আভা সরকার মণ্ডল এর কবিতা
১.
মধুখোর
কিছু খুচরো বোঝাপড়ায় নিয়ন্ত্রিত হয়
দৈনন্দিন আলাপচারিতা।
টিকে থাকা ও টিকিয়ে রাখার তাগিদ
খুঁজে চলে প্রতিষেধক।
পিছু টানের বাহানায়
পড়ে আছে যে মৌচাকের কঙ্কাল
সেখানে শুধুই শূন্য কুঠুরি
কবেই উড়ে গেছে মধুখোর !!
................
ঈশ্বর
আজকাল বিষণ্নতা শব্দটা
ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে কবিতার খাতা
যুগ যুগ ধরে মমি হয়ে পড়ে থাকা,
কাঁচ কফিনের বন্দিত্ব
অস্বীকার করে, রাজত্বের সম্প্রসারন
করে চলেছে পৃথিবীতে।
দিনের দৈর্ঘ্য কমে আসছে ক্রমাগত
রাত পাখিরাও তাই
ঘুমোতে চেয়ে করেছে যুদ্ধ ঘোষণা ।
গবেষণাগারের ঢাকনা ছিঁড়ে
পালিয়ে আসছে হাইব্রিড কীটপতঙ্গ।
অচেনা সেই চরিত্রের সাথে
মহাপ্রলয়ও এই সুযোগে
খেলছে ছোঁয়াছুঁয়ি।
শব্দরা পড়িমরি খুঁজে চলছে সমাধান
সাথে চলছে সভাগৃহ নিচ্ছিদ্র করার প্রস্তুতিও ।
এরই মধ্যে নানা ওজনের ঘন্টাধ্বনির
ঠোকাঠুকি তে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলতা,
আড়াল থেকে ঈশ্বর "জাস্ট ওয়েট, এন্ড ওয়াচ "
খেলায় মগ্ন....
....................
৩.
পুনঃ
আমি জল রঙা শাড়িতে
আধো ঘুমে বুনে রাখি শীতলপাটি
চিঠির শেষে পুনঃ বলে
লিখেও দেই সে কথা।
আসলে গ্রহ নক্ষত্র গুলো
চিরকালই নিরক্ষর এবং গোঁয়ার।
অনুচ্চারিত বাসনা তাই, বর পেলে
যেচে নেয় পুনর্জন্ম ।
লাভ কি?
জন্ম জন্মান্তরেও গ্রহ-নক্ষত্রের দ্বারাই
আবর্তিত হবে পৃথিবী।।
...................
৪.
অর্বাচীন
মেনে চলা হয়নি সঞ্চয় সমীকরণ
দু'হাতের মুঠোয় শুধুই অপচয়ের চিহ্ন,
প্রতিশ্রুতি রক্ষার দায়ভার
বহন করেনি কেউ।
অস্বীকারের ঘোলা জলে
ঝাঁপিয়ে চলেছে মাছ ধরার চেষ্টা।
তবুও লক্ষণ গণ্ডি
পার করেনি সীমারেখা...
লোভের পোশাক পরে যতই আসুক
কুল ভাঙ্গা ঢেউ,
অর্বাচীন বলে সহজেই তাকে
ফিরিয়েও দিয়েছে , কেউ কেউ।।
.............…..
৫.
পায়চারি
অযথা পায়চারি করেই কেটে যায়
সযতনে জমিয়ে রাখা অখন্ড অবসর।
অনুভূতি প্রগতিশীল হয়ে
বয়কট করেছে সমস্ত লৌকিকতা,
অলৌকিক হবার লোভে।।
...................
৬.
ঘূর্ণি
বুকের ভেতর তীব্র বেগে
ঘুরপাক খাওয়া ঘূর্ণিটাকে
বশে আনার চেষ্টাকে
রুখে দেয় অভিমান।
ওটা এখন সৃষ্টি সুখের উল্লাস
কিংবা ভয়ঙ্করী প্রলয়।।
.................
৭.
রাগ
সপ্তসুর বাঁধা ছিল তীব্র একাগ্রতায়
কোমল, নিষাদে হয়নি গরমিল,
আনমনে মেঘ রাগেই ভিজেছিল চুল
তবু সেই সুরে বৃষ্টি নয়
কান্না এলো....
দীপক রাগেও জ্বললো না
দুখ্ পোড়ানো আগুন ...
দুঃখ এলো স্বয়ং ।
আদৌ কি বৃষ্টি নামে অনুনয়ে ?
আকাঙ্ক্ষার তীব্রতায় গলে যায় পাথর?
অভিমানী হাত আবার টেনে নেয় তানপুরা
রাগ কে আনতে বাগে।
বৃষ্টি নামানোর আকাঙ্ক্ষায় যারা
মেঘমল্লার প্র্যাকটিস করে গেল আজীবন।
ক্লান্তি তাদের উপহার দিলো অবিশ্বাস।
ইতিহাস এখন বস্তুতঃই
কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।
পুড়ে যাওয়ার জন্য যখন
অপ্রয়োজনীয় হলো চিতার আগুন
বোঝা গেল,মেঘমল্লার নয়
দীপক রাগেই সেজেছিল ফাগুন।।
.................
৮.
ষোল আনা
শুধু দু'আনা জীবন 'শৈশব' নামে
সুখ বিলিয়ে যায়,
আর দু'আনা কৈশোরের চারিদিকে
বানায় সুখের ঘাঁটি।
যৌবন এসে প্রচ্ছদ পাল্টায় ঠিকই
তার বরাদ্দ চার আনা জীবন ---
লুটেপুটে খায় হর্ষ-বিষাদ।
রকমারি স্বাদ খুঁটে খুঁটে
জমিয়ে রাখে হৃদয় নামক পুঁটলি তে।
এবার তত্ত্বতালাশ ঘাটলে
কপাল থেকে যে দুঃখ প্রপাত নামে,
তাকে বুকে আগলে রাখে
আর চার আনা জীবন।
বাকি চার আনার নাম অপেক্ষা
সুদের... আসলের...
বীমা করে রাখা ফসলের।
সে অপেক্ষায় নালিশ থাকে না
থাকে অল্প সল্প আফসোস ।
শুরু থেকেই ঈশ্বর হতে চেয়ে
নাকানি চোবানি খায় যে খল নায়কেরা
তাদের কাছে জীবনের হিসেব থাকে না।
...................
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
তুলিতে - অভিষেক নন্দী
ঠিকানা - সুরতপুর, হরিরামপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর,পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
e-কোরাস ব্লগে কবিতা পড়লাম l ভালো লাগলো l আপনাদের পাতা সাজানো গোছানো l খুব ভালো লাগলো l লেখা পাঠাতে চাই l দয়া করে ইমেইল আইডি পাঠিয়ে বাধিত করবেন প্লিজ l
ReplyDeleteড. সেকেন্দার আলি সেখ
প্রিন্সিপাল : সুন্দরবন বি এড কলেজ
ইমেইল : alisekender1957@gmail.com
e-কোরাস ব্লগে কবিতা পড়লাম l ভালো লাগলো l আপনাদের পাতা সাজানো গোছানো l খুব ভালো লাগলো l লেখা পাঠাতে চাই l দয়া করে ইমেইল আইডি পাঠিয়ে বাধিত করবেন প্লিজ l
ReplyDeleteড. সেকেন্দার আলি সেখ
প্রিন্সিপাল : সুন্দরবন বি এড কলেজ
ইমেইল : alisekender1957@gmail.com