মানবেন্দ্র পাত্র র কবিতা
১.
জবাগাছ
বৃষ্টিস্নাত রাত্রি
শরীরী আকাঙ্খায় বাতাস হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে
দূরাগত আলাপ
তারল স্পর্শ —
মরমের সেমিকোলনেও জবাগাছটি বৃত্তাকারে ছুঁয়ে আছে স্ফটিক আলো
আমাদের চোখের প্রাচিন সুরমায়
বৃষ্টি—-
মাটি ও উর্বরতায় প্রেমিকারা জেগে উঠছে
আজ রাত্রে।
২.
মিথ
শেয়ালের ডাকে সন্ধ্যা নামল
ঠাকুরমার গল্পের চরিত্রা হেঁটে আসছে
অনেক অনেকযুগ ধরে
যে মা-ইঁদুর সারারাত চাঁদ দেখে বেঁচে থাকে
মহুলগাছের কোটরে আশ্রিত যে সব চোখ
আমাকে ঘুম পাড়াত—
দাদুর কৈশোরে কোনো দিন কেউ কি এমন করে
চিবুকে চিবুক ঘঁষে বলতো
রূপকথা?
জামজুরকির জলে নর্তকীদের স্নান এখনও কি গ্রহন লাগা রাতে দেখা যায়?
মিথ গুলো বেঁচে আছে
মাছ ও ইঁদুরের পেটে
তাকে পেতে হলে জন্মান্তর কাছে বিলোতে হয়
এইসব পুরাকালীন নিঃশব্দ…
ওহে আশ্রয় তুমি যে অবিনশ্বর!
৩.
মৃত্যু
একহাতে তুলে দিচ্ছি মৃত্যু
অন্যহাতে সীমারেখাহীন অলিক আকাশ
এই কালপর্বের কাছে কেউ নেই
দূরাগত আলো এসে ডাকলে
সাদা তৃষ্ণা, জারুলের বন
আমাকে ডাকে
ঘরবাড়ি নেই। শরীর নেই।
আদিম এস্রাজ নেই।
যেন প্রতিধ্বনিত সিম্ফনি বাজে
কাকে ডাকো তুমি
নম্র চাঁদ…
৪.
স্মৃতি
সহস্রাব্দের কথা বললে
আমি এক ফসিল
মিশে যেতে যেতে
মিশে যেতে যেতে
আমাদের একদিন
কারুবাসনার মতো কত কিছু ছিল।
আজ এই মাত্র তুমি
আকাশের কথা বলে
বলতে বলতে
বলতে বলতে
কত সহজেই বেঁচে ওঠো।
এই পূর্বজন্ম-স্মৃতি
টুপ করে ঝরে গেলে
ঝরে পড়ে
ঝরে পড়ে
পাতার পিঠে থাকা শান্ত উপশম।
কুড়োতে
কুড়োতে।
কুড়োতে
কুড়োতে।
হে শ্রাবণ…
………………..
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment