মৌপর্ণা মুখোপাধ্যায় এর কবিতা
জলঋণ
বুকে জল জমলে
শব্দগুলো ভেসে ওঠে।
বিন্যাসরীতি সুগঠিত হলে
জলরঙ তৈরী হয়।
সেই রঙে ছবি আঁকি,
জলের দাগে বেড়ে যায় ঋণ।
ফোঁটা ফোঁটা জল কখনো
বৃষ্টি হয়ে ঝরে।
ডোরা কাটা জল দাগ
মনের ভেতর বাঘচোখ তৈরি করে।
—--------------
আবহমান
পাহাড়ের বুক ফোটে।
হিমবাহ গলে যায়।
বিশুদ্ধ শীতল বাঁকে
ঠান্ডা কথাগুলো শুয়ে থাকে।
পাশে সুপ্ত আগ্নেয়গিরিটি
হঠাৎ করে জেগে উঠলে
আগুন কেঁদে ওঠে
একরাশ অভিমান নিয়ে।
তারপর হিমাগ্নি নদীতে নদীতে স্নান সারে
চমরী গাই এর দল।
জমে ওঠা, গলে যাওয়ার মাঝে
যে ব্যাবধায়ক
তার ওপরেই আমাদের ঘরবাড়ি,বাগান,
ধানজমিটির অবস্থান।
—-------------------
অস্থির সময়
দিনগুলো বড় ক্লান্ত।
বৃক্ষ ছায়াতলে বিশ্রামরত,
নির্মল আকাশে মেঘের মলাট।
বিকেলের দীর্ঘ ছায়াটি
ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে,
অন্ধকারের বুকে বিলীন হয়।
পথঘাট খুব স্যাঁতস্যাঁতে,
কাদাকাদা জলে মিশে আছে
অসন্তোষের ঢেলা।
গুমোট পরিবেশে শ্বাস ভারী হয়ে আসে।
ছুটে যাই মায়ের কাছে
আঁচল নিঙড়ানো জলে
ধুয়ে নিই চোখ মুখ।
—------------------
এক গল্প
এসো, আগুনের গল্প বলি।
সহস্র কাঠ পিঁপড়ের ঝাঁক
ওই কাঠের কলমটা
নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল।
তুমি ইটগুঁড়ি রং দিয়ে
ক্ষতের ওপর প্রলেপ লাগিয়েছিলে।
আজ কলমটা আরোও শক্ত।
কাঁচামাটি পুড়ে গেলে
অন্তকঙ্কালের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
—------------------
তাপন
অনেকদিন পর
জ্বর এলেও ভালো লাগে।
কপালের তাপ শুষে নেয়
তোমার করতল।
আঙুলের মধ্যিখানে জড়িয়ে জড়িয়ে থাকি,
লতানো গুল্মটির মতো।
প্রখর বিষণ্ণ দিনে
তুমি হয়ে ওঠো
বিশল্যকরণী কিংবা;
অন্য ঔষধি বৃক্ষ।
কুঁড়েঘরের চাল ফুঁড়ে
দেখা দেয় নিটোল হাসিমুখ।
যত্নে রাখা উনানশাল, কুড়িয়ে আনা জালন
একটা দিন সব অগোছালো করে দেয়,
তারই মাঝে বয়ে চলে অবিন্যস্ত সুখ।
—-------------------
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
প্রচ্ছদ - সুকান্ত সিংহ
ঠিকানা -সুরতপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
No comments:
Post a Comment