তাহমিনা শিল্পী এর কবিতা
১.
কৃষ্ণঠাকুর
ওই চোখের দিকে তাকাতেই
আমার ভেতর আকস্মিক বৃষ্টিপতন শুরু হল
এই যে এখন
তুমি গান শোনাচ্ছ আর আমি ভিজছি...
আমরা উভয়েই কি কেঁপে উঠছি কখনও
ফুলের গন্ধে ম ম করছে
আমার ঘর বারান্দা উঠোন
ওই চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে
কাল-গড়িয়ে যাক...
বৃষ্টির ছাঁট মাখতে মাখতে
দ্যাখো দু-হাতে কেমন শক্ত করে
তোমাকে আঁকড়ে রেখেছি কৃষ্ণঠাকুর
২.
অভিমানটা বইছে গভীরে
পাহাড়ের কোন মন থাকেনা
তবু মানবিকতায় মানুষ যতোটা ধনী
পাহাড় তারচেয়ে কিছুটা বেশি।
পাহাড়ের কোন রাগ-ক্ষোভ অভিমান থাকে না
থাকে না শোক-তাপ, প্রেম-ভালোবাসা
তবু অনন্তকাল নিশ্চুপ পরে থাকে একা।
রোদ বৃষ্টি খরা তাকে ছোঁয় না
তবু তার ভিতরেও ঝরে রক্ত ফোঁটাফোঁটা।
৩.
আত্মজ
কেউ যা দেখে না,
আমি তা দেখে ফেলি অবাক বিস্ময়ে।
কেউ যা জানে না, বোঝে না
আমি তা জেনে ফেলি,
বুঝে ফেলি এক নিমিষেই।
তার সবকিছু ভেবে ফেলতে পারি
বিপুল অধিকারে।
সে অবাক হয়,
জানতে চায় কি করে সম্ভব?
ভালোবাসার জলোচ্ছ্বাস উঠে মনে
চোখে গড়িয়ে পড়ে জল।
দেবতুল্য সরল মন
অতোশত জটিল কথা বুঝবেনা জানি
শুধু বলি, আমারই জরায়ুর ভূমিতে বেড়ে ওঠা
আত্মজ তুই।
তোর মত এক দেব শিশুর
মা হওয়ার গৌরবই যে অনেক।
৪.
বৃষ্টিগন্ধা রুমাল
বৃষ্টিদিনে মন ভিজলেও
ঠোঁটের উষ্ণতা ক্রমশ বেড়ে চলে।
প্রচন্ড জ্বরঘোরে তোকেই খোঁজে মন।
ওগো,আমার বৃষ্টিগন্ধা রুমাল!
রোজ দু'বেলা দিলাম ধূপ-চন্দন।
তবু তুই হারালি কই?।
৫.
উঁনূন পোড়া কঙ্কাল
সূর্য ছুঁয়ে বুকের ভাঁজে রচনা করেছি সবুজ বন,
কনকনে শীত সন্ধ্যা সাজিয়েছি চোখের ভিতর।
সারাগায়ে মেখেছি ধূঁপের সুগন্ধি ,
বিনুনির চক্রে গেঁথেছি মেঘভাঙা রোদ্দুর।
আর তুমি পাহাড়ি ঢলের মত হঠাৎ নেমে এসে,
খুঁজেছো নরম শরীরের শহর।
বলো,কতটা হৃদয় খুঁড়লে দেখতে পাবে
উঁনূন পোড়া কয়লার কঙ্কাল?
............................
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment