গচ্ছিত রেখে!
মধ্যস্থতা বিষয়ের সমস্ত গল্পের দিশাহীন নাবিকের চেনা বন্দরের আশ্চর্য রূপকথা দ্বীপ
পরিচিত পাঠে হারিয়ে যায় দুপুরে পাঠশালা।
শীতের সম্পর্ক উষ্ণতা খুঁজে লেপের ভেতরে
ঋণী থেকে যায় পরিচিত নির্বাক সম্পর্কের কাছে
স্বর্গমুখের ঠিক এক ইঞ্চি দূরে অনুভব হয়
এখানে ভালোবাসা নেই, কর্তব্যের কামড়
সুর যদি নদী হয়,তবে ভেসে যাই ভালো
ক্রিয়া বিক্রিয়ার অনুশাসনের নিহত বসন্তের দিন,
একটি কোকিলের মৃত্যু বসন্তের গান থামাতে পারেনা…
অবহেলাও আমাকে প্রতিদিন ঋদ্ধ করে
বিপন্নতার চিঠিরা আমার উঠোনেই পড়ে থাকে শুকনো পাতার মতো।।
এ সময়, এই রক্ত গান
বিপন্নতা আজ আমাদের রক্তের লালরঙে
লিখে দেয় শীতলতা। প্রকৃত ভূগোল
আমরা শিখে নিয়েছি চেতনাহীন সংরাগের গান। যারা সন্দেশখালীতে গিয়ে কবিতা পাঠের আহ্বান জানান, মুখবন্ধে জানি না তাদের গল্পের শূন্যতা
লুণ্ঠনের খেলায় অন্ধকার সাজাতে সাজাতে শাসক লিখে ফেলে গত জন্মের চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা। লুট হয়ে যাচ্ছে সবকিছু আমরা আকাশে দেখছি কেবলমাত্র কতগুলি পতাকা উড়ছে। একটি পতাকা নামিয়ে আরেকটি উড়িয়ে দেওয়ার আগে আমাদের বুক কাঁপছে। আমরা বহুবারই পতাকার নামা ওঠা দেখেছি। আশা রেখেছি হয়তো আকাশ পাখির ওড়ার যোগ্য হবে।
মাটির মেঠো ধানে কীটের দগ্ধ জীবনযাপন।
আমরা আকাশে উড়তে দেখছি আমাদের শিক্ষা, পেশা, আমাদের সম্ভ্রম….
মুখবইতে আমরা এখন ব্যস্ত প্রবল বিক্ষোভে
সত্য চিরন্তন
কৃষ্ণগহবরে প্রজ্ঞার আলোক নির্যাস
জ্যেৎস্নায় নিজেকে আহত করে
আলোর অশ্রু দিয়ে ছবি আঁকে ছায়ার পান্ডুলিপি
কবিতার কোন লিঙ্গ ভেদ নেই
অন্তরে আমি কখনো পুরুষ, নারী কিংবা অর্ধনারীশ্বর।
ডলফিনের মত জলের তলায় ভেসে
জীবন্ত পাণ্ডুলিপির বুকে সজীব অবস্থান
প্রেম এক অনন্য চেতনা। শূন্যতার বুকে অশূণ্যের
সমাধি। সমাধি কিন্তু শেষ নয়। অশেষ গান
আমার মধ্যে তোমার অবস্থান
নিজের মধ্যে নিজের অংশ হয়ে থাকি
জীবনানন্দ
ধূসর পান্ডুলিপির পথ চলতে চলতে
এক সংবেদী মন এসে দাঁড়ায়
রূপসী বাংলায়, নাগরিক অন্ধকারের পথে
হারিয়ে যায় অনুভাবী গান। হাজার বছর ধরে হাঁটতে থাকা গান খুঁজতে থাকে
নিবিড় বিদিশায় একটি আশ্রয়।
কবি কে আশ্রয় দেয় যে, সেই তো কবিতা
জীবন তার বিষাক্ত ছুরি দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে কবির অন্তর। কবি নীরব হন। একান্ত হন
চিত্রকল্প গাঙুরের তীরে সংগোপনে লুকিয়ে আছে,
পৃথিবীর পথে চলতে থাকা কবি নিজেকে
খুঁজে পান
লাশ কাটা ঘরের শীতল বিছানায়
আসলে কবির নেই কোন উজ্জ্বল মঞ্চ।
উজ্জ্বল আলো, মুখরিত করতালি.…
কবি একান্তে নিবিষ্ট না হলে হারিয়ে যায়
শঙ্খচিলের ডানায় তার একান্ত কলম
কবির জীবন এক বোধ। অনন্ত ঘোরের মতো বোধ.…
একটি উদাসীন ট্রাম এসে
অন্তর ভেদ করে চলে যায়
সামনের দিকে
কবি থাকেন মৃত্যুর বিছানায়।
কবির জন্য সারাজীবন অপেক্ষা করেনি কেউ
সারা জীবনের জন্য কবির অপেক্ষা ছিল কল্পনার
মাঝে মাঝে মনে হয়
উড়ে যাওয়া লক্ষ্মীপেঁচার ডানায়
কখনো কি ফিরে এসেছো এই বাংলায়?
ঠিক এই সময়ের বাংলায়
তুমি কি আবার লিখতে পারবে
রূপসী বাংলার শান্তির পট লেখা?
এ সময়ে কেউ শান্তিতে নেই শান্ত নেই
বাতাসে বারুদ ঘ্রাণ মাটিতে রক্ত
বিষাদ নিয়ে ধূসর পৃথিবীর পান্ডুলিপির পাতায়
জীবনের বিন্যাস লিখেছো
এ সময় স্তব্ধ করবে কি তোমার কলম?
ভয় হয়! তবুও মনে হয় অন্তর্দশী কবির কলমে
উঠে আসবে জীবনের আশা।
আমার চোখে ভাসে একটি নিভৃত ছবি
নিরালা ঘরে লেখায় মগ্ন কবি জীবনানন্দ।।
ছিন্নমস্তা
লালপথ চলে গেছে। নিচে নেমে গেছে সরু পথ
পাথরের ওপরে দাঁড়িয়ে মেয়েটির চোখে আগুন
আগুন থাকলে জল তাকে পোড়াতে পারবে না।
মেয়েটি নিজেই নিজের মাথা কেটেছে।
রক্ত গড়িয়েপড়ছে বলে অনেক মাছির ভনভন।
মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে শাল মহুয়ার ছায়ায়।
পাখির ডানায় নদীর প্লাবন। ভাতের হাঁড়ির শূন্যতা
বনমহলে সাপে না কাটলে,ডাইন না ধরলে বড়অভাব
বছর বছর পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মতো অভাব জানান দেয়
আমি আছি। তোমার ক্ষুধায়। আগুন চাঁইয়ের মতো
অভাব যদি খসে পড়ে তবে পুড়ে যাবে মাটি।
পলাশের রঙ ধরলে বন্দুকের গুলিতে পুড়ে গেল গান।
…………………..
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment