ডিজিটাল মাধ্যমে নির্মাণ করা বৈশাখ
আশিস মিশ্র
বৈশাখ থেকে বৈশাখী, এমন মেলবন্ধনে এতো বছর কাটিয়ে দেওয়ার স্মৃতি কম কিছু নয়। তা বলতে গেলে অনেক বড়ো গদ্য হয়ে যাবে। বলা যেতে পারে বৈশাখ এখন ডিজিটাল মাধ্যমে বন্দী। শৈশবের বৈশাখী সকালের মতো এখন আর মাঠে যাই না। অগ্নিকে আহ্বান করতেও আলস্য। নতুন পোশাক পরতেও অনিহা। আড্ডায় বসতেও ইচ্ছে করে না। তুলসীগাছে বসনঝারা দিতে মন চায় না। মনে হয় নির্জন এক কোণে বসে শুধু গান শুনি।
এই যে সকলের সঙ্গে থেকেও একা হয়ে থাকার বাসনা শুধু কি আমার? তা নয়, এমন অনেক বন্ধু তার একাকীত্ব অনুভব করেন এখন। তার মূল কারণ হলো ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রবেশ করে সবকিছুকে ভার্চুয়াল মনে করা। প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাওয়া। একটি যন্ত্রই যেন সব কিছু শুয়ে নিচ্ছে! তাই পয়লা বৈশাখের অনুভূতিগুলোও যান্ত্রিক কাঠামোয় বন্দী। নিজেকে নির্মাণ করার ইচ্ছেও মরে যাচ্ছে।
বাঙালির সেই বৈশাখ, দুপুরে দিগন্তে ঘন হয়ে আসা কালো মেঘ, গাছের নতুন পাতার ফাঁক দিয়ে ঝড়ো হাওয়া, আম কুড়োতে ছুটোছুটি, বৃষ্টির শিলা হাতে নিয়ে খেলা করা, প্রেমিকার হাত ধরে ছাদে দাঁড়ানো, বিকেলে নদী বা অরণ্যের গোপনে হারিয়ে যাওয়া -- কিংবা সেই কিশোরীর ডাকে গাছের ছায়ায় অপেক্ষা করা,এসব কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
এখন শুধু অস্তিত্বের অস্থিরতায় কোনো ভাবে দিনটুকু কাটিয়ে দেওয়া। শুধু তাই নয়,বৈশাখী আড্ডার মধ্যেও মহুয়ার জলে ভেসে যাওয়ার বাসনা -- আর সেলফিতে বন্দী হয়ে যাওয়া বৈশাখ ও বৈশাখী, কাফেতে চোখে চোখ রেখে কিছুটা সময়....
পুরাতন রীতিনীতি যেন অচল। তাই এই বৈশাখকে আমিও ডিজিটাল মাধ্যমে নির্মাণ করে চলেছি। এর থেকে বেরিয়ে আসতে আমিও অক্ষম!
………………….
সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল
সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা
প্রচ্ছদ - সৌতি বসাক
ঠিকানা -সুরতপুর, দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ ৭২১২১১
কথা - 9434453614
No comments:
Post a Comment