রবীন্দ্র পরম্পরা
পর্ব - ১৭
বাল্মীকি প্রতিভা
মহাশ্বেতা দাস
বিভিন্ন শিল্পকলা, গান ও সাহিত্য চর্চা নিয়ে ঠাকুরবাড়ির লোকজনদের মধ্যে যে ভরপুর পাগলামি ছিল সেকথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। রবীন্দ্রনাথ বিলেতে যাওয়ার আগেই দেখে গেছিলেন ঠাকুরবাড়িতে অগ্রজদের বিভিন্ন বন্ধু বান্ধব ও গুনীজন সমাবেশে সাহিত্যিক আড্ডা দিতে। জ্যোতিদাদা তো অনেক আগে থেকেই পিয়ানো তে সুর তুলে ভাষা বসাতে বলতেন। বিলেত থেকে ঘুরে আসার পর রবিকে আরও বেশি করে দায়িত্ব পালন করতে হলো এই সব সাহিত্য, গান, শিল্পের আড্ডায়। ঠাকুর বাড়ির বিদ্বজন সমাগমের বার্ষিক অধিবেশনে একটি নাটক অভিনয়ের প্রস্তাব উঠলে সেই নাটক রচনার দায়ভার এসে পড়লো রবির উপর। আর সেই দায়ভার পালনের তাগিদেই রবির কলমে লেখা হয়ে গেল "বাল্মীকি প্রতিভা।"
তৎকালীন কবি বিহারীলালের সাহিত্যিক অনুপ্রেরণা আর জ্যোতি দাদার সুর সংযোজনা রবীন্দ্রনাথের এই পর্বের সৃষ্টিকে করেছিল অনেক বেশি শক্তিশালী ও রমণীয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় বাল্মীকি প্রতিভা নাটকটি অভিনীত হবে। রবীন্দ্রনাথ নিজে সাজলেন বাল্মীকি, সরস্বতী সাজানো হলো হেমেন্দ্রনাথের কন্যা প্রতিভা কে।
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র, গুরুদাস বন্দোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রমুখ বিদ্বজনের সমাবেশে সেদিনের অনুষ্ঠানে অভিনীত হলো "বাল্মীকি প্রতিভা" নাটকটি। পরবর্তীকালে নাট্য শিল্পে আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যে অসামান্য দক্ষতার পরিচয় পাই তার সূচনা হয়েছিল বোধয় এই নাটিকার হাত ধরে। গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মুগ্ধ হয়ে সেদিন লিখলেন ---
"উঠেছে নবীন রবি,
নব জগতের ছবি
নব 'বাল্মীকি প্রতিভা'
দেখাইতে পুনর্বার।"
যাইহোক বিলেত ফেরত ঠাকুরবাড়ির ছোট ছেলেটির জ্যোতি দাদার সাহচর্যে এই "বাল্মীকি প্রতিভা" নাটিকা টি ছিলো দেশী ও বিদেশী সুরের সংমিশ্রণে এক অনন্য সাহিত্য রচনার প্রয়াস।
…………………….
অন্তরে বাহিরে সহজ পাঠ
ডাকযোগ সহ মূল্য ২০০/-সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
ঠিকানা -সুরতপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
No comments:
Post a Comment