Saturday 12 November 2022

মহাশ্বেতা দাস এর গল্প // ই-কোরাস ৮২

 


মেঘ তুমি বন্ধু হলে

মহাশ্বেতা দাস

উত্তর কলকাতার তেতলা বাড়ির জানালার ধারে বসে আকাশ দেখছে শিলাদিত্য। শরতের নীল আকাশে পেঁজা পেঁজা মেঘের দল কেমন ভেসে ভেসে চলে যায়। "কোথায় যায়...?!"  বড্ড জানতে ইচ্ছে করে শিলাদিত্যর। ক্লাস সেভেনের ভূগোল বই এ মেঘ-বৃষ্টি- মহাকাশ নিয়ে যেসব কথা পড়ে সে.... তাতে ঠিক মন ভরে না। গাড়ীতে করে স্কুলে যাওয়ার সময়, ছুটির দুপুরে জানালার ধারে... এভাবেই আকাশ দেখে, গল্পের বই পড়ে, কখনও ছবি এঁকে কাটায় সে। ড্রইং খাতার পাতা গুলোতেও বেশীর ভাগই মেঘের ছবি এঁকে রাখে। অলস দুপুরে মেঘের ডানায় ভর করে শিলাদিত্যর মন চলে যায় অনেকে অনেক দূরে অজানা কোন্ মেঘেদের রাজ্যে.... সেখানে শুধু মেঘ আর মেঘ!! মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যেও মেঘ ভেসে আসে শিমুল তুলোর মত, আলতো করে ছুঁয়ে দিয়েই আবার চলে যায়।


এক সময়ের জাঁদরেল মিলিটারি অফিসার ছিলেন বিক্রমাদিত্য রায়। বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত। মাঝে মধ্যে দেশের বাড়ি বিষ্ণুপুরে যান বটে... তবে বেশির ভাগই থাকেন কলকাতায়। সহধর্মিণী দীপশিখা দেবী বাগবাজারের বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তখন থেকেই একমাত্র সন্তান উদয়াদিত্য কে মানুষ করা থেকে সংসারের যাবতীয় কাজ সামলেছেন একা হাতে। বিক্রমাদিত্য কর্মসূত্রে প্রবাসী থাকতেন।  অধ্যাপক ছেলে উদয়াদিত্য, পুত্রবধূ পূরবী, ভূগোল অনার্স প্রথবর্ষে পাঠরতা নাতনি দিয়া আর নাতি শিলাদিত্য কে নিয়ে উত্তর কলকাতার এই তেতলা বাড়িতে বর্তমানে ভরা সংসার। দুঃস্থ মহিলাদের সাহায্য করা থেকে বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন দীপশিখা দেবী। মাঝে মাঝে সঙ্গী হয় পুত্রবধূ পূরবী।




সেদিন রাতে খাওয়ার টেবিলে ঘটলো এক মজার ঘটনা। বিক্রমাদিত্য ঘোষণা করলেন... সামনেই পূজার ছুটিতে তাঁর এক সহকর্মী বন্ধু প্রনবেন্দু পাল বিদেশ ভ্রমণ করে কলকাতায় আসছেন। কিছু কাজও আছে কলকাতায়,তাই এখানে এই বাড়িতে থাকবেন কয়েকটা দিন। তারপর মেঘালয়ের মাওলিনং গ্রামে তাঁর বাড়ি আছে .. সেখানে নিয়ে যেতে চান এঁদের সবাইকে। কথাটা পাতে ফেলতে না ফেলতেই যার পর নাই আনন্দে উচ্ছল হয়ে উঠলো সবাই। দিয়াও আজ আর খাবার নিয়ে খুঁত খুঁত করলো না! শিলাদিত্যও বিনা বাক্য ব্যয়ে ঘট ঘট করে শেষ করে দিল দুধের গ্লাস!!


"দিদি পূজার ছুটি পড়তে আর বেশী দেরী নেই। তাইনা! আচ্ছা, মেঘালয় মানে সেখানে অনেক অনেক মেঘ থাকবে?"  "হ্যাঁ থাকবে। শীতের দেশ তো তাই অনেক অনেক ফুলের বাগান থাকবে, ঝর্না থাকবে.... এখন ঘুমিয়ে পড়, কাল আবার স্কুলে যেতে হবে।"  এভাবেই গল্প করতে করতে সেদিন রাতে ঘুম জড়িয়ে আসে ভাই -বোনের চোখে। 


পূরবী, দীপশিখা দেবী যে যার মতো গোছগাছ শুরু করতে করতেই এসে হাজির পূজার ছুটি। বেড়াতে যাওয়ার জন্যে এই ছুটি টুকুই সম্বল। একসাথে সবাই ছুটি পায় কটা দিন। তাই দশমীর পরের দিনই হাওড়া স্টেশনে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চড়ে বসলো সবাই। দিয়া আর শিলাদিত্য আগে ভাগেই দখল করে নিয়েছে জানালার ধারে সিট গুলো। ট্রেন যখন স্টেশন ছাড়ল তখন দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। পরের দিন ভোরবেলা নিউ কোচবিহার পেরোনোর পর থেকেই পথের দুধারে দেখা মিললো ছোট বড়ো পাহাড়ের। দিয়ার মন চলে যায় পাহাড়ের গায়ে সবুজ শ্যামলিমায়। ট্রেনের দুলুনিতে টের পাওয়া যায় সমভূমি ছেড়ে পার্বত্য অঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কেউ তাস খেলে, কেউ গল্পের বই পড়ে, কেউ বা প্রকৃতি দেখে সময় অতিবাহিত করছে। হকার ওঠা নামা করছে, যাত্রীদের কোলাহল সব মিলিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের চেনা চিত্র।

"এটা নরনারায়ণ সেতু দিদিভাই..."   ট্রেন চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দিয়ে। বিক্রমবাবু ব্রহ্মপুত্রের অসাধারণ সৌন্দর্যের বর্ণনা দিচ্ছেন দিয়াকে।  "দাদু ঐ দেখো বাস, ট্যাক্সি ও যাচ্ছে গো!!!"  কখন ঘুম থেকে উঠে ওদের সঙ্গী হয়েছে শিলাদিত্য... টের পায় নি।  "ভাই, এটা কে বলে ডাবল- ডেক- ব্রীজ।"  সকাল ন' টা নাগাদ ট্রেন পৌঁছালো গুয়াহাটি স্টেশন। ওখানে আগে থেকেই গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছিল অমলেন্দু' র ড্রাইভার। অমলেন্দু প্রনবেন্দু বাবুর সন্তান। ডাক্তার হিসেবে এ অঞ্চলে ভালোই খ্যাতি তার। অমলেন্দুর দশ বছরের ছেলে সোমেন্দু আর স্ত্রী রত্না। অমলেন্দুর মা চন্দ্রানী দেবী বছর তিনেক হল ইহ জগতের মায়া ত্যাগ করেছেন। গুয়াহাটি থেকে গাড়ী চলেছে পাহাড়ি পথ ধরে .... যত যায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। "মা দেখো রাস্তার পাশে কী লম্বা লম্বা ঘাসের বন!" "এই ঘাস গুলো দিয়েই ফুল ঝাড়ু তৈরী হয়, আমরা যেগুলো ব্যবহার করি।"  "ওই দূরে কী সুন্দর ঝর্ণা উদ্দাম গতিতে ধেয়ে আসছে - মা দেখো!" এভাবেই কৌতূহল প্রকাশ করে পূরবীর ছেলে - মেয়ে। যেতে যেতে চোখে পড়ে কমলা লেবুর বাগান, সুপারি গাছের সারি, ফুলের সমারোহ আর পাহাড়ের সাথে মেঘের বন্ধুত্ব। দুপুর নাগাদ গাড়ী প্রবেশ করলো সুন্দর লতানে ফুল গাছে মোড়া একটি দরজা দিয়ে।"দাদু এসেছে, দাদু এসেছে....!" দৌড়ে এসে হাজির সোমেন্দু। সবাই কে আপ্যায়ন করে বাড়ীর ভেতর নিয়ে গেল রত্না। অমলেন্দু তখনও চেম্বার সেরে ফিরতে পারে নি।


মধ্যাহ্ন ভোজের পর সবাই বিশ্রাম নিল, ...ক্রমে বিকেল গড়িয়ে এল। এখানকার আবহাওয়া শীতল তাই পথের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় সহজেই। বিকেলে পায়ে হেঁটে গ্রাম দেখতে বেরিয়ে পড়েছে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ী পরিপাটি করে সাজানো.... সামনে ফুলের বাগান, গেট গুলি লতা পাতা দিয়ে মোড়া। রাস্তাঘাট খুবই পরিচ্ছন্ন... মাঝে মাঝেই আছে বেতের তৈরি ডাস্টবিন। গারো, খাসিয়া, জয়ন্তিয়া আদিবাসীদের বাস এখানে। রাস্তায় রয়েছে সৌরবাতি... সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় এই গ্রাম। ঠিক যেন গল্পের বইতে পড়া রূপকথার দেশ।! পরের দিন সকালে গাড়ী ছুটছে পাহাড়ী পথ ধরে। আজ রত্না ও সোমেন্দু ওদের সঙ্গ নিয়েছে। মেঘে আচ্ছাদিত আঁকা বাঁকা পাহাড়ি পথে হঠাৎ করে ছুটে আসা মেঘ কখন যে জড়িয়ে ধরে টেরই পাওয়া যায় না, ঠিক যেন সোমেন্দু বা শিলাদিত্য' র সহপাঠী কোন বন্ধু। আবার একটু পরেই মেঘের লেশ মাত্র নেই... এ যেন ছোট বেলার আড়ি-ভাব খেলার খুনসুটি!! রিওয়াই গ্রামে গিয়ে দেখা মিলল থাইলং নদীর। পাহাড়ী নদীর উচ্ছল প্রাণবন্ত সৌন্দর্য তো আছেই ... তাছাড়াও এখানে বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় রবার গাছের শেকড়ের সহযোগে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা "লিভিং রুট ব্রীজ"! মেঘালয়ের প্রত্যেকটি পাহাড় যেন ঝর্ণার খনি! আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে ছোট বড়ো ঝর্ণা..... এভাবেই পথে পড়লো "বরহিল ঝর্ণা"। 




চিত্রানুগ এই শৈল শহরের অপরূপ সৌন্দর্য.... প্রকৃতির অকৃপণ দানে মুগ্ধ হয়ে কখন যে দীপশিখা দেবীর দুহাত জড়ো হয়ে আপনা আপনি কপাল ছুঁয়ে যায়! ... মনে মনে বলে "ভূবন মোহিনী মা, তোমার রূপের কতটুকুই বা দর্শন করতে পারলাম! বাকি রয়ে গেল যে অনেক। তবু যা দেখলাম, সেটুকুই এজীবনের সঞ্চয়।


একটাদিন মাঝে বিশ্রাম নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লো সদলবলে। মনোরম পরিবেশ, পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট, দিয়া, শিলাদিত্য আর সোমেন্দুর একরাশ উচ্ছল প্রাণবন্ত কৌতূহলী চোখ মুখ.... সব মিলিয়ে বয়স্ক মানুষ গুলোও যেন নূতন করে ফিরে পেয়েছে হারানো প্রাণশক্তি। উদয়াদিত্য, পূরবী, রত্না তো আছেই... আজ আবার দল ভারি করেছেন ডাক্তার বাবু অমলেন্দুও। ডাউকির অসম্ভব সুন্দর গ্রাম সোনাংপেডেং। উমাংগট এবং কেশর নদীর তীরে অবস্থিত স্বচ্ছ জলের দেশ বলেই পরিচিতি মেলে এর। জলের রঙ প্রাকৃতিক ভাবে সবুজ। জল এতটাই স্বচ্ছ যে নদী তীরের গাছ গাছালি থেকে শুরু করে নদীতে চলমান নৌকার ও ছায়া পড়ে.... ঠিক যেন কোন কবিতার বই এর প্রচ্ছদ অথবা জল রঙে আঁকা কোন শিল্পীর হাতের তুলির টান। প্রকৃতির অকৃপণ দানে ভরা সুন্দরী মেঘালয়কে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে মনুষ্য তৎপরতারও অভাব নেই। শুধুমাত্র বাঁশ আর দড়ি দিয়ে প্রায় ৮৫ফিট লম্বা স্কাই ভিউ এ অঞ্চলের অন্যতম আকর্ষণ। একদম উপরে উঠে গেলে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল সহ আরও অনেক কিছু দৃষ্টি সার্থক করে। এখানকার সুপারি, আদা আর কমলালেবুর চাষ প্রধান ফসল গুলোর অন্যতম।


"জেঠুমনি ঐ যে দূরে... ওটা কী গো?" কৌতূহলী দিয়া আজ গাড়ীতে অমলেন্দুর পাশে বসেছে। 

অমলেন্দুও অনেকদিন পরে ছুরি, কাঁচি, রোগী দেখা এসবের বাইরে বেরিয়ে বেশ মজা পাচ্ছে। অমলেন্দুর মেয়ে নেই একটি মাত্র ছেলে সোমেন্দু.... তাই বোধয় কন্যাসম দিয়া'র সঙ্গ তার আরও ভালো লাগছে। অমলেন্দু বলে চলে.... " ওটা ক্রেমপুরি গুহা। বিশ্বের দীর্ঘতম বেলেপাথর গুহা। আমরা খাসি পাহাড়ের মওসিনরাম এলাকায় এসেছি। এখানে ছোট বড়ো অনেক গুহা দেখতে পাবে।" মেঘালয়ের আনাচে কানাচে যেমন ঝর্ণা আছে তেমনি আছে অনেক গুহা.... এটা দিয়া পড়েছে ভূগোল বই তে। কিন্তু সামনে থেকে দেখে বেশ রোমাঞ্চ লাগছে। বিভূতিভূষণের  "চাঁদের পাহাড়" বইটা আগেই পড়েছে এখন যেন নিজেকে শঙ্করের সহযাত্রী বলে মনে হচ্ছে দিয়ার।


সেদিন রাতে স্বপ্নে ওরা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়িয়েছে। শিলাদিত্য আকাশ ছুঁয়েছে হাত দিয়ে, সোমেন্দু নদীর স্বচ্ছ জলে অনেক... অনেকক্ষণ ধরে স্নান করেছে, দিয়া পাহাড়ের আনাচে কানাচে, গুহার ভেতরে বিভিন্ন রকমের পাথরের অনুসন্ধান করেছে। 

      সকাল হতেই মংলু চলে এসেছে। মংলু এবাড়ির মালীর ছেলে। সোমেন্দু' র সমবয়সী। তাই প্রায়ই আসে, এই কদিন একটু বেশীই আসছে ওদের সাথে খেলতে। 

বিকেলবেলা মংলুর সাথে সোমেন্দু আর শিলাদিত্য যাচ্ছে ওদের পাড়ায়। পাহাড়ী ঢাল বেয়ে কিছুটা বামদিকে নেমে গেলে ছোট ছোট যে ঝুপড়ি গুলো দেখা যায়... ওখানেই মংলুরা থাকে। অমলেন্দুর এখানে একটা দাতব্য চিকিৎসালয় আছে। সপ্তাহে একদিন করে আসে এখানে। ওরা যেতেই সমবয়সী বেশ কতক ছেলে মেয়ে এগিয়ে এলো ওদের কাছে। সামনের খোলা জায়গাটাতে খেলা করলো ওরা। শিলাদিত্যর হাতের দূরবীনটা ওদের খুব পছন্দ। ওদের কাছে ছিলো ছোট বড়ো করে তিনটে দূরবীন, দুটো বল, চারটে প্লাস্টিক ব্যাট। সোমেন্দু আর শিলাদিত্য ওগুলো দিয়ে দিল ওদের কিন্তু সবাইকে দিতে গেলে আরও লাগবে.... কী করা যায়!

"সোমু.... এই নাও, এগুলো ওদের দাও।" ... পিছন ফিরে দেখে ব্যাগ ভর্তি জিনিস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দীপশিখা দেবী, দিয়া, রত্না আর পূরবী। কখন ওদের পিছু নিয়েছিল জানতেই পারেনি! দৌড়ে গিয়ে পূরবীর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে অনেক বল, ব্যাট, পোশাক বিলিয়ে দিল বাচ্চা গুলোর মধ্যে। উচ্ছ্বাসে, খুশীতে উপচে পড়লো ওরা ফুলের বাগান খেলার মাঠ ছাপিয়ে আরও আরও...! দীপশিখা দেবী যে সমাজসেবা মূলক কাজের সাথে যুক্ত সেকথা তো শুরুতেই বলেছি। তাই অন্য দুটো ব্যাগে করে এনেছে এখানকার মেয়েদের জন্য শাড়ী। প্রথমে মংলুর মায়ের হাতে... তারপর একে একে অন্যদের দিয়ে... কাল এগুলো তোমরা পরবে কেমন। কাল ওদের " ওয়ান গলা" উৎসব। "আমাদের যেমন নবান্ন উৎসব, ওদেরও তেমনই ওয়ান গলা। দেবতা মিসি আর সালজং এর উদ্দেশ্যে উৎপাদিত ফসল উৎসর্গ করে তবে ওরা সেই ফসল গ্রহণ করে। এটাই ওদের প্রধান উৎসব।" ....কথা গুলো শিলাদিত্য, দিয়া আর সোমেন্দু কে বলতে বলতে বাড়ির দিকে রওনা দেয় দীপশিখা দেবী। পরের দিন উৎসবে ওদের সাথে খুব করে আনন্দ করে সবাই, যেন ওরাও উৎসবেরই একটা অংশ। মেঘের দেশে মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি খেলার মতোই জমে ওঠে ওদের বন্ধুত্ব। 




পরের দিন সকালে গোছগাছ শুরু। এবার ফেরার পালা.... শুরু হবে সেই চেনা রুটিন। বিকেলের ফ্লাইট তাই একটু খাওয়া দাওয়া সেরেই বেরিয়ে পড়লো ওরা। অমলেন্দুর গাড়ি এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ছেড়ে আসবে। গাড়ির সামনে ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছে মংলু আর বাচ্চা গুলো.… বিক্রমাদিত্য বন্ধু প্রণবেন্দুকে বিদায় জানিয়ে গাড়ীতে উঠলেন। তারপর একে একে.... সব শেষে শিলাদিত্য। গাড়ী চলতে শুরু করল.... জানালা দিয়ে হাত নাড়ছে শিলাদিত্য,  গাড়ির আয়নায় দেখা যাচ্ছে বাচ্চা গুলো গাড়ির পিছনে দৌড়াচ্ছে.... বাঁক ঘুরতেই আর দেখা গেল না ওদের। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো শিলাদিত্যর। পাহাড়ি পথে গাড়ি ছুটছে গন্তব্যের দিকে। দূরে মেঘ গুলো সরে সরে যাচ্ছে। একসময় উদয়াদিত্য গাড়ির কাঁচটা একটু নামাতেই এক টুকরো মেঘ ঢুকে পড়লো গাড়ির ভেতর, ঝিরঝিরে বৃষ্টি ঝরিয়ে দিল শিলাদিত্যর মুখে, যেন কানে কানে বলল.... বন্ধু ভাবনা কী! আমিও আছি তোমার সাথে। আরও একবার মেঘের বন্ধুত্ব অনুভব করলো শিলাদিত্য। 

                    …………………..




বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। সর্বত্রই পাওয়া যাচ্ছে


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - নিজস্ব

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614





No comments:

Post a Comment

তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা // ই-কোরাস ১৮০

  তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা ১. মহানির্বাণ   চুন্দ, চুন্দ, এখনি এই শূকর মাংস মাটির গভীরে পুঁতে ফেলো, পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে এই মাংস পরিপাক করতে প...