Saturday, 2 December 2023

নিমাই জানা র কবিতা // ই-কোরাস ১৫৭


 

নিমাই জানা র কবিতা

জরা ও অ্যালজোলামের রোহিত নাভির অপরা দৃশ্য


জরা নিয়ে বেরিয়ে এসেছি রোজ দুই বেলায়,  

০.২৫ ঘনত্বের অ্যালজোলাম খনিজ নাভির চার পাশে পিঁপড়ের মতো আমি চতুর্দশ শতাব্দীতে থাকা আদিম ঘনত্বে আঙ্গুল ডুবিয়ে রগরগে শ্মশান ঘুম থেকে উঠে এসে লাল আগুনের মতো ঝুলে থাকা গর্ভাশয়হীন আঙ্গুরের কাছে আত্মসমর্পণ করে দেখেছি জ্বর ছাড়া পৃথিবীতে আদিম অসুখ নেই। খুব ভোর বেলায় এম্বুলেন্স একটা মৃতদেহ বইছে

পৃথিবীর মতো আদিম কোন বস্ত্রালয় নেই যেখানে থেকে উলঙ্গ সব পোশাকের দোকানে রেখে যেতে হয় অতৃপ্ত নক্ষত্রদের খোলস ছাড়ানো বিধেয় পোশাক , প্রতিটি পোশাকে সূচিছিদ্র গন্ধ থাকে  , শূণ্য মানুষদের কাটা আঙুলের গন্ধ থাকে আর কিছু নন ভ্যালিডেটেড এক্সপায়ারি নোঙর থাকে , মাঝরাতে সাহস করে মৃত মানুষটির কাছে গিয়ে তার ঠোঁটের ভেতর থেকে নিয়ে আসে না গতরাতের শেষ খাদ্য কণিকা সে তখন বীভৎস্য আগুনের আত্মা খেতে চায়। আমি নিজের হৃদস্পন্দন লুকিয়ে রাখি, উচ্চ রক্তচাপ লুকিয়ে রাখি এ পৃথিবীর একা একা সংকল্প রোহিত নাভির নবীনতম আত্মাটিকে উৎসর্গ করার জন্য 

আগুন জ্বালো,  আগুন জ্বালো রুদ্র , আগুন জ্বালো ঋষি , আগুন জ্বালো মরুৎ সাদা ছাই গুলো নিজেকে বায়বীয় ভক্ষণ করে বিছিয়ে দেবো এ জন্মের অতৃপ্ত আত্মাদের সমাঙ্গ বৃশ্চিক বিছানার উপর , তখন একটা মৃতদেহ পাখনা গজিয়ে উড়ে যাচ্ছে আর এক দুই গোলকের দিকে সারারাত ঈশ্বর বিরজায় নাচলেন অনন্ত সখীদের সাথে , আমি অনিমা ভঙ্গিমায় শুয়ে আছি ধূসর জরায়ু কেন্দ্রের দিকে ক্ষত্রিয় মুখ বের করে , আমি ঈশ্বরের আত্মহত্যার দৃশ্য দেখেছি দিবস ভাগের মন্থন উপেক্ষা করে


পোড়া মাংসের কসাইখানা ও কার্বনেটেড শ্মশানের স্বৈরতন্ত্র


আমি জনিতৃ পিতার মতো একটা মৃতদেহের উন্নত বায়বীয় উলঙ্গ শ্মশান পথের কাছে অঙ্কুরিত দানা ছড়িয়ে দিচ্ছি । আমার সব উৎসারিত কুলকুণ্ডলিনী থেকে। 

সকলেই ব্রহ্মজ্যোতির মতো একটা ঘৃণালয় বিভূতি ও সুড়ঙ্গ থেকে উঠে আসে , আপনার সঙ্গম নেই এক একটা ঘোর স্বৈরতন্ত্র ছাড়া ,  ছায়ার গণিত , অদ্ভুত দৃশ্য , প্রাণায়াম যোগ নিজেকে চতুর্দশ বারের জন্য প্রাণায়ামের আগুনে নিক্ষেপ করে ধবল ছাই হতে চাইছি

ডিভোর্সী ধন্বন্তরীরা আগুনের প্রহেলিকা থেকে উঠে এসে আমার সব ক্ষত সারিয়ে দিচ্ছে আমি মাংস পোড়ার মৃদু স্বাদ পাচ্ছি একটা কসাইখানার উল্টোদিকের মাছেদের জরায়ু চিবোতে চিবোতে 

দুই হাতে ঔ চিহ্নের মতো পরিফেরাল মৃত মানুষদের মতো তুমি স্বপ্ন দ্যাখো , একটা ঘোরতন্ত্রে মায়াবী জগতে বিচরণ করতেই তরল পা গুলো ভেসে ওঠে ক্ষণিক নর্দমায় , 

আমাদের ইথিলিন ভর্তি হাইড্রাইড ও কার্বনেটেড আয়ু শেষ হয়ে যায় কিভাবে দৈবাৎ প্রেতশিলা নাচে আমার জন্য 

ঋষিরা মুখ থেকে মৃদু শব্দ করেন সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি শ্মশানের চৌকাঠে কাঁপতে থাকে নিজের শরীর চলতে থাকে মাথার ভেতরের বিক্ষিপ্ত নিদ্রাময় জগত

আমি স্বপ্নের ঘোরে দহন দেখি , দহন পিণ্ড দেখি , দেখি ছায়াকে জড়িয়ে ধরি বারবার অঙ্কুরিত পঞ্চশস্যের কাছে গিয়ে দীর্ঘ জিব বের করে চেটে চেটে খায় এই জীবনের অনন্ত ভাতের অংকুর

আমরা তখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মতো একজন যুদ্ধক্ষেত্রের রজনীগন্ধার উপর নিজেদের আয়ু ছড়িয়ে এ জন্মের মৃত মানুষদের স্পাইরাল ধুপের ধোঁয়ায় সংকল্পিত আত্মার কৃষিত যৌন গন্ধ দরজার কাছে রেখে নিমগ্ন হরিণীর নাভিটিকে পৃথিবীর অন্যতম শূন্য কক্ষে ছড়িয়ে শরীরের লোমশ পদার্থ গুলোতে ঢুকিয়ে রাখি , সাদা রঙের ঘোড়াটি ১৫ দিনের অশৌচ চাঁদের পরা সহবাস ত্যাগ করেছে 


নীল মৃত্যুর দোকানদার ও ক্ষত্রিয় যমের নৃশংস হত্যাদৃশ্য


দিব্য তরঙ্গের মতো ছায়া রোদ , ঈশ্বর খুঁজি,  এখানে ভয়ংকর রুদ্রের মতো নিজের ছায়াকে হত্যা করে রাত্রির মতো মায়া ঘরে শুয়ে আছে শুকনো পাতার ঈশ্বর

উচ্চস্বরে বয়ে যায় নদী আমাদেরও একটা সঙ্গম দৃশ্য ছিল আমি চাঁদ দেখি মৃত মানুষদের কষ্টের উপাধিটুকু নদীটির পাশে গিয়ে নৃতত্ত্ব আলনা খুলে দেখায় এ জন্মের সব পরা ও প্রাকৃতিক সাংখ্যযোগের বিবস্বান মুহূর্ত , মৃতদেহ শুইয়ে রাখলাম ঘাটে

নির্ণীয়মান মন্থন ছেড়ে মৃত মা ছেলের সনাতন কক্ষে অনন্ত রক্তবিন্দুর যুদ্ধক্ষেত্রে শিশু নামিয়ে রাখল একটা অপরাধ তন্ত্রীর তড়িদাহিত বাদ্যযন্ত্রের মতো ।

সেরিব্রাল থ্রম্বাস , মৃত্যুকে সাথে নিয়ে সাদা কাপড় জড়িয়ে যমের মতো একটা মৃত্যুকে কলকাতা থেকে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে আসছে নাড়ুগোপাল মাইতি , তোমার দুই হাতে মানুষের মতো কিছু অদৃশ্য অবৈধ মাংস ব্যবসায়ীরা আর কোনদিন পাথরের খাদান থেকে তুলে আনতে পারবে না লাল কাঁকড়ার বিষাক্ত মদ। 

আমি সারা শরীরে কিছু এই জন্মের পরা চরুরস মেখে নিচ্ছি , দুর্গন্ধ মুখে , জমে থাকা পচা জিবের দুর্গন্ধ এ জন্ম শুধু ক্ষত্রিয় বিবিধ মাংসাশী দোকানদারের ,  

মাছেরা উড়ছে , আমি ভাঙ্গা তরোয়াল রাখি আগুন পোড়াই নিজের দেয়ালের দিকে মুখ করে ঘুমাই,  চিৎকার করলে নিজেকেই ডাকি আর কর্মঠ করে তাকিয়ে থাকি হাইফোল্টেজ মেটাল আলোর দিকে 

আমি কোন রকমে একটা নেশাখোর মানুষের টালমাটাল পথে হাঁটতে হাঁটতে অহেতুক শ্মশান থেকে ঘুরে আসি,  দই খাই কাঁচা কাঠের জমা দেখি সাদা সাদা মানুষদের উৎসব মুখ দেখিয়ে বীভৎস ধুপের গন্ধের বৃত্তাকার ধোঁয়া দেখি , ওষুধ দোকানে যাই অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন ফেরত দিয়ে অদৃশ্য বুকের যন্ত্রণার ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আর একটা মৃত্যুর ভেতর আমার পিঠে কেউ উর্বর নাঙ্গল চালাচ্ছে

                ……………………. 


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ - অভিরুদ্র জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

No comments:

Post a Comment

অমৃত মাইতি এর গদ্য // ই-কোরাস ১০৮

  আমি এক নদী অমৃত মাইতি আমি এক আঁকাবাঁকা নদী। জন্মের পর থেকেই শুধু বাধা বাধা আর  বাধা। বাধার পাহাড় বেরিয়ে আমি কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি মোহনার ...