নিমাই জানার গুচ্ছ কবিতা
ব্যবচ্ছেদ হীন ফল দোকান ও একুশটি সজনী র
আমি নিজের ব্যবচ্ছেদ করি একটি ভোঁতা ফরসেপ দিয়ে, নদীটির তীরে উপযুক্ত স্থানে নিয়ে যাই আমাদের প্রাচীন ফলদোকান
আমাকে উলঙ্গ করে ভিজিয়ে যায় আকন্দ ফুলের নির্যাস
ধীরে ধীরে আমার সব ক্ষতমুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসে আজকাল আমি নাশপাতির চরম মান আবিষ্কার করেছি
১১টি উলঙ্গ নারী, ২১টি সজনে রঙের শিশু সংকুচিত আবেগকেই ধীরে ধীরে মাথার ওপর জল গুলিয়ে ঢেলে যায়, পাতাবাহারের ডগায় রাখি প্রতিদিন শহরতলীর গর্ভপাতের হিসাব মধ্যদুপুরকে ছুঁয়ে গেছে বাল্মীকির মতো অন্য কোন বৃষ্টিদানার শারীরিক প্রক্রিয়া , নেলপালিশ
দেহের প্রতিটি বুর্জ খলিফায় জমা হয় আরবিয়ান ডেটস আর ভেজা পাওলি দাম
হিমোফিলিয়ার গন্ধ একটি অপ্রকৃতিস্থ মানুষের মতো, যে প্রতিদিন আধমরা ব্রহ্ম কোষ থেকে বের করে সিস্টাইটিস নক্ষত্র রাতেরবেলা নক্ষত্র দেখলেই পায়ের তলায় বিষধর সাপ জড়িয়ে উঠে উনুনের বক্ষবন্ধনী অবধি,
স্তন্যপায়ী লাল ব্লাউজের ভেতর অদৃশ্য মরুভূমি খুঁজতে গিয়ে কিছু পাইন গাছ আবিষ্কার করে ফেলি
পশুপতি কোনদিন অসম্পৃক্ত সম্ভোগের কথাই বলেননি ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান সমগ্রে, পার্বতী উপযুক্ত যৌনসঙ্গিনী ছিলেন
মাথায় অভুক্ত বৃহন্নলারা শুভ্রকীটের মতো অদ্বৈত ঈশ্বর নিয়ে আসে অলীক বিভীষিকা উলোট কম্বলের ভিতরে
মা হাত বাড়িয়ে সব ধরনের আতপ চালের দানাগুলো আমাকে চেয়ে বসে অথচ আমি পেন্সিলে আঁকা একটি সাধু মানুষের গলায় মৃত সাপ রাখি
বাবা ভৌত বিজ্ঞানের রামধনুর প্রতিবিম্ব দেখে গলার কাছ থেকে বাতাবি লেবুর প্রজননতন্ত্র বের করে
শুক্রানুরা প্রতিদিন পিটুইটারি থেকে নেমে আসে সারা দেহ বরাবর বাইরে তখন শৈলোৎক্ষেপ অথবা চৌম্বক বলের ব্যাসার্ধ স্বেদন খাচ্ছে
…………….......
ধ্বজভঙ্গ সিটাডেল ও মনোরোগ বিছানা
আমার পুরোহিতের মতো আমি ও ক্রমশ ধ্বজভঙ্গ সিডাটেল ডান স্তন চিবিয়ে খাচ্ছি স্বর্ণালঙ্কারের নিচে
আমার কোমরের কাছে যে অবৈধ তাম্র কুণ্ডলি থাকে তাই নিয়ে পিচ্ছিল সহবাসে রত হয়ে পড়ে গোপ সাম্রাজ্যের দ্বাদশ সন্তান
কোনদিন ইরেকটাইল ডিসফাংশন দেখা যায়নি পরমেশ্বরের চোখে আমি তবে প্রাচীন মনোরোগী ছিলাম , প্রতিদিন অশ্বগন্ধার জলীয় দ্রবণ ঠান্ডা জলে মিশিয়ে খাই অবন্তী নগর সমুদ্রের মতো
অবৈধ সঙ্গমে মিলিত হবেন সবাই মায়াঘোর কেটে যাওয়ার পর শ্রীরাধিকা ক্ষেত্রের চেয়েও যমুনা অনেক বেশি অবৈধ মৃত্যু চেয়েছিল
সাপের মতো আমি প্রতিদিন কোমরের কাছেই একটি অদ্ভুত অস্ত্র নিয়ে ঘুমোতে আসি, শিশুটি একান্তই বুঝে নেয় বিছানার বালিশের তলায় মরুদ্যান লুকিয়ে থাকে
এখানে এলেই হরিণীরা মারা যায় , ক্যাকটাসের মাথায় তিনটি গর্ভাধানের অনন্ত কাল ,
ধীরে ধীরে আগুন রঙের পাখি গুলো দেবদারুর নিচে থাকা ঋষিদের দাতব্য করে গেছে ঝুলে থাকা ছায়াপথের স্খলিত শুক্রাশয়ের নিচে
ফিনকি দেওয়া দাঁতের রক্ত আর আরবি জাফরান দানার মত ওষুধপত্র খেয়ে নিরাভরণ সেবায়েত মন্দির থেকে বেরিয়ে আসছে ক্লোরোফর্মের জিভ
এন্টিহিস্টামিনিক ঔষধি বৃক্ষ লাগিয়ে দেবো মহাজগতের পাশে অদ্বৈত নিমেষে পালক পিতার কাছে ক্রমশ পাপস্খালন করবেন নিজেকে হত্যা করার পর
অপ্রকৃতিস্থ মানুষ ঠিক অর্জুন পাতার মতো নিজেকে লিটমাস ভেবে নেয় সারারাত , এখন ব্রহ্ম যোগের কথা হোক
…………….......
এসিডিক বাম স্তন ও সামুদ্রিক প্রবাল
দেওয়াল জুড়ে ও দুর্ভিক্ষ থাকে ,কাঁচ পৃষ্ঠার ওপারে থাকা এসিডিক নারীটি বাম স্তনের ক্ষত মুখ ঝুলিয়ে রেখেছে নিজের জন্য
আমার তলদেশে গুজিয়ে ওঠা রক্তনদীর গর্ভস্থ আঙ্গুলগুলো কিলবিল করছে মৃত ডিম্বাণুর কম্পাঙ্ক নিয়ে
এখন কিছু অপারেটিভ টেবিলের শিরদাঁড়ায় রাখা অচেতন ওষুধটির মতো একগুচ্ছ অন্ধকারকে জড়িয়ে ধরে সামুদ্রিক সৈন্ধব লবণের একটি অসুখ
লুকিয়ে আছে আমাদের যোণী ও প্রহ্লাদ
প্রতিটি নাভি কুন্ডলীর কাছে চেয়ে দেখো ব্রহ্মা এখন পলাশের দাঁতালো অসুখগুলো প্রতিটি বিছানায় সারারাত ঘুরে বেড়ায় কালো নৌকার মতো
ঈশ্বরীয় দাঁতে দাঁত রেখে আঁচল থেকে বের করে লাল করবী ফুলের ডগা , কংক্রিট মানুষেরাই প্রতিদিন আত্মহত্যা করে আগুন জীবাশ্মকে গ্রানাইট পাথরের উপর বিছিয়ে দেয়ার পর
আমার দুটি হাত দীর্ঘ করে দেখি বাবলা ফুলে ঢোকার জন্য , কাঁটা ফুল ,রজনীগন্ধা ৩১ টি চন্দন গাছের ডগা দিয়ে আচমন সারি প্রতিটি অক্ষাংশহীন দুপুরবেলায়
ঈশ্বরী আর বাঁশি বাজাবেন না কোনদিন
একটি মৃত বাঘ দাঁড়িয়ে আছে শরীরের অলৌকিক শব্দ স্থানে আমার ব্রহ্মবাদিনী জলাশয় থেকে উড়ে আসছে অবৈধ সন্তানের ভ্রূণ ও রক্ত
একটি পরজীবী ছায়ার নিচে দাঁড়ালে নিজেদের উৎপাদক হারিয়ে ফেলি , আমার বাবার মতো আমিও ৩৬০° জ্বরকে ভয় পাই অচেতন হয়ে কঙ্কালের চারটি স্তন একসাথে চিবিয়ে খাই , রাক্ষসী কৌপিন পরে আসছে
……………......
জিরাফ রঙের ফার্নিচার দোকান
প্রতিটি সঙ্গমের পর নিজের ওপর সমকৌণিক বৃক্ষ হয়ে বসে পড়ি আমি , আমার গায়ের আঁশটে গন্ধ চলে যায় আমি তখন কোন এক বৈদিক যুগের বৃত্তাকার আগুন নিয়ে আরও কঠিন শীৎগর্ভ ভেদ করে কৃষ্ণ গহ্বরের লাল দগদগে লাভা নিয়ে আসি
আমার জিভের বদ রক্ত নিজেই খাই বলে খুব মিষ্টি লাগে
আমার অযৌন রঙের অঙ্কন প্রণালী এখনও কেউ প্রমাণ করতে পারেনি কিছু নিষিদ্ধ শিমুল গাছের কাঁটা একগুচ্ছ নারীদের শিফন শাড়ি আত্মহত্যা রং মেখে নাশপাতি বৃক্ষ হয়ে ঝুলে আছে
তরল পাথরের উপর একটি ফার্নিচার দোকানের মৃত জিরাফ , সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার আগেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছেন তার চৈতন্য শিখা
জিরাফের মধ্যপ্রাচ্যের ডগায় একটি গোলাপ ফুলের চারা লাগিয়েছি কোন ভূমা অঞ্চলের উর্বরতা দিয়ে
চুলের ডগা দিয়ে প্রতিটি অক্ষাংশ মাপার পর দাফন শেষের পুরুষদের হাতে মাটির দাগ লেগে থাকে , সে দাগ কাঁকড়া বিছা জানে না
আত্মহত্যার পর প্রতিটি পাজামার কিছু গ্লিসারিন মেখে নেওয়া উচিত যাতে গর্ভপাত বিষয়ক টেবিলের উপর কোন বোধিবৃক্ষের দাগ না থাকে
…………….......
একটি যৌন বিশেষজ্ঞ সাপ ও সালফিউরাস চাঁপা ফুল
একটি মৎস্য বিক্রেতার তলপেটে কতগুলো শিরার রক্ত আছে
অদৃশ্য ব্রাহ্মণেরা পাথরকুচির মতো লাল সাঁওতাল চিনে ফেলে রাতের বেলায় ,
কোমর থেকে কিছু গুগলি চড়ে বেড়াচ্ছে দৈনিক লাল ফুলের মত একটি সাদা রঙের মিছিল শীঘ্রপতন দোষে দুষ্ট যৌন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে বাড়ি ফিরে আসছে রাতে জল খাওয়া সাপের মতো
কিছু কার্ভিং মল্ডোড পয়েন্ট টেবিলের নিচে কামিনী ফুলের সহবাস কথা রাতের বিড়ালগুলো মাঝের ঘরে থাকার পর স্টেপই সিকিওর আর গর্ভস্থ ভ্রূণ জড়াজড়ি করে বয়ে যায় গঙ্গা জলের দিকে
আমি আমি তখন রাতের কানামাছি খেলার আগেই দূরের চাঁপা তলায় গজিয়ে ওঠা জলজ গাছগুলিকে রোপন করে শুকনো বীজপত্রের উপর , অসুখের থেকে দূরে সরে গেলেই বাকি অসুখটুকু কবিতা হয়ে যায়
ঝুড়িতে করে আবর্জনার মতো নরম ক্লোরোফিল ফেরি করে চলি প্রতিটি অধিক ঝিম কালো ঝুপড়ি গুলোর ভেতর
আমার নরম দুঃখ কণার মতো সমকোণী ত্রিভুজ গুলো আজ একসাথে রৈখিক বন্ধনী দিয়ে জড়িয়ে ধরেছে
আমাদের শরীরের ভেতর এক জড় রঙের ঈশ্বর আছে
চোখগুলো সালফিউরাস বলেই কিছু জলযান থেকে উঠে আসে অপার্থিব প্রাণী , তারা সকলেই ঝাউপাতার সাথে অবৈধ সঙ্গমে লিপ্ত হয় প্রতিদিন
আমি অ্যানোফিলিস আর মৃত মেহগনি গাছের ফলের মতই গোখরো, আজকাল ব্যবচ্ছেদের পর হঠাৎ করেই বিসর্গ চিহ্নের তনুময় পুরুষকে দরকার হয়ে পড়ে
যার দেহে অজস্র ক্লোরোসিস ও শালপ্রাংশু গুঁড়ি লেগেছে
…………..........
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
প্রচ্ছদ চিত্র - কোরাস
ঠিকানা -সুরতপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
No comments:
Post a Comment