Sunday 4 February 2024

মঞ্জির বাগ এর কবিতা // ই-কোরাস ১৬৬

 



মঞ্জির বাগ এর কবিতা

কথা নামক নক্ষত্র


চাঁদের হাতে হাত রেখে ডুব দেয় রাত।

রাত্রি নামের মেয়েটির শাড়ির আঁচলে আঁকা

আকাশ এবং মাটি। মাঝখানে নক্ষত্র সারি।

কথা নামে স্বপ্নপদ্মের অন্য নাম ব্রহ্মকমল।


রোদবৃষ্টির কথা লেখে উপদ্রুত কৃষক।

ঘোর আমাবস্যায় ঘরের দরজা ভেঙে যাচ্ছে দেখ

কথা বলেনা সময়…..

দাউদাউ আগুনে তোমার  ছায়াটি

পুড়ে গেলে একান্ত নির্জন।


একটি একাকী জলের তীরে বসেছিলাম

একটি দীর্ঘ ঋতুকাল নামক গর্ভ

আমার  ভেতর বাড়ছে। দূর থেকে ভেসে আসা

গানের মতো কথা আমায় ঘুম পাড়ায়

জেগে থাকতে চেয়ে গভীর নক্ষত্রের কথা জুড়ে

আমি  নীরব  বাতিঘরে নক্ষত্রের আলো জ্বালি।



পদ্ম জলের মেয়ে


জলের ধারে বসে স্বপ্ন আঁকে, এক পদ্ম


শীতের সকালে শুকনো পাতার অলংকার  বাজিয়ে

হেঁটে যায় এক ক্ষুধার জীবন।শরবন ও ধানখেতের মাঝে অবিছিন্ন মাঠ,তার পাশে শুয়ে আছে যিশু....


অন্ধকারের পথ মাড়িয়ে মারিয়ম ও কুন্তী চোখের জল মোছে, চোখ থেকে রক্ত, শোনিত....


আমার মায়ের হাঁড়িতে চাল ছিল না। 

শুকনো দুধহীনবুকে কুনকো ভরা ভালবাসা।

আমরা মেনে নিতে নিতে রহস্য ঘেরা নদীর আড়াল


 কেঁদেছি কত না


নদী আমাদের বাঁচতে শিখিয়েছে

মাঠ থেকে বীজধান খুঁটে প্রথম যে নারী, মাটির বুক

 জুড়ে পুঁতে দেয় ধানকণা, সে নারীই পৃথিবীর মতো


আমার কান্নার নাম বৃষ্টি। আমার ক্রোধের নাম আগুন


যে মেয়েটির বসন আকাশে ওড়ে হিংস্র উল্লাস

তাকে আমি ধ্বংস  বলে জানি।


তার ক্রোধে  পুড়ে যাবে পৃথিবীর সমস্ত পাপ

আবার নতুন আলোর সাথে জাগার গানে নতুন ঘাস


শিশির পাতায় পদ্ম জলের মেয়ে…..



 বুকের ওপর হেঁটে  যাচ্ছে যে, তার জুতো মসমস

আমার বুকের ভেতর কঙ্কাল হেসে বলছে, বাপু হে

আমিই একমাত্র সত্যি। খাঁচার ভিতর মজ্জা মেদ

হাঁটার শব্দে নড়নচড়ন। গাড়ী নড়ছে না মানুষ,বাড়ি কেউ না। বিপরীত প্রতিপক্ষ অনাত্মীয় রোদের উৎস মুখে অলীক অহংকারী মুখোশ। গান হবে

বলে বাদ্যযন্ত্রগুলি প্রথম রাত্রির কাছে মাথা ব্যথা রেখে যায়।বাশুলী মন্দিরে ভগবান বসে ধোঁয়া খায়

মাঠের ধান রাত্রির শেষে বিক্রি হয়ে যাবে

স্বপ্ন বিক্রি না হয় এই বাসনায় কৃষক রাজপথে

রাজপথে মিশে আছে আমার রক্ত তোমার

শোকস্তব্ধ বাতাসে মেশা আর্দ্রতায় নতুন জীবনের গান গায় ধানের দুধ বীজ

 

মাইগ্রেন


কদিন ধরে কপালটি আর আমার  নয়

তার অর্ধেক  খেলো লক্ষণের গণ্ডী আর অর্ধেক ভবিতব্য..

জলের মধ্যে ডুবতে যায় আমার অর্ধেক জীবন

জলের মধ্যে ডুবে থাকে আমার ছেলেবেলা

ছেলেবেলা আর মেয়ে বেলার মধ্যে বিস্তর তফাৎ...

স্বপ্নকে আমি ঘুম বলে ডাকিনি কখনও...

ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুমের ভেতর মেঘের মতন যে ভাসে

সেই আমার  অবচেতন...

তোমাকে স্বপ্নের মতো ভেবে নদী এবং স্নান

নদীর চরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র ও সীগালের ওড়া

এক অসফল স্বপ্ন..

যে মেয়েটি এলো আর টুক করে ডুবে গেল জলে

তাকে তুমি ঋতু বলে ডাকো..প্রিয় গান

প্রতি ঋতুস্নান সেরে কামনা করেছি যার গান

তাকে কেন প্রেম বলি না আমি...

আমার অক্ষরের গানে জেগে ওঠে সোনালী  কলম

অবিচ্ছিন্ন অক্ষর প্রেম তাকে লিখি

 আমায় লেখায় ডেকে রাখে ; ঢেকে রাখে

ডানার চাদরে...

প্রেমআঙুলে  ছুঁয়ে যায়  চুলের আলপনা


পুরোনো দাঁড়ে বসা পাখি

অরণ্য নামে একান্তক্ষণ মনে করে

তোমাকে উড়িয়ে দিলাম

অভিমান নেই অনুরাগ নেই স্মৃতির  ফুলকি

আমার আধেক কপালে  বেদনার মতো জাগো নীল জোনাকী…

                 ……………………… 


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

No comments:

Post a Comment

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা // ই-কোরাস ২০

  পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা ২০ রূপছায়া টকিজ – বালিচক শ্রীজিৎ জানা সিনেমাহলে প্রবেশের আগে, এক প্রস্থ অন্য কথা হোক। আরে মশাই!...