Friday, 1 January 2021

e-কোরাস ৪১ // প্রেমের কবিতা অংশ ১

 

আত্মজন

র্থিতা মণ্ডল








বাউল ডেকেছে আজ নিদারুণ স্রোত

আমি রাই,  বাঁশি বাজে শ্বেতগন্ধা ফুল

অরণ্যে রাত নামে চাঁদে ভেজা পুরুষের বুক

 যুগলে লিখেছি আলো সে বড়ো গভীর।

 রাই আমি ঈশ্বরী অনন্ত প্রকাশ

ঈশ্বর পুরুষ সে আজন্ম শরীরে ধরে আমার যাপন

            ……………. 


অন্তরের আলাপন

 অন্তরা ঘোষ












সে এক স্মিত অবজ্ঞায়,

ভালোবাসা ফেলে এসেছিলাম

বন্ধ্যা খোয়াইয়ের বুকে।

তুই তখন নীল শাড়িতে 

লক্ষকোটির প্রাণভোমরা।


তোকে ভালোবাসতে,

আমার তোকে প্রয়োজন হয়নি।

অনুভবে যতটা ছুঁতে পারি তোকে,

শয্যার প্রবাল দ্বীপে ততটা পেতাম না।


মনে মনে রোজ বাসর রচি আমি।

তোকে স্পষ্ট দেখি বন্ধ চোখের মায়ায়।

অধরে ঠোঁট ডুবিয়ে দিই যখন তখন।

সেজন্য তোকে লাগে না আর।

মাত্রাচ্যুতি ঘটলেও বকুনির ভয় থাকে না।

আলোর সোহাগে তোকে পেয়েও পাইনি।

অন্ধকারের দেয়ালাতে তুই আমার।

আজ,কাল,এবং সমস্ত আগামী।


অনুভবের চেয়ে সত্যি প্রেম আর কিছুতে নেই।

              ……………….. 


রূপকথার দেশ

মিঠু রাজবংশী










রূপকথারা বলেছিল 

একদিন প্রকৃত প্রেমিক আসে

চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া নোনাজল

নিজের ঠোঁট দিয়ে শুষে নিতে নিতে

গভীর মমতায় জড়িয়ে ধরে 

ওমমাখা বুকের ভেতর।

কপালে একটা চুমু এঁকে বলে

'আছি তো'।

আজকাল আয়নার সামনে বেশিক্ষণ

দাঁড়াতে পারিনা। পাকাচুল, কালসিটে পড়া

চোখের কোল কেমন দাঁত বের করে হাসে।

একদিনের জন্য হলেও 

সমকামী জীবন কাটাবো।

একজন প্রেমিক না পাই, 

 প্রেমিকা তো পাবো।

          ………………….. 


রিদম

সর্বাণী ঘড়াই












ভালোবাসতে হলে বুকের ভেতর এক কালো মেঘ

মুক্ত নীল আকাশ হতে হয়

কখনো নিজেকে গোধুলির সূর্য হতে হয় আবার কখনো  ঝমঝম বৃষ্টির মতো ঝরে পড়তে হয় প্রেমিকের শরীরে 

ভালবাসতে গেলে নিজেকে ভাবো এক অপেক্ষার গাছ।

নিজে গাছ হতে না পারলে অন্যকে ছায়া দেবে কি করে

ভালবাসতে গেলে শিল্পী হতে হয়,সেই শিল্পীসত্তার স্বাদ বিলিয়ে দেবে প্রেমিকের ভেতর

নিপুন হাতে গড়া অন্তর্মিল সম্পর্কে ধীরে ধীরে জন্ম নেবে এক ঐশ্বরীয় প্রেম।

                    ……………… 


আতর

নিবেদিতা নাগ মজুমদার












তোমার মুখে যে সূর্যাস্তের রঙ,

আলোআঁধারিয়া আসা যাওয়া তোমার


তেমনি আমার বুকে।


যে আঁধারে পুড়বো বলে

প্রতি বার জ্বলে উঠি আগুন,


গুহায় যেমন জ্বালানো থাকে

সেসব সন্ধ্যার মায়ায়।


ভাবি লিখব সেইসব

কি চরম সুখ খুঁজে চলেছি-


তোমাকেও পুড়িয়ে দিয়ে যায়

সুখের আতর...

          ………………… 


প্রেম ও অমরতা  ২ 

মোনালিসা চক্রবর্তী 












ঠোঁটের ওপর ঠোঁট ছোঁয়ালেই 

তুমি আমার আমিও।

ফের যদি পেতে ইচ্ছে হয় কার কাছে যাবো ? 

কলের গানের মত গড়িয়ে জাপটে যাচ্ছি শীতে 

মেঘের ভিতর কত অফুরন্ত জলের নগ্নতা 

সেও মানসিক নজরবন্দির জন্ম জন্মান্তর ।


অন্তর্বাস খুলিনি তবু -

গভীরে ডুবিয়ে যদি ডাকো 

বলে ওঠো ওই তো কুসুম! 


ওসব বুঝিনি বুঝি সৌরচিহ্ন 

দিগদিগান্তের রাজাধিরাজ কেবল তুমি!

             ……………… 


জল অনেকদূর গড়িয়েছে

লিপি সেনগুপ্ত 












দু'হাতের পাতায় মেঘ 

ঘন মেঘ


বিদ্যুতের আলো চোখে পড়তেই

মেঘ ঝরে পড়ল ধানক্ষেতে

 তখন শূন্য হাত

দৃষ্টিও অস্পষ্ট,তবু 


আলপথে আমাকে একা দেখে

এগিয়ে এসেছে ছেলে

যার শরীরে রোদের কুচি

হাতে পাকা ধানের ছড়া আর

বুকে নীল নদী

সে বলেছে, মেঘ এনে দেবে

দেবে হাত ভরে


ধানক্ষেতের বিছানায় জল চিকচিক


তারপর জল অনেকদূর গড়িয়েছে .....

             ……………….. 


এ দেহনৌকা নীরে

সহেলী জানাপাল












শীতের কুহেলী কুঁয়াশা ছিঁড়ে  

দোচালা গেরস্থালী তালা খুলে 

বসন্ত এসে পড়ে ষড়রিপু ছুঁয়ে 

সাত পুরুষের কোকিল ডেকে ওঠে

জরা,ব্যাধি উবে যায়  

উচ্ছল এক নদীপাড়

ঝুঁকে পড়া রসময় খেঁজুরের ক্ষতবুকে

পূর্ণ অবয়বে একান্তে ধারা বয়ে যায়

অনাবিল অমলিন আনন্দমঠে।

ভুবন, শ্যামল, শোভন সাথে হেঁটে যায়  শৈশব-কৈশোর;

ধান,গম, তিল, আর সূর্মমুখীর 

শরীর ঘেঁসে ঘেঁসে 

শান বাঁধা কালো দীঘির ঘাট 

কী রূপ, কী সুখ ও কালা ঠোঁটে  

বিভোর  সঙ্গমে অবাঞ্ছিত 

অপরিণত প্রেম।

মন রে, 

তুই খানিক বেড়া দিলে

বেহাল হতো না এ দেহনৌকা নীরে

এ মন অতল গভীরে  !

             …………………. 


সেই চোখ 

সোনালী জানা 












হঠাৎ করেই কিন্তু এমনটা হয় 

জনঅরণ্যের মাঝে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়ায়

অসম্ভব দীপ্ত দুটি বাতি চোখ 

যেন আমার জন্যই সে এসেছে অনেকক্ষণ। 


আকাশভরা সরল হাসিতে কী যে বলেছিলো?

সমুদ্রের ঢেউ তখন আছড়ে পড়েছিলো। 


সেই সাহসী চোখের অন্দরে 

গভীর আরও গভীর এক বন্দরে

ভালোবাসার পলি ভরিয়ে  

একটা বাগান বানালাম চমৎকার।


ফুলের আলিঙ্গনে ভরে উঠলো আকাশ

প্রজাপতির ডানা জুড়ে সোহাগী সুবাস। 

  

প্রতিটি পাখি যখন প্রেমের গান গায়

প্রতিটি জলরাশি তখন দুচোখ ভাসায়।


তবুও সেই আশ্চর্য চোখ জানতো 

সুখের চেয়ে দুঃখ কতো দামি। 


সেই চোখ শুধু মুহূর্তের মর্মর নিশান নয়

সে লিখে চলে আমার সহজ জীবন প্রত্যয়!

               ……………… 


আগুনখেলা

মৃত্তিকা মুখোপাধ্যায়












তার কাছেই প্রথম

আগুন চেনা আমার-

তার রংমশালেই দীপাবলির শুরু,

সেই খোলা চুল আর

সালোয়ারের দিনে

একগোছা তারাবাতি সে জ্বেলে দিয়েছিল

বুকের মাঝখানে,

সেই থেকে হাউইয়ের মতো

উড়ছে,পুড়ছে মন.....

পাগলের মতো শুধু খুঁজে চলেছি

তুবড়ি নয়,চরকি নয়,

আলোর চেয়েও প্রিয় 

সেই আলোর কারিগর আর

তার কাছে বন্ধক রাখা 

সেই আগুনখেলার দিনগুলো

           ……………….. 


সর্ষেরঙা ঘোর

তাহমিনা শিল্পী












বুঝলি ওরে ইন্দু,নিন্দুকের গাল উপেক্ষা করেও

তোর পায়ের ওই উদাস মলে মেখে দিয়েছি

ভালোবাসার শিশিরবিন্দু।


রামধনু রঙা শাড়ির জমিন,আঁচল অগোছালো

মিষ্টি ভীষণ মেয়েটি তুই,যতই হোস না কালো।


মেঘকালো চুল যে তোর,চোখ দুটো যে সমুদ্দুর

হাঁটবো দুজন একই সাথে,সেই পথটা কতদূর?


আকাশের মত মনটা উদার,দৃষ্টি ভারী মায়াবী

পাশে এসে বসলি যখন,বলিসনি তো পালাবি!


ডালিম রঙা তোর গালেতে

সবে মাত্র ছুঁয়ে দিলাম সর্ষেরঙা ঘোর

এখনি কেন তবে ফেরার তাড়া তোর?

       ………………… 


সুখ

বর্ণালী ভুঁইয়া



  









আবেগী চাঁদটা গভীরতায় ডুবে যাচ্ছে ক্রমশ

মনে হল পুরো আকাশটার গভীর অসুখ,

নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে মন থেকে দেহে...


একটা মাটি রঙের টিকটিকি দেওয়ালের এপাশ থেকে ওপাশ হেঁটেই চলেছে,

মাঝে মাঝে টিকটিক আওয়াজে মনের ঘোর কেটে আবার চাঁদের দিকে তাকাতেই অস্তগামী চাঁদ গভীর অসুখে মৃত।


আকাশটা এখনো অনাকাঙ্খিত সুখ নিয়ে পড়ে আছে!

                       ………………......


ফেরা

অঙ্কিতা সেনাপতি












সব প্রেমিক বাড়ি ফিরে আসেনা,

কেউ কেউ ঝাঁপ দেয় জলে...

ভাসতে ভাসতে ডুবতে ডুবতে শেষবারের মতো আর্জি জানায় ভালোবাসার।

যে চোখে এত আকুলতা,সে চোখে মৃত্যু মেশে হঠাৎ।

সব প্রেম হাসিতে গিয়ে মেলেনা,

কিছু প্রেমের গায়ে লেগে থাকে বিষাদ।

যে প্রেমিক একদিন প্রেমিকার শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে কথা দিয়েছিল আজীবনের,

যে প্রেমিকা একদিন প্রেমিকের জ্বরে পুড়ে যাওয়া কপালে চুমু খেয়ে বলেছিল "ভালোবাসি",

তারা কেউ বেঁচে নেই আজ।

তারা মরে গেছে রোজ তিলে তিলে।

বেঁচে আছে ওরা একবুক স্মৃতি নিয়ে হয়তো...

ভুলে গেছে কিভাবে বাসতে হয় ভালো।

জলে ভেসে ওঠে প্রেমিকার লাল শাড়ি,

তাতে বুঝি লেগে আছে সোহাগ,নাকি রক্ত!

সব প্রেমিকা বাড়ি ফিরে আসেনা,

কেউ কেউ ভালোবেসে মরে...

মরতে মরতে বাঁচতে বাঁচতে শেষবারের মতো বলে যায় "ভালো থেকো" ...

যে চোখ আমি দেখছি আয়নায়,সে চোখে কি কোনোদিন তুমি লেগেছিলে?

                …………………. 


প্রেম

আভা সরকার মন্ডল











ফেটে পড়া ঠোঁটের হাসিতে 

অবারিত প্রশ্রয়

বাঁকানো ভুরুর ধনুকে লেখা 

বিজেতার উপাখ্যান


পেলব ওই চোখের পাতায় মাখা

হাতছানির গোধুলী রঙ


দৃষ্টির  দূরন্ত আহ্বানে

ঝেঁপে ফোটা অজস্র পদ্মকুঁড়ি


 ঈশারায়  রেখে যাওয়া পদচিহ্নে 

অবগাহনের নিমন্ত্রণ 


প্রতিটি বিভঙ্গের আকর্ষণী আকূলতা

খুলে দেয় দখিনের জানালা

বয়ে আনে নিশ্চয়তার রোদেলা উম....


বশীভূত হতে চেয়ে

হারাতে নেই এমন প্রেম --

বরং বিজয়ী হোক সে আজন্ম বিরহে।।

              ……………….. 


তরঙ্গ থেকে উঠে আসা শব্দগুচ্ছ  

রেহানা বীথি 












মাঝে মাঝে বড় মরণের সাধ জাগে  

যদি মৃত্যু এঁকে দেয় চুম্বন চোখের পাতায় 

জানি, আমি অমরত্ব কেড়ে নিতে পারবো 


স্বর্গ থেকে নেমে আসা রেশমী মেঘে 

কিংবা হীরকদ্যুতি ময়ূরবাহনে নয়  

তোমার পায়ের পাতায় ভর করে

যমুনার গোলাপি জলে হেঁটে বেড়াবো


ওপারের লেবুপাতা গ্রামে 

নিভে যাওয়া চাঁদের আলোয় 

শহরের সব পাখিদের ডেকে নিয়ে বলবো 

আলো জ্বালো, আলো জ্বালো,  আর

প্রণয়ের শব্দ দিয়ে বেঁধে ফেলো 

অমরত্বের গান

        …………………. 


জলফড়িং

কবি মিশ্র












আজ আমি তোকে পড়ছিলাম

পৃষ্ঠা ওল্টাতে ওল্টাতে খুঁজে পেলাম

 কিছু রাংতা মোড়া ভালোবাসা...


অবাক হয়ে তাকালো চাতক

জল না মেঘ, কোনটা চাইবে..

ব্যাঙের ও কোন তাড়া নেই..

দুপুরের ঝিমধরা কান্নায় 

একনাগাড়ে ডাকতে থাকে ডাহুক...


পৃষ্ঠা ওল্টাতে ওল্টাতে পড়তে থাকা তুই

হঠাৎ জলফড়িং হয়ে হারিয়ে গেলি

স্মৃতির আনাচে কানাচে জমতে থাকা মেদ

জোনাকির স্পর্শে গলতে থাকে...


কিছু মুক্তো আজও জমা আছে

মৃত শামুকের বুকে...

              ………………. 


পৌষের বেলা

মৌমিতা দাস 












দিগন্ত জুড়ে বাঁধানো জীবন সারি।

আমরা দুজন একটা গল্প লেখার

আশায় আছি বিগত জন্ম থেকে,

চোখ খুঁজে নেবো আগামী জন্ম দেখার।


কতদিন কোনো প্রেমের গল্প  লিখতে

কলম ধরো নি অবকাশ নেই বলে,

বিপ্লব বুঝি কেবল পতাকা মিছিল! 

অনেক আগুন ভীষন গোপনে জ্বলে।


ছাতিম শুকায় নভেম্বরের শীতে,

আগুন খুঁজে শুকনো পাতার স্তূপ।

আমিও খুঁজি তোমার বারান্দায়,

আগুন হাতে নীল পাঞ্জাবি বুক।


হতাশ হতে কার আর ভালো লাগে।

সুখের দোকানে মস্ত রকম ভিড়।

আমরা দুজন পরের জন্মে ঠিক

একটা স্বপ্নে একসাথে আছি ঠিক।

            ………………. 


ঘুম

মঞ্জীর বাগ












তুমি ঘুমিয়ে পড়লে আমার ভিতর

নদীর ভেতর থেকে এক দল হরিণ ছুটে আসছে 

নদীর ধারের সর্ষে ক্ষেত হইচই  করে উঠল

ওরা কখন হরিণের ছুটে আসা দেখে নি

হরিণের হাসি মুখের পেছনে খাবলানো মাংস

আপন মাসে হরিণা বৈরী।মাংস সুস্বাদু বলে

খাওয়াই নিয়ম। খাওয়া দাওয়ার পর তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। আমার সাথে ভুট্টা ক্ষেতের যোনী ছেঁড়া মেয়েটির কোন কি তফাৎ আছে?দুটোই মাংস ছেঁড়া আর খাওয়ার গল্প

নিজেকে পৃথিবীর মতো মনে হয় আমার

কত কিছু সয়ে যায়....

আমি তোমাকে ধারণ করি।। তোমাকই জন্ম দিই আবার…

            ……………………. 


ছলাকলা 

পুষ্প সাঁতরা












মুহূর্তের ময়নাতদন্তে 

জেনে গেছি রক্ত সংবহন 

শব্দাবলী ঝরনার কলস্বর 

অন্ধকারে একফালি চাঁদ 

শীতেও সপসপে ভিজে 

দুজনেই বৃষ্টি 

রাত চেখে চেখে 

শীতল আর উষ্ণতাকে মেখে নিই ওষ্ঠে 

সমর্পণে খাজুরাহো মাধুর্যকলা। 

             ………………… 


প্রাচীন মানব

সোমা প্রধান












শেষ ট্রেন এসে থামলো যে স্টেশনে 

সেখানেই দেখা হল আমাদের।

সমৃদ্ধ বৃক্ষের শাখায় শাখায় লাফ দিয়ে

 তুমি এসে দাঁড়ালে আমার সামনে। 

পাতায় পাতায় সেলাই বুনলো বাতাস... 

তোমায় জড়িয়ে ধরলাম,

 তারপর একটা একটা পালক খসে পড়লো।

আমরা আনন্দে নাচতে লাগলাম।

একে একে সব পাতা ঝরে গেল...

বৃক্ষের কোটরে এসে বাসা বাঁধি,

 সম্বল শুধু উষ্ণতা। 

পৃথিবীর সমস্ত স্মৃতি শীতলায়নে ডুব দিলে আমরাও ছিটকে যাই দুদিকে...

হাত বাড়িয়ে ধরতে চাই হাতকে...

মাঝখানে এক সমুদ্র দূরত্ব।


এর থেকে চুপ থাকা ভালো।

প্রাচীন মানব, বুকের ক্ষতে

 গুটিশুটি তোমার আমার ইচ্ছেরা।

                ……………… 


গোলাপ এত অপছন্দ তোমার?'

জারিফা জাহান












সুমিষ্ট গন্ধ আর প্রতুল রঙের মোহে উচ্চকিত হয় সে জানি। আমিও ধাবিত ছিলাম এযাবৎ। কুশীলবগুণে চেষ্টা করেছি গোলাপ হবার, এ কথা মিথ্যেও নয়। তবে সেইসব হাতে সুসজ্জিত হয়েছি, যারা ছিঁড়ে ফেলতে জানে। ছুঁড়ে ফেলতেও। 


'তুমি কি বরাবর মিতভাষী ও কাষ্ঠের ন্যায়?'


সুসজ্জিত গোল টেবিলে আহারকালে, গল্পোদ‍্যত দিদাকে থামিয়ে দাদু বলেছিলেন, 'গ্রাসের আগে এত কথায় উপরওয়ালা না খুশ হন।' নবী স্বয়ং রুকুশব্দ বহু রেখেছেন বন্ধুবর্গে, এ আহারকালেই; তথাপি সমূহ ধর্মগল্পে মিশে থাকে মিথ্যে-ঘুঙুর। দিদা ও মা থেকে শিখেছি তাই, নারীযোগে বন্ধমুখ বাঁচবার আশ্রয়।


'ভালবাসার কথায় এমন উদাসীন?'


আপাতত অভিযোগে চন্দ্রাহত ডালপালা দেখ। গভীরে কীই বা মাটি, কীই বা জল, বৃক্ষনিচে শয্যাবন্দি কতিপয় ঘুণ। সম্পর্ক ঐরূপ গাছ, জেনো। ভালবাসা নাকি অভ্যস্ত ভয়;  দুইই তফাৎহীন প্রতিফলিত। এ দোলাচলে তাই দূরে থাকি। দূরে থাকি।


'তবে, তপস্বিতা?'


অতিথি বলো বরং। দূরত্ব বেশি এত, বুঝিনি কবে ছিলে দুয়ারের পারে। মিথ্যে পেতে বসি। প্রশস্তি, সুসজ্জিত গ্যাসবেলুন, এস অতিকায় কুমীররূপীনি। অপেক্ষা এখন উড়বার। হাত বাড়িয়েছ, ভাল। পতন অনিবার্য জেনেও বেজে ওঠে শাঁখের করাত।

                 ………………… 



সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - লিপি সেনগুপ্ত

ঠিকানা - সুরতপুর, হরিরামপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614








1 comment:

  1. ভিন্ন স্বাদের প্রেমের কবিতাগুলি মন ছুঁয়ে গেল।

    ReplyDelete

অমৃত মাইতি এর গদ্য // ই-কোরাস ১০৮

  আমি এক নদী অমৃত মাইতি আমি এক আঁকাবাঁকা নদী। জন্মের পর থেকেই শুধু বাধা বাধা আর  বাধা। বাধার পাহাড় বেরিয়ে আমি কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি মোহনার ...