Sunday, 7 January 2024

বর্ণালী ভুঁইয়া এর কবিতা // ই-কোরাস ১৬২

 




বর্ণালী ভুঁইয়া এর কবিতা 

নদী বৈতরণী


ঘুমে আচ্ছন্ন উর্বর মাটি, তুমিও এঁকে নাও তিলক

স্বপ্নের ভেতর রোদ বাড়ে

আরো ঘুমোতে দাও

পরজন্মের মোহ সঞ্চয় করি

শান্তি স্ত্রোতবাক্য,শূন্যতায় নরম নদী বৈতরণী

ঈশ্বর শূন্য সিংহাসনে

কর্পূর উবে যায় মন্দিরের চুড়োয়,

অসুখের নাম হয় শ্বাস

তবুও সঞ্চয় করি আয়ু, রাজপথে হেঁটে যাবো 


যৌবনের রং লাল হোক

মৃত্যু মিলে যায় ছায়া শরীরে

রাতের শূন্যতায় নক্ষত্রদের ভিড়ে ভোরের অপেক্ষা করি পায়রাদের গান শুনবো বলে।

  

    

শোক আর সুখ

হৃৎপিন্ড ভাঙছে

অস্থির আলোকচিত্র

রাত জেগে বিলাপনপত্র লিখে

তুমিও গৃহত্যাগী হও

গেরুয়া পোশাকে আকাশ উজ্জ্বল।


বোবা হতে হতে

লিখে নেওয়া উপন্যাস

অশ্রুর নীচে নীলচে মেঘ

আমি লাল ভীষণ ভালোবাসি।


আকাশ এখনো কালো

বাংলার বধূ,

আধভাঙা নাভি

তবুও ভালো জিন্স টি-শার্ট


ভোর হোক

সাজানো বিছানা পড়ে থাক

মধ্যবিত্ত অসুখ

প্রাতঃভ্রমন ফেরা পথ

হেঁটে চলে শোক আর সুখ.......



স্বাদ অবক্ষয়ের


স্নান সেরে নাও

গরম ভাত রাখা আছে হাড়ির ভেতর

আমি পুজোর ফুল তুলে আসি

আগুন মেখেছি দুহাতে।


আমাদের রাত ঘুম নেই,জড়তা নেই

ভোর আছে,অলস প্রেম নেই

কুয়াশার আলোয় পাখি আছে

ক্ষুধার্থ শিশুর চোখে লাল রং, বহমান পৃথিবী।

মৃত পশুর শোক 

শোকের ভেতর অন্ধকার


দু'টুকরো জীবন

স্বাদ অবক্ষয়ের

ঘাসেদের মাটি চোষা,রক্তক্ষরণ,

অন্যদিকে 

শক্ত কাঠের বিছানায় ভেসে বেড়ানো,

মধ্যাকর্ষণ টান, নদীর তীরে আলো রেখে

 সূর্য ছোট হয়ে আসে।

শূন্যের ভেতর সবকিছু অলৌকিক

জন্ম ক্ষণস্থায়ী 

মৃত্যুর ভেতর বদলে যায় গোছানো চুলের খোঁপা।



আমার জন্য


আকাশের রঙ কালো

জড়ানো আবেগ,

 অনায়াসেই উপহার দিতে পারো নরম চাদর

আমার সোয়েটার বোনার ক্রুস হারিয়ে গেছে।


বাঘ-হরিণের যুদ্ধে কে জেতে?

 ঘন কুয়াশায় জঙ্গলে নাইবা গেলে

আমার জন্য একটা টাটকা করবি আনতেই পারো,

গাছেদের সখ্যতা জমানোর মাটি আমার কাছে নেই।


চোখের দূরত্ব হৈমন্তিক রাতে কতদূর আর যাবে

পোড়ো বাড়ির দেওয়ালে লুকিয়ে না থেকে আর একবার ফিরে এসো রাস্তা বরাবর, 


দিনের আলোয় আমি সূর্যের দিকে তাকাতে পারিনা।



নদী হয়ে গেছে


আমাকে চোখের সামনে ঘাস হতে দেখেছো

অথচ তোমার হাতে ধারালো অস্ত্র নেই

বোবা কান্নায় তুমি যতবার গলা চেপে ধরেছ

আমি মৃত্যুর রাস্তা বার বার ছুঁয়ে ফিরেছি।


তুমি মাটির ইতিহাস ভেঙেছ 

পায়ের কাছে রেখে গেছো শক্ত কাঠের খড়ম

আমি অশ্রুকে ছুঁয়ে দেখেছি

কপালে জ্বরের দাগ 

মুখে দগদগে ঘা।


মেঘ হয়ে একবার মাটির কাছাকাছি এসে দেখো সব বৃষ্টি কেমন নরম নদী হয়ে গেছে।

                ………………….. 


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

1 comment:

  1. অপূর্ব সুন্দর কাব্য ভাবনা। বিশেষত নদী বিষয়ক ভাবনা র গভীরতা দ্যোতনা বাহী।

    ReplyDelete

অমৃত মাইতি এর গদ্য // ই-কোরাস ১০৮

  আমি এক নদী অমৃত মাইতি আমি এক আঁকাবাঁকা নদী। জন্মের পর থেকেই শুধু বাধা বাধা আর  বাধা। বাধার পাহাড় বেরিয়ে আমি কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি মোহনার ...