মানবেন্দ্র পাত্র
১.
অনুরাগ হে
যদি বল অনন্ত — আমি এখন একটি
কল্পবৃক্ষের নীচে অনিকেত আলোয়
সানন্দে বসে আছি।
তোমার জন্য বসে আছি।
আকাশে জেগে আছে অশ্লেষা।
নাম না জানা অনেক অনেক লোকান্তরে
রোজ চলে যায় যারা
অরূপ তুমি
কেয়াবনে ভালোবাসা লুকিয়ে রেখেছ!
যে যাকে খোঁজে
ওহে অন্বেষা
আমার বুকের শাঁস খুঁড়ে
আকাশের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
জেগে আছ প্রেমিকার মতো!
যদি বলি আমার দিন নেই।
আমার রাত নেই।
আছে শুধু অগম্য অনুরাগ থেকে
পাওয়া
অরূপরতন।
২.
বীতশোক
বেশি কিছু চাই না
চলো, পা ছড়িয়ে বসি।
এই মাত্র যেন বহুযুগ পার হলো বাঁশি।
বহু শোক কাটিয়ে উঠে
শোকাতুর যারা হাঁস হয়ে গেল
এই মাত্র আমি ও তুমি
তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে
কি সহজ বহুযুগ অনায়াসে উড়ে যেতে পারি।
কিছুই চাই না যেন!
মনেই পড়ে না আর ক্লিষ্ট অসুখ।
বিস্তৃত আকাশের নীচে
পা ছড়িয়ে বসো
হৃদি বরাবর ঝুমঝুমি বেজে উঠুক
স্নিগ্ধ বাতাসে।
৩.
প্রিয় ও প্রিয়া'কে
কার প্রিয় আমি। কার কাছে আসি।
কার নাম জল।কার নাম নদী।
কে গায় দোহার— অথৈ কাজল
ঐ ঝাউবন জেগে উঠলেই
বেজে ওঠো তুমি, আমারই বেদন
আকুল করা টলোমলো মায়া
কোন্ পৃথিবীর? কোন্ আকাশের?
কে হও তুমি ভীষন অগাধ
পেখম নাকি! শ্রাবণ মেঘের।
কার প্রিয় তুমি। কোন্ অজানার
মুদ্রা দেখাও হৃদকোমলের…
বেজে উঠে বাঁশি— মোহন ডানায়
শুক ও সারি কখনো কি তবে
আলোকিত দানা খুঁটে খেয়েছিল!
৪.
একটি রাত্রি
নিঝুম সন্ধ্যা নামে। পুরুষ্টু ঠোঁটে হিমের স্বাদ।
আমাদের লুকোনো ঘর-বাড়ির উপর ও
বেড়ার পাশে দীর্ঘ-দীর্ঘতর একটি ছায়া এসে পড়ে।
হেঁটে বেড়ায়।
এই শীতের কুয়াশায় চোখের অস্পষ্টতা যদিও স্বাভাবিক—-- মনে হয় যেন শান্ত, ঠান্ডা অথচ তীব্র সেই অসুখ - বিসুখ নিয়ে ভুগতে ভুগতে ২০২০
থেকে ২০৫০ বা তারও পরের বহু খ্রিষ্টাব্দ পেরিয়ে যাবে এই সব হত্যা ও প্রলোভন।
ছুরির মতো তীক্ষ্ণ, ধারালো
উপশমহীন, ঘুমহীন,স্বাদহীন, বিকারহীন
অসুখ বিসুখ নিয়ে টলতে টলতে — যেন মৃত্যুকালীন নিঝুম —বিবশ — গোপন– রাত্রি নেমে এল।
----------------------------
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
চমৎকার কবিতা তিনটি। অনুভবী অলীক হাওয়া স্পর্শ করে যায়।
ReplyDeleteআপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ভালোবাসা জানাই।
Delete