Sunday 29 May 2022

নিমাই জানার কবিতা // ই-কোরাস ৫৮

 


নিমাই জানার গুচ্ছ কবিতা



   

রান্নাঘর ও গর্ভবতী ভগ্নাংশের মৃত্যু


মায়ের মৃত্যু চিহ্নের মতো আর কোন বৃহত্তম দশমিক সংখ্যা নেই ঠান্ডা জলের বোতলের ভেতর অসুস্থ হিমালয় ঘুরে বেড়াবে, 


আমি শুধু আরো একবার প্রাণায়াম যোগের পর কিছু সাংখ্য যোগের পারদ ত্রিশূল নিয়ে নেমে আসি এক একটা ভূমধ্যসাগরের তীরে 

বাবা একটি অগ্নি মশাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার বিছানার পাশে 

কাঠের বিছানাটি হঠাৎ করেই তেরোটি খন্ডক হয়ে গেল আমি শুধু একটি ঈশ্বরী চিহ্নের কথা স্মরণ করি, যাকে মৃত্যুর আগের দিন একটি শিমুল রঙের আলোকবর্ষ আগুনের কাছে রেখে ধ্যানমগ্ন ছিলাম


রোজ রাতে আমি শুধু সাইকেলোপাম অথবা অ্যামিট্রিপটিলিন উভয়লিঙ্গ ওষুধটিকে বুকের কাছে লুকিয়ে রাখি তরোয়ালের নিচে সবাই কৃষ্ণ, একবার উপুড় করে বসে থাকবে সোনালী রঙের আকাশের জন্য 

হঠাৎ করে আমি কেবল সৌমিত্র হয়ে যাব, ভয়ার্ত বাঘেরা তিনদিন অভুক্ত থাকবে এবার

হামিংবার্ডের মতো স্বভাব বিরুদ্ধ সব কপটতা জলের অতলে থাকা নৌকার কাছে রেখে যাবো এক শ্বেত বস্ত্রের ভেতর 

অসংখ্য সাপেরা একদিন মৈথুন শেষে আমাকে তার খোলসটি দিয়ে যাবে অসুস্থ ঢেকে রাখার জন্য 

কালো অক্ষর চিরদিন আমার মাথার উপর দিয়ে বয়ে যায় নীল দৈর্ঘ্যের ঈশ্বরীয় মুণ্ডমালা নিয়ে

রান্নাঘরের সাপেরাই চিৎকার করলে জননতন্ত্র থেকে এক একটা ভাতের থালা খসে পড়ে, আমি শুধু নিরাকার শরীর খেয়ে যাই ভাতেরা আজ বোধহয় শ্বাসকষ্ট অনুভব করল

রান্নাঘর থেকে আমার টিয়া রঙের নারী বলবে আজ বোধ হয় অশৌচের ভাত খেয়ে নেওয়াই ভালো, মৃত্যু তিন দিন হল বাকল খসিয়েছে


মোরলা মাছের মতো মৃত্যুও হঠাৎ করেই গর্ভবতী হলো

……………….............



আপতন কোণের জারণ ও  চিরহরিৎ যীশু



চতুর্থ দিনের পর যীশুকে আবারো একবার লেড পেন্সিল দিয়ে হত্যা করে রেখেছি ভিনিগারের ভেতর


সব বীজগাণিতিক সম্পাদ্য সুখের নয় , ইনফেকশাস জ্বর হলেই আমি শুধু নিজের শিরদাঁড়ার কাছে শুয়ে একটি বকুল ফুলের গন্ধ শুঁকে চলি

আমাদের কোন তৃতীয় পুরুষ নেই বলে এক একটা ছায়াপথকে ঘিরে আমি আগুনের কাছে অজস্র আপতন কোণের জারণ অসুখ উপুড় করে রাখি

আমি আজকাল গভীর রাতের মৈথুন কোনে নিজেকে বলি প্রদত্ত করি সাপের মতো , অজস্র সাপ আমাকে জড়িয়ে ধরে একুরিয়ামের ভেতর অজস্র অপরাধী প্রতিদিন ঘুরে বেড়াচ্ছে , 


একটা গোপন কক্ষের ভেতর অপরাধ স্বীকার করব ভৌগলিক হয়ে যাওয়ার আগে , রাতের কোন ছায়া চিরহরিৎ হয়না

ব্যাবিলন শহরের লেড নাইট্রেট নিয়ে জামরুল গাছের গোড়ায় অসংখ্য কাল্পনিক বিষাক্ত পাথর রেখে আসি গ্রানাইট সকালে আগুন খুঁজছি আজ 

একটি কাঠের জানালার পাশে দাঁড়ালে অসুখ ও স্ত্রীলিঙ্গ হয়ে যায় ,  আমাদের জড়িয়ে ধরে রাতদিন এখানে বৈষ্ণবচিহ্ন নেই 

আমি প্রতিদিন চন্দ্রাবলীর মতোই নব বৃন্দাবনের অশীতিপর আলোছায়া মেখে চলি 

প্রতিদিন আমাদের মতই অসুস্থ নদী অলৌকিক হয়ে যায় নৈঋত কোণের দিকে মুখ করে 

আমাদের আর কোন যাপন চিহ্ন নেই শুধু এক গহীন রক্তাক্ত পায়ের নিচ থেকে অসংখ্য বীর্যপাতের গন্ধ আসে শৈথিল্য সুখের পর 

সবাই নিরাময় ভবন থেকে ব্রাহ্মী শাকের পালক নিয়ে উড়ে যায় অজস্র চাঁপাতলার দিকে 


আমি শুধু ধর্মযুদ্ধের দিকে পাশ ফিরে শুই ,ঈশ্বর আমাকে ক্ষত্রিয় করেছেন , দ্রৌপদী করেছেন

……………...........



 

বানেশ্বর পুরোহিত ও বিটাহিস্টামিনিক জ্বর



প্রতিটি রাতের যৌন চিহ্ন মানেই অভেদ সংক্রান্ত বিটাহিস্টামিনিক


আমি গভীর রাতে নিজের বিছানার উপর নিউক্লিওলাসের একটি নৌকা চালিয়ে বসে পড়ি মরচে রঙের অস্থি গ্রন্থির উপর

আমি একটি কাল্পনিক ডায়াস্টোলিক নারীকে দেখতে পাই যে আমার প্রতিটি প্রহরে ১০০ ডিগ্রি জ্বর রেখে যায় 

আমি শুধু শীতল স্পাইরোগাইরা ছাতার নিচে একটি সহবাস চিহ্ন রেখে আসি , সূর্যাস্ত আর কিছুই নয় একটা কাগজ ফুলের পাতলা পাপড়ির মতো লিভোসেটিরিজিন মুখ


যার কাছে বিষাক্ত সাপের দুটি লেজ আজও সমাক্ষরেখা খুঁজছে

সম্প্রদান চিহ্ন রেখে আসি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো , আমার ঘিলু উড়ে যায় , তোমার নাভি উড়ে যায় , আমার তিনটি চোখ খুবলে যায় , তোমার বাম স্তন উড়ে যায় , আমি শুধু খুবলে খাওয়া এক একটা সরীসৃপের নৌকা , অথচ আমার তলপেটে একটা পাকস্থলীর দুর্গন্ধ আছে , রোজ একবার করে সাইকোটিক হয়ে যাই 

মধ্যপ্রহরে কেউ না ডাকলেও ঘুম ভেঙে যাবে হঠাৎ

আমি কিছু আগুন দেখি চেতনা পূর্ণ নারীটিরং কাছে 

যে  আমাকে বলে যাবে একটা ভয়ার্ত গানের কথা 


জ্ঞানশূন্য বানেশ্বর পুরোহিত এসে বসুন এক প্রাচীন কাঁঠালিচাঁপার গোড়ায়, তিনি ক্রমশ দাহিত হবেন

…………….........


অযৌন স্বরধ্বনি ও সিন্ধু শহরের ঈশ্বর



স্বরধ্বনি আগুনের কোনদিন সাংকেতিক চিহ্ন থাকে না 

আকাশের মতো প্রতি রাতেই ঈশ্বরীর ভূগোল বৃত্তান্ত রাজকন্যা পোশাক ছেড়ে পাখির মতো স্ত্রী লিঙ্গের অযৌন অক্ষাংশ হয়ে যাবে প্রথম বন্ধনী আকাশের নিচে , 

প্রদীপের নিচে একটি থকথকে ছায়া কেঁপে উঠছে মধ্য তারের বেহালা বাদকের মতো

অযৌন অক্ষাংশের মুরারীচক নেমে আসছে সমতল পাললিক শরীর মেখে , ড্রোটাভেরিন গাছের কোন কঙ্কাল থাকতে নেই

অশ্বগন্ধার ছায়া দেখে আঁতকে উঠি সমকোণে থাকা ঈশ্বর মন্দিরের নতজানু কুয়াশার কাছে 

কুয়াশা আসলে অন্তঃস্থ বর্ণের নাম , একটি পেন্ডুলাম আমাকে নৌকা বিলাসে নিয়ে যাবে দ্বারকা নগরের পর 


বিষাক্ত কালিয়া দোঁহে ধানবীজ রেখেছি প্রজনন ঘোরে

জোনাকি রেখাপাতের কাছে সকলেই লিউকোপ্লাস্টের মতো  একটি ভগ্নাংশ বিকেল লুকিয়ে রাখে 

অযৌন চিহ্নের পাশে আমি কিছু ডোরাকাটা বাঘের পতঙ্গভুক শরীর নিয়ে নৈশকালীন প্রোতাশ্রয়ের দিকে চলে যাই খনিজ মার্কা ঠোঁট নিয়ে

সকলের কাছে অঙ্গাণু ঝুলে আছে ত্রিপত্র কপাটিকার মতো , আসলে ভয়শূণ্য দাতব্য চিকিৎসালয় গোপন নাবিকের ক্ষয়জাত আকাশ খুঁজে বেড়ায় 

আমি শুধু গুরু মস্তিষ্কের নিচে ছড়িয়ে থাকা পাললিক পাথরে নিচের গোপন অঙ্গ রেখে আসি 

সব চতুর্ভুজ বোতামের নিচে একটি সিন্ধুশহর জেগে আছে


আমার মৃত্যুর দিন এই দুটো কাগজ ফুলের চারা গাছ হঠাৎ করেই উপপাতালিক নৌকা হয়ে গেল , কান্নার জন্য একগুচ্ছ মানুষ দাঁত বের করে হাসছে

……………..........


জিওলজিক্যাল বাঁশি ও  আগুনের রজঃস্রাব



জিওলজিক্যাল বাঁশরী বেজে উঠলে আমি এখন কচুরিপানার মতো সামুদ্রিক নৌকা নিয়েই ভেসে যাই আরও গভীর তলদেশে থাকা প্রবাল পুরুষদের কাছে 


সেখানে কে কাকে অশ্লীল করে তোলে , আমার এই নীল ছায়াছবির মতো রুদ্রাক্ষের পাশে এক ছায়াগাছ জেগে থাকে সব ভীরু কাপালিকের মতো , তলপেটে পচা অ্যালকোহলের গন্ধ

আমি কাল্পনিক হয়ে যাই প্রতিরাতে , গাছ থেকে পুরুষেরা নেমে আসলে আমি শুধু চৈতন্য অক্ষরের কথা ভাবি 

আসলে আমার বিছানার নিচে এক সশস্ত্র মৃত মাছ জেগে থাকে আমার ঘুম বিন্দু নিয়ে

জলাশয়ের পাশে কিছু কাঠ গোলাপের চারা নিয়ে আসি মাংসাশী পুরুষের জন্য , যারা চাষাবাদ শুরু করেছে আজ 


আমি রাতের যানবাহনের  দিকে এগিয়ে যাই 

অনন্ত সামুদ্রিক ঘাটের দিকে নিজের বিভাজিকা গুলো শুকনো অথচ ক্ষুধার্ত থাকে 

হরিণ একদিন এখানে এসে সব কাগজের পুতুল গুলোকে খেয়ে নেওয়ার পর শিরদাঁড়া বরাবর কিছু পাতার শরীর রেখে গেছে মৃত ভগ্নাংশের মতোই 

চকচক করে ওঠে জলাশয়

সবুজ রঙের বাহারি রাত্রের একটি করে নিঃস্বার্থ গন্ধ আছে যেখানে ধারালো মাংসাশী দাঁতগুলো কাউকে কামড়ে দেওয়ার পরও রেখে যাবে ত্রিভুজের গোলাপি বসুন্ধরা পর্বত 

অথচ আমি কৃষ্ণের মতো বারবার ফিরে আসি অজস্র অক্ষৌহিণী সেনা নিয়ে

আমার মা , আমি আর এক পরম পুরুষ একসাথে অশৌচ ভেঙে ফেলেছি আমার অন্ত্যেষ্টির পর 


লাল রঙের ভাত খায় বলেই আগুনের কোনদিন রজঃস্রাব দেখা যায়নি , ৩৩ বর্গক্ষেত্রে আমরা শুধু মিথুন শিখেছি

……………


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ  -  অভিরুদ্র জানা

ঠিকানা -সুরতপুর,  দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১

কথা - 9434453614

No comments:

Post a Comment

তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা // ই-কোরাস ১৮০

  তৃষ্ণা বসাক এর কবিতা ১. মহানির্বাণ   চুন্দ, চুন্দ, এখনি এই শূকর মাংস মাটির গভীরে পুঁতে ফেলো, পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে এই মাংস পরিপাক করতে প...