Sunday 10 March 2024

দুঃখানন্দ মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭১

 



দুঃখানন্দ মণ্ডল এর কবিতা

হে প্রেম


তুমি যাকে অপেক্ষা বলো

আমি তাকে অনুরাগ বলি।


তুমি যখন অনুরাগের মানে জানতে চাও

আমি প্রেমের কথা বলি।


তুমি প্রেমের মানে খোঁজও অনন্ত আকাশে

আমি তোমার তর্জনী ধরে বলি চলো।


 তুমি বলো তোমার হাতে উষ্ণতা আছে

আমি বলি তোমার চোখে রামধনু আঁকা।


তুমি দেখো রামধনুর মাঝে প্রেমের বৃষ্টিখেলা

আমি বলি খানিক পথ বাকি ঘর বাঁধার।


হে প্রেম ২


ফিরে আসা সহজ বলেই তুমি ফিরেছো

দূরত্ব ভেঙেছে সীমারেখা, থাক বাধা

তুমি যে কথা জানো আমিও তাই জানি

ফিরবে বলেই অপেক্ষা করি;  তুমি জানো সেকথা।


স্থির পাতের উপর চলন্ত রেলগাড়ী 

সম্পর্কের কথা ওরা বলে না; তবুও কি গভীরতা।

তুমি আটকে রেখেছো দূরত্বের পরিধি 

মনবিতান থাক মনের মধ্যে, 

একলা থাকা পথ নয়নজুলি পরে 

ছুঁতে চায় অদৃশ্য সম্পর্কের বন্ধনকে। 


হে প্রেম ৩


উঁচু ছাদগুলোর ভিড়ে সন্ধ্যা নামে

শুকিয়ে গেছে গোলাপ চারাটি ব্যালকনির কোণে


সন্ধ্যা ছিল, ছিল দক্ষিণের বাতাস, ছিল পূব আকাশে অন্ধকার 

আবছা হয়ে আছে স্মৃতিগুলো 

এখন ব্যালকনিতে দুটো চেয়ার থাকে না 


অন্ধকার গহ্বরে ডুবে আছে চাঁদ 

তুমি নিজ গরিমায় আলোকিত হতে চেয়েছিলে

পারোনি…


সন্ধ্যা নামলে 

এখনো মানুষটি একা পথ অতিক্রম করে;

একটি বটগাছ, একটি নদীর পাড়, একটি নির্জন  জনপদ…


হে প্রেম ৪


সন্ধ্যার অন্ধকার গায়ে মেখে ওরা ছুটছে

শেষ হয়ে যাওয়া আলোরা সাজিয়ে নিচ্ছে সন্ধ্যাবাতি

কারা যেন আহুতি দিয়ে গেছে আলোর কাছে 

মানুষটি একা। তবুও প্রদীপ জ্বলে তুলসীতলায়।


এখনো পায়ের ছাপ পড়ে আছে। ফিরেনি আত্মজ

বাবা, ঠাকুরদার বাঁধানো দলিজে বসে আছে

কারা যেন নদীঘাটে অশৌচ ধুয়ে নিচ্ছে 

ভিজে হাত থেকে মুছে যাচ্ছে রক্তপাত। 


গাঢ় অন্ধকার, পথের বাঁক খুঁজে পায়নি পিতৃত্ব

অথচ আলো ছুঁয়ে যায় নদীর বাঁক

এক জন মানুষ নদী দেখে, একজন মানুষ পথের বাঁকে 


একটি দেহ ভেসে যাচ্ছে। 

বাজনা নামা লেখা হচ্ছে একটি মানুষকে দেহতে রূপান্তরের জন্য। 


বাবা বসে আছে ঠাকুরদার বাঁধানো দলিজে…


হে প্রেম ৫


মেঘের মতো নিজেকে কখনও একা ভেবেছো?

ভাবোনি। এ কথা আমার নয়; এ ভাবনা তোমার উপস্থিতি। 


নদী তার মতোই বয়ে চলে। যেমন মেঘ…


একা হতে পারোনি বলেই এখনও বৃষ্টিতে ভিজে মন

কিংবা মনকে বেঁধে নাও ফেলে আসা স্মৃতিমনের কাছে।


আমি কবি হলাম। শোনাবো কবিতা পাড়ভাঙা নদী পাড়ে

প্রশ্ন করো না; কবিতার আত্মজ নারীটির সম্পর্কে… 


হে প্রেম ৬


সকালের চা শেষ হয়ে এলে 

তোমার হোয়াটসঅ্যাপের ওয়ালে সকালের শুভেচ্ছা লিখে দেই

যেমন করে সাহিত্য উৎসব শেষ হলে শেষ ছবিটি রেখে দেই ফেসবুক ওয়ালে।

কারা যেমন বয়কট করেছিল সাহিত্য উৎসব!

অথচ কমেন্ট বক্সে 'সাহিত্যের জয় হোক' কথাটিও লিখেছেন। 

সব কিছুই এলোমেলো; চা শেষ হওয়া, উৎসব শেষ হওয়া কিংবা বয়কট 

আসলে শেষ থেকে শুরু করলে শুরুটা হয় শেষ। 

তুমি ফেসবুকে ডুবে গিয়ে নিশাচর হয়ে কমেন্ট বিতর্কে জড়িয়ে পড়ো

আমি গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে আছি, পুব দিকের জানালাটা খোলা।

গুড নাইট জানাও আমার হোয়াটসঅ্যাপের ওয়ালে…


পরদিন সকালে তোমার গুড নাইটের রেস রেখে আমি পাঠাই সুপ্রভাত। 

...........................................



সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

No comments:

Post a Comment

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা // ই-কোরাস ২০

  পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা ২০ রূপছায়া টকিজ – বালিচক শ্রীজিৎ জানা সিনেমাহলে প্রবেশের আগে, এক প্রস্থ অন্য কথা হোক। আরে মশাই!...