তুষার কান্তি ঘোষ এর কবিতা
১.
মন কেমনের রাত
বাজি রেখে হেরে যেতাম
যেদিকে তাকাতাম সেদিকেই তোমার চোখ
সামনে গেট, একচিলতে বাগান, পিছনে পাঁচটা নিমগাছ
বাড়িটি তেমনই আছে
তিনবছর পরে গোধূলি অতিক্রম করে তোমার কাছে এসেছি
অনেক শান্ত হয়ে গেছ, অনেক গভীর
কি জানি কুঞ্জবনে নজরবন্দী আছো কিনা!
সাফল্যের মত ব্যর্থতাও অভ্যাস
কেউ কেউ কিছুদিন ভালোবাসে কেউ কেউ আজীবন
কেন যে মন খারাপের রাত বারে বারে ফিরে আসে!
২.
স্পর্শ
কিছু দৃশ্য স্পর্শের মত
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তৈরি করি নিজেকে
বনপথে ভেসে আসে রোদের গান
অন্ধকার-আকুলতা শেষ হলে হাতের তালুতে বসে একাকী চাঁদ
ভয় করে
বহুদিন কেটে গেছে
যদি তুমি আমার স্পর্শ বুঝতে না পার আমার কান্না পাবে খুব
৩.
করনীয় যা
ভাঙাচোরা সময়ের কাছে সবাই হার মানে একদিন
তবু যা করার তা করতে হয়
কান পাতলেই শুনতে পাই সিংহের গর্জন, আত্মগত কান্নার ধ্বনি
কি হবে কবিতা লিখে? কি হবে ক্যানভাসে ছবি এঁকে?
হৃদয়-জুড়ে ধূসর সম্মোহন, বসন্ত-দরজার কাছে বারবার যাওয়া ও ফিরে আসা
কিছু গান জীবন-মৃত্যুর মাঝে বাজে, কেউ কেউ শোনে তা
আমার কাজ আমাকেই খুঁজে নিতে হবে, করনীয় সব কিছু করতেই হবে
অন্ধকার জানে আলোর খবর
সেই যে কবে মদনমোহন তর্কালংকার লিখে গেছেন "পাখি সব করে বর., রাতি পোহাইল ""------
৪.
শর্ত
প্রশ্ন তো অনেক
সব প্রশ্নের উত্তর দিতে নেই
নীরবতাই শ্রেয়
বুকের অলিন্দে হাত রেখে ক"জন আর শর্তহীন হতে পারে?
একদিন পদচারনা ছিল বনপথে
টবভর্তি গোলাপে ছিল মুগ্ধতা
তৃষা ছিল প্রকৃত গভীর
সামান্য পুঁজিতে সব জানা সম্ভব নয়
তবু শর্ত, মানুষ শর্ত দিয়ে বেঁধে রাখতে চায়
বুকের ভিতর চড়ুই পাখির দল ছটপট করে!
৫.
উড়ার অধিকার
এত উর্পাজন কি কাজে লাগবে? এত অর্থ?
ছেঁড়া ছেঁড়া ভাসমান প্রেম তোমাকে কি দিয়েছে অলৌকিক জীবন?
এত কি দেখছো দর্পণে?
নিজেকে সার্থক ভাবা একটি ভূল বার্তা
কোন কিছুই অর্থ দিয়ে যায় না কেনা
আকাশ অনেক উদার
সেখানে সকলের সমান অধিকার
সমুদ্র ও আকাশের সখ্যতা একটি শ্রেষ্ঠ অবলোকন
পৃথিবীর ছাত্ররা নিয়মত ভুলছে বানান
তাদের ক'জন আর মাঘের শীত থেকে মাটির আখর তুলে আনতে পারে ?
এখানে অনেক যুদ্ধ, অনেক ঈর্ষা , অযথা দখলদারি,
অধিকারহীন সংসার
এখানে উড়ার অধিকার কেউ কাকেও দিতে চায় না
উড়তে চাওয়া মানুষেরা এখানে বড় মনকষ্টে থাকে
……………………….
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment