মানসী সাহু র কবিতা
১.
তেপান্তরের মাঠ
সাঁকো পেরিয়ে স্যাঁতস্যাঁতে লাইটপোষ্টে
ঝুলছে বিশ্বাস
বিবর্ণ অপেক্ষায় নিরুত্তাপ
সন্ধ্যাকালীন হাট।
কুয়াশা ভেজা ঘাসে হেঁটে যাচ্ছে
বিগত প্রেম ও প্রত্যয়।
প্রিয়তম নদী-
অনেক ব্যর্থতা পেরিয়ে
গভীর গোপন জলজ ইতিহাস
লিখেছো তুমি
চারিদিকে ছাই রঙা সকাল
নেই হলুদ পাতার ঘৃণা
ডেকে নিয়েছি
আমাদের একান্ত আজান।
২.
অবসর
পোড়ামাটি জানে ধ্বংসের দেশ
মৃত জনপদ ফসলের লোভে-
ঘুমন্ত মেয়েটিও রোপন গন্ধ ফেলে
জীবাশ্ম সরগম।
দ্রাবিড় দহন-
ভোজন গানের বিস্তৃতি ক্ষত
গন্তব্য বিমুখ শ্যাওলার স্বাদ
পরিত্যক্ত দালানে
শূন্যতা ফেরে ঘোর।
৩.
আদিম গন্ধ গ্রাম
আগুন ছিটানো চিরহরিৎ প্রেম
ঘাড় গুটিয়ে নিয়েছে পাহাড়ী খোলা
তবু রহস্য কুয়াশায় নিরুচ্চার
শব্দ গুঞ্জন
সংক্ষিপ্ত স্বীকারোক্তি,
ক্রমশ পিছতে পিছতে কিনারা ভাঙি দিন-রাত
বিলুপ্ত পাখির ঠোঁটে আদিম গন্ধ
নি:শর্ত নিশ্বাসে ক্রমশ বেড়ে ওঠে শীতজ্বর
৪.
যৌথ জন্মান্তর
শব্দ দ্রাঘিমায় যে নাম উল্লেখে
হতাশ পাখনায় মেলে দাও ব্যার্থ উড়ান
সেখানে কোনো উদ্বেগ নয়,আগ্রাসণ নয়,
একাধিপত্য নয়-তুমিই একান্ত বিজয়ী-
শুধু স্বমহিমায় হতে চাই লোহিত সাগর
ব্যুহ ভেদ করে চতুরঙ্গ সাথে
আশায় আমিও ধরি গান্ডীব
কোনো সংশয় নয়
অজ্ঞাতবাস কেনই বা শ্রেয়!
আছে অনন্ত প্রেম
আছে অখন্ড নিবেদন
নিশ্চিত রেখেছি তোমারই জন্য
কৌরব নয়, অর্জুন ভেবে
প্রতি ভোরে সাজিয়ে রাখি
কাঙ্খিত আয়ুধ
তবে আর দ্বিধা নয়, সংযম হোক
হোমাগ্নি ব্রতে যৌথ আহুতি।
৫.
জ্যোৎস্না - শ্রাবণ
নির্ঘুম দোরে চাঁদ
গল্প পালক
সে উঁকি দিলে-
শরীর জ্যোৎস্না রাত
নদীর শ্রাবণ এলে
পাখির ডানায় মেঘ- আশ্রয়
সমস্ত উজাড়
অজস্র দুপুর পড়ে
স্পন্দহীন
শিলাই ওপার।
…………….
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪
No comments:
Post a Comment