Saturday 20 April 2024

ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭৬

 



ইতি মণ্ডল এর কবিতা 

মগ্নতা


হিমেল কুয়াশা ভরা ভোর,

      আমার ছাদ বাগান।

শীত সকালের আদর,

             ওদের ঘ্রাণ।।


চন্দ্রমল্লিকা ,পিটুনিয়া ,গোলাপ

           বহুদিনের আলাপ ।

 আমার সাথে ওরা,

ওদের সাথে আমার প্রেমালাপ।।


লাল টুকটুক পয়েন্সটিয়া,

    নূতন পদার্পণ।

এক আলোকিত দর্পণ,

ওর সাথে নিবিড় আলাপন।।


একাকিনী ছাদ বাগানে…

কখনো কি দেখেছো রাত?

নিঝুম শহরের হৃদয়ে!

মাঘী পূর্ণিমার অমোঘ আলোয়!

কখনো কি পেতেছো কান?

নিদ্রাহীন শহরের গহীনে!

ধু ধু চরাচর…

আমারি  প্রতীক্ষায়!

আমি আলো আঁধারির মগ্নতায়…

চলি মৃগতৃষি্ঞকার  পথে…।।

  

ও বুদ্ধিজীবীরা শুনছেন?

ও বাবুমশাইরা শুনছেন?

ও বোবা মানুষেরা শুনছেন? 

      


নবারুণ


তোমার ছড়া বিষন্ন ঠাটে

কাঁসাই তটে হাঁটে,

আমার ছড়া তুফান তোলে                   

জলের ঘূর্ণিপাকে।

 

তোমার ছড়া শীতকাতুরে                  

হিমেল হাওয়ায় কাঁপে,

আমার ছড়া মেঘ সরিয়ে 

সূর্যটাকে মাপে।


তোমার ছড়া ঝুমুর ঝুমুর   

ঘুঙুর পায়ে নাচে,   

আমার ছড়া শব্দ খোঁজে                           

দাবানলের আঁচে ।


তোমার ছড়া পূর্ণিমা চাঁদ 

নিঝুম সাঁঝের বেলা,

আমার ছড়া ঝড়ের মাতন 

খেলে মরণ খেলা।


তোমার ছড়া টাপুর টুপুর                 

বিলম্বিত তান,

আমার ছড়া দৃপ্ত কণ্ঠে 

দিন বদলের গান।


 

দ্বন্দ্ব


হৃদয় গহীনে এক রাশ 

দুঃখ নিয়ে;

বিবেকের পাহাড় স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে।

সামনে উথাল পাথাল প্রেম

সমুদ্র সফেন।


ভালোবাসা বনাম প্রেম!!

চরম সত্য বনাম বিশ্বাস!!


সমুখপানে সময়ের অনন্ত প্রবাহ...

হৃদপিন্ডের ধুকপুক, তীব্র ফুঁসে ওঠা…

অধিকারের হুংকার,

নীরব কান্না ভেজা সংসার;

          বিষন্নতা!

নিরোর বেহালায় ঝরে পড়ে

গভীর সিম্পনি।

বুকে পলাশ রাঙা

বসন্তের প্রেম নিয়ে,

দোলা চলে বসে ভবের তরীতে

আবহমান কালের আদিমতায়…।।



নীড়


অভিমানে বুকের কালো মেঘ কাব্য হয়ে যায়,

খুবলে খুবলে খাওয়া মন উদ‍্‌‍ভ্রান্ত হয়ে দিক‍্ হারায়।


বসন্ত ফাগুয়ার দোলে, খোলে বদ্ধ দোর,

বাসর জাগা সোহাগ রাতে কাটবে প্রেমের ডোর।


লাল টুকটুক ভালোবাসা কৃষ্ণ চূড়ার থোকে,

প্রেম থৈ থৈ ভালোবাসা তোমার আমার বুকে।


পূর্ণিমা চাঁদ মোম জোছনায় থাকে সঙ্গোপনে,

দুটি হৃদয়ের প্রেমের ছটাকে মাখবো আলিঙ্গনে।


গুটি গুটি পায়ে মিলে যাবো দ্রুত সময়ের ভিড়ে,

অনুভবের অনুভূতিকে বাঁধবো দুজনে বাবুই'এর নীড়ে।




অনুভবে


শীতের সকাল…

কুয়াশা ঘন; মায়াবী বেহাগ

হিমেল হাওয়া

মন দিশেহারা…।


চলেছি…

নাগরিকতার কৃত্রিমতা ঝেড়ে;

আদিমতার ঘ্রাণ নিতে

নিজ আলয় ছেড়ে,

প্রকৃতি নিলয়ে।


পথ মাঝে…

এক পেয়াল

ধুমায়িত উষ্ণতা;

চোখের পাতা থমকে

সবুজায়নে।


আঁকাবাঁকা আলপথ

দুদিকে হলুদ বিতান

কলুষিত সমাজের বুক চিরে ঠিকরে!

একমুঠো; হিরণ্য রোদ্দুর…।

বহুত খুশি নিজের সাথে

আমার আমি।


সবুজের ঘেরাটোপ…

ছুঁয়ে থাকে পেলব;

কৃষক রমণীর স্পর্শ

মোহময়ী আবেশে…।


যেখানে নীরবতা সরব হয়

একান্ত অনুভবের পরম বৈভবে।।

.....................


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

Monday 15 April 2024

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা // ই-কোরাস ১৮

 




পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্ধ সিনেমাহলের কথা ১৮

আনন্দময়ী– খড়ার, ঘাটাল

শ্রীজিৎ জানা


শতাব্দী প্রাচীন পৌরসভা খড়ার। খড়ার পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১৮৮৮ সালে। ১৮৮৪ সালে তৎকালীন বেঙ্গল মিউনিসিপালিটি অ্যাক্টের ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী খড়ার পৌরসভা তার আয়ত্তাধীন রায়েরডাঙা,কৃষ্ণপুর,উদয়গঞ্জ এবং দলপতিপুর গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে খড়ার ছিল হুগলি জেলার অধীন। ১৮৭২ সালে খড়ার মেদিনীপুরের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রাচীন খড়ারের পরিচিতি তার ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্পের জন্য। সবেমাত্র স্বাধীন হয়েছে দেশ। বিজলীবাতির আলো তখনো সেভাবে পৌঁছায়নি খড়ার পৌর এলাকার সর্বত্র। ঠিক সেই সময়ে বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠল তিন নম্বর ওয়ার্ডের সিনেমাতলা। চারিদিকে যখন টিমটিম করে জ্বলছে কেরোসিনের আলো। ঠিক সেই সময় হাস্কিং মেশিনের ( জেনারেটর )  আলোয় ঝলমল করছে 'আনন্দময়ী' সিনেমাহল চত্বর। দুপুর থেকে রাত অব্দি গমগম করত সিনেমাতলা। 

প্রয়াত হরগোবিন্দ মুখার্জী ছিলেন পেশায় হাতুড়ে ডাক্তার। মুখার্জী পরিবার এলাকায় বেশ প্রভাবশালী ছিলেন।  শ্রী মুখার্জী ছিলেন রাশভারী মানুষ। ডানপন্থী রাজনীতি করতেন। এমনকি খড়ার পৌরসভার চেয়ারম্যানও হন। হঠাৎ ডাক্তারি ছেড়ে করলেন সিনেমাহল।

আনুমানিক পঞ্চাশের দশকের গোড়াতে তাঁর হাত ধরেই আনন্দময়ীর যাত্রা শুরু হয়। আনন্দময়ীর নামকরণ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ বলেন মুখার্জী পরিবারের কুলদেবী মা তারা আনন্দময়ীর নামে সিনেমাহলের নাম রাখা হয়। আবার অনেকে দাবী করেন হরগোবিন্দ বাবুর বড় মেয়ে আনন্দময়ীর নামে সিনেমাহলের নামকরণ করেন। নামে কী আসে যায় বলুন তো! আনন্দময়ী কয়েক দশক ধরে খড়ার সহ পার্শ্ববর্তী বিনোদন প্রিয় বাঙালিকে যে মাতিয়ে রেখেছিল,সেটাই আসল কথা।  প্রায় ছ'শ আসন বিশিষ্ট আনন্দময়ী প্রেক্ষাগৃহ। শুরুর দিকে ফ্রন্ট স্টলে থাকত কাঠের বেঞ্চ। টিকিট মূল্য ছিল ১৯ পয়সা। মিডিল স্টলে ছিল হাতলওয়ালা চেয়ার। টিকিট মূল্য ৪০ পয়সা। আর রেয়ার স্টলে ছিল হাতলওয়ালা স্টীলের চেয়ার। টিকিট মূল্য ছিল ৭৫ পয়সা। আনন্দময়ীর ব্যালকনি যেমন ছিল, সাথে দু'পাশে ছিল বক্স। সেখানে টিকিট মূল্য সেইসময় ছিল এক টাকা। শো টাইম ছিল দুটি, তিনটা এবং ছ'টা। খড়ার পৌরসভার বাসিন্দা শ্রী সুকুমার ঘোষ বলেন," আমাদের আনন্দ উপভোগের প্রাণকেন্দ্র ছিল ওই সিনেমাতলা। কৈশোর, যৌবনের অনেক সুখস্মৃতি জড়িয়ে আছে ওই আনন্দময়ীর সঙ্গে। তখন উপচে পড়ত দর্শক। টিকিট ব্ল্যাক হত। সামাজিক এবং ধর্মীয় ছবিগুলোতে ভীড় হত চোখে পড়ার মত।  সঙ্গম, টারজান, কিংকং প্রভৃতি ছবি মারত্মক চলে। ফুলেশ্বরী, সঙ্গম, প্রথম কদম ফুল সিনেমা বহুদিন ব্যাপী চলেছিল এই সিনেমাহলে"। আনন্দময়ীর ছবির প্রচারেও ছিল চমক। খড়ার নিবাসী কালিপদা হাজরা পিঠে প্লাকার্ড ঝুলিয়ে,হাতে টিনের চোঙা নিয়ে হেঁটে হেঁটে প্রচার করতেন। যাত্রার অভিনয়ের মতো করে বলতেন কথা। পথচলতি মানুষজন দাঁড়িয়েে শুনতেন তার হাঁকানোর কৌশল। স্টাফ ছিলেন ১০- ১২ জন। চারজন গেট কিপার। তিনজন টিকিট কাউন্টরে থাকতেন। ম্যানেজার ছিলেন খড়ারের অসিবত ঘোষ। চিফ অপারেটর ছিলেন খড়ারের বনমালী কর্মকার।  পরে হন তাঁর পুত্র বিশ্বজিৎ কর্মকার। সহযোগী অপারেটর ছিলেন পীযূষ ঘোষ। 

  সালটা ১৯৭১।  নকশালদের হাতে খুন হলেন হরগোবিন্দ মুখার্জী। সিনেমার লাস্ট শো শেষে, ওই সিনেমাহলের সামনেই তাকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়। মর্মান্তিক সেই ঘটনা। তাঁর মৃত্যুর পর সিনেমাহলের দায়িত্ব নেন প্রণবকুমার মুখার্জী। তিনি বেশ কিছুদিন চালচনোর পর সিনেমাহল লিজে দিয়ে দেন। খড়ারের পাশেই মামুদপুর ( চন্দ্রকোনা -২) গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন প্রদ্যোৎ পাঁজা। যিনি প্রথম থেকেই কলকাতার সিনেমা জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। একদিকে যেমন তিনি ছবির ব্রোকার ছিলেন, সাথে প্রযোজনার কাজও করতেন। সন্ধ্যা রায় অভিনীত 'টগরী' সিনেমা তিনিই প্রযোজনা করেন। আনন্দময়ী তাঁর হাত ধরে আবার সগৌরবে চলতে থাকে। কিন্তু দু'হাজার সালের পর থেকেই লিজ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মুখার্জী এবং পাঁজাদের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। মামলা গড়ায় কোর্টে। রায় বের হয় মুখার্জীদের পক্ষে। আনন্দময়ী বন্ধ হয়ে যায়। আনুমানিক ২০০২-  ২০০৩ সাল নাগাদ সিনেমাহল বন্ধ হয়

আনন্দময়ী সিনেমাহলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও অনেক সোনালী স্মৃতি। সিনেমার শো টাইমের আগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়ায় দেওয়া হত। ১৯৯০ সালে এমনি একটি সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সুরতীর্থ সঙ্গীত বিদ্যালয়। যার প্রতিষ্ঠাতা গৌরীপ্রসাদ বিশ্বাস। এই সঙ্গীত কেন্দ্রের আয়োজন ও আমন্ত্রণে আসেন বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।সেদিনও সঙ্গীতপ্রেমীদের ভীড়ে উপচে পড়ে প্রেক্ষাগৃহ। তবে আনন্দময়ীর ইতিহাসে সবচেয়ে হর্ষ - বিষাদের বছর হল ১৯৭১। ওই বছর প্রয়াত হন প্রতিষ্ঠাতা হরগোবিন্দ বাবু। কিন্তু তাঁর মৃত্যর আগে ওই প্রেক্ষাগৃহে নেচে মাতিয়ে দেন চুমকি এবং রুমকি রায়। আচেনা ঠেকছে নিশ্চয়ই নাম দুটো। চুমকি রায় হলেন দেবশ্রী রায়। যদিও তখনো তিনি দেবশ্রী রায় হন নি।আর তাঁর ছোট বোন তনুশ্রী রায় ওরফে রুমকি রায়। দেবশ্রী রায়ের বয়স তখন এবার বার বছর। আর ওই বছরই হিন্দি 'হরে কৃষ্ণ হরে রাম' ফিল্ম রিলিজ হয়েছে।  যেই ছবির বিখ্যাত গান 'দম মারো দম. মিট জায়ে গম…'। ওই গানে দুই বোনের মন মাতানো নাচ আজও ভুলতে পারেন নি সেদিনের অনেক দর্শক। ওই টিমে ছিলেন চিন্ময় চ্যাটার্জি।  পাঁচ টাকা ছিলে সেদিনের ওই অনুষ্ঠানের টিকিট মূল্য। শো হাউসফুল। সেই দিনের কথা আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে অনেকের মনে। আর বড্ড অনাদরে আজ দাঁোড়িয়ে আছে সেদিনের গমগম করা বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র আনন্দময়ী প্রেক্ষাগৃহ। 


তথ্যসূত্রঃ –

১. শ্রী গৌতম মুখার্জী - খড়ার

২. শ্রী সুকুমার ঘোষ –খড়ার

৩.শ্রী বিমল ঘোষ – খড়ার


সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪

Sunday 14 April 2024

নববর্ষ ও নারীর কলমে কবিতা // ই-কোরাস ১৭৫

 



আমরা এখন ফিরে যাচ্ছি

তৃষ্ণা বসাক

 

যাওয়ার সময় প্রতিটা অকিঞ্চিৎ জায়গায় গাড়ি থামানো চাই,

একটা শীর্ণ জল্ধারা, পাহাড় থেকে পড়ছে,

ওটা হয়তো কোন নামী ফলস,

মন্দাকিনী, না কি মাধুরী?


ফেরার সময় আর তাকাই না,

বারবার ফোন খুলে মোবাইলের টাওয়ার দেখি,

এয়ারপোর্টে রিপোর্টিং টাইম দেখি,

ঝড় বৃষ্টি বিদ্যুতের পূর্বাভাষ,

জমে থাকা মেসেজ, মিসড কল, প্রত্যাখাত কল,

অর্কিডের গুচ্ছ গাড়ির ছাদ থেকে নেমে আসে,

পাহাড় এসে ধাক্কা মারে দরজায়,

নাছোড় একটি ঝর্ণা এসে ভিজিয়ে দিতে চায়-

আমরা কিছুই দেখি না, আমরা এখন ফিরে যাচ্ছি।

 


গৃহপ্রবেশ

অর্পিতা কুণ্ডু


গাজন পেরিয়ে গেলে ভোর হয়

দীর্ঘায়িত ভোর।

ক্ষুদ্র মাটি, তৃণভার, ইতস্তত শালের জঙ্গল

বেদনার শত অজুহাত থেকে দূরে

স্পষ্ট বাতাস বইছে, নিন্দাহীন সুচারু বাতাস—


ভাঙা শিব, অতৃপ্ত গঞ্জিকা, ছাই

নতুন বাটির গায়ে নক্ষত্রলোকের কাদাজল—


সে বাতাসে আলিঙ্গন খুলে 

সঁপেছি শরীর এক নিষ্কম্প, ভীরু, নির্বিবাদ

শালের তৃণাভ মায়া জ্বলজ্বল করে তেজে

আমি, খানখান

আঙিনায় মেঘে ভরে উঠি… আহা!


দিন, মাস, বর্ষ শুরু হয়



পুনর্জন্ম

বেবী সাউ 


আমার কোন প্রতিবাদ নেই 

বরং অসংখ্য ঘড়ির কাছে 

ভাঁজ করে রাখি  নিজেকে 


এই চলে আসা ধ্বংসস্তুপ ঘিরে 

রহস্য

উইয়ের ঢিবি 


সাপ জাগে

 

সবুজ অরণ্য থেকে 

উঠে আসে শ্বাপদ পা  

হুজুগের দাপাদাপি চলে জনপদে


মাথার খুলি গড়ায়

মাংসের হাহাকার নিয়ে ঘুম ভাঙে

দাঁতে ঝলসে ওঠে পটাশিয়াম


রক্ত রঙে ভরে থাকে শিমুল 

একধারে

ফুটপাতে দেহের লেনদেন  


চুপ থাকি 


প্রাকৃতিক হই হে প্রমিথিউস!



দুমুঠো পান্তা চাই

তাহমিনা শিল্পী


দক্ষিণ দিগন্তরেখা পেরিয়ে ধেয়ে আসে অগ্নিবায়ু

ক্লান্ত বিষন্ন মন সিক্ত হতে চায়

আহ্লাদে ভেসে যেতে চায় 

ভাটায় পড়ে থাকা যৌবনা নদী

প্রেম ভালোবাসা বলে তার অবশিষ্ট কিছু নেই

ছিন্নমূল হয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরি

পেটে পাথর বেঁধে যোগ দেই মঙ্গল শোভাযাত্রায়

চিৎকার করে বলি-

আমি তৃষ্ণার্ত, আমি ক্ষুধার্ত।

আমায় একটু জল দাও

আমায় কিছু খেতে দাও

ইলিশ চাই না

পেঁয়াজ লঙ্কা নুন চাই না

দুমুঠো পান্তা হলেই চলবে।



আগমন

অর্থিতা মণ্ডল 


এখন কোজাগরী রাতে তারা আসে না,

জলাবিল উপচে পড়া মায়া আলোয় যে ডিঙি ভেসেছিল

তার ভেতর রেখে গেছে ভাঙা সংসারের কথকতা-


এই মুহূর্তে বড়ো খিদে, হাঙরের মুখের হাঁয়ে ছটফট করছে অর্ধমৃত স্তূপ

কেউ কারুর দিকে দেখছে না, অথচ... 


নিশ্চুপে হেঁটে আসছে তারা, ডাহুক ডাকছে অবিরত

নাগরিক কোলাহলে  সাদা জোস্নার আহুতি দিয়েছে যে যে,

দ্যাখো, অলৌকিক ভঙ্গিমায় ওরা জেনে গেছে 

যুগলে ভাসাবে ডিঙি সমকৌণিক মুদ্রায় অপরূপ প্রেম -



গান্ধর্ব

ড. অন্তরা ঘোষ


ভ্রু-পল্লবে ঈশারা তুলে

ইচ্ছেযাপনে ডাকি,

পলাশরঙা ঠোঁট ডুবিয়ে

চুমুর চিহ্ন আঁকি।

গান্ধর্বের গোপন ঝিনুকে

মুক্তো ভরা যে আলো,

কষ্ট রাতের আঁধার ঘুচিয়ে 

  প্রেমের দীপ্তি জ্বালো।

আলতাছোপানো পায়ের উপর 

 দৃষ্টি আটকে রাখি,

ভালোবাসার দুঃসাহসে

কষ্ট বিকেল ঢাকি।

হৃদয়ে আজ সহস্র ঝর্ণা

 নদী হতে পেলে তাই,

মনের গোধূলি রাঙিয়ে নিয়ে 

 স্রোত জলে ভেসে যাই।

রোদপুরুষের আলিঙ্গনে

 সঁপে দিই সব শোক,

দুরন্ত স্রোত স্বচ্ছতোয়ায়

 সোহাগ সুনামি হোক।

ভালোবাসায় নিবেদিত আজ

 গান্ধর্ব লিপিখান,

তোমাতে আমাতে মিলনেই জেনো

অলকানন্দা গান।



যেন কেউ দেখেনি 

লিপি সেনগুপ্ত


যেন কেউ দেখবেনা 

এমন ভাবে হেঁটে যাচ্ছো 

গোড়ালি থেকে দুর্বাঘাস শরীর বাঁকিয়ে দিল

আঙ্গুলে ভেজা মাটি

হাওয়ায় বুনোগন্ধ 


যেন কেউ টেরটি পেলনা এমন ভাবে তাকালে 

এক পশলা বৃষ্টির পর

রোদ পড়ল অরণ্যে



সেলাই 

খুকু ভূঞ্যা 


দীপ জ্বালার পরে শ্বাসকেও অবিশ্বাস তাই 

 সমাধিস্থ হয়ে যাই

 আঙুলেরা হয়ে ওঠে নির্জন তপস্বী

 চোখে যতটুকু ধরা যায় ঈশ্বরের মুখ

 স্থির তাকাতে তাকাতে ঘরদোর ফেলে হাঁটতে শুরু করি

 অচেনা পথ 

নক্ষত্র রঙের গাছগুলো আলোর অভ্যর্থনায় শুভেচ্ছা জানায়

পাঞ্চজন্য বাজে বাতাসে 


পোড়া সলতের গন্ধে ভেঙে যায় ধ্যান 

 পটে আঁকা ঈশ্বরের চোখে ঢুকে যাচ্ছে ভাবের কাঁপন

 যতবার সন্ন্যাস নিতে চাইছি ততবার ডেকে নিচ্ছে সংসার স্বজন 

দুপুরের দিকে তাকিয়ে ভাত চড়ালাম

 আমার ভেতর এক লালপাড় পথ চুপটি করে বসে রইল

ঘর গোছানোর পর সেলাই শেখাবে বলে,ত্রিভূমি সংযোগ --



হাসিটি নতুন হলে 

দেবশ্রী দে


যে নিবিড় আশকারায় 

বুক পেতে দাও, হেঁটে যাই নদী 

কত সে গভীর! কতখানি গল্পকাতর 

জানতে পারোনি—


শুধু জানে ঝরাপাতা-দাগ

আর জানে কোকিলের সুখ, কতখানি

হেঁটে গেলে নীলের হৃদয় খুলে যায় 


আকাশ নতুন হয়...


পাটভাঙা ভাবনার ভাঁজে 

বাংলার প্রেম বেড়ে যায়। তুমি হাসো

আর


আমার হাসিটি তার ছায়াতে লুকায়



দ্বেষহীন স্বদেশ

সুজাতা বেরা


গত রাতের বাঁকা চাঁদকে সাক্ষী রেখে

দিনপঞ্জির রোজনামচা জানান দিল

রাত পোহালেই বর্ষশেষ।

একফালি চাঁদের আলো 

রাতের বিছানায় এসে পড়লেও

বিষণ্ণতার মেঘে ভেসে এল সেই বার্তা -

ভালো নেই আমার স্বদেশ।

তবু রমজান মাসের শেষে

শাহিনের হাসিমুখের ডাকে

খোলা বারান্দায় দাঁড়াতে 

মুছে গেল সব দ্বেষ।

জানালায় তাকাতেই কানে এল

ঠাকুমার রামায়ণী সুর…

শতাব্দী প্রাচীন রথে ফিরে এল

পুরাতনী সংস্কৃতির আবেশ...

শুভ হোক আজকের দিন

শুরু হোক নতুন করে পথ চলা…



বিবাগী মনের কথা 

সোনালী মিত্র 


মেঘ সরে গেলে আকাশ রোগমুক্তি হয় 

আলোর গয়না শরীরে নিয়ে আকাশ দেখি। 

অনেকদিন এভাবে ছুঁয়ে দেখিনি স্বপ্নও আঁকিনি। 

মনে মনে শুধু চাঁদের গভীর বুকের গন্ধ নিয়ে প্রেমিকা হয়েছি। 

এভাবে চলতে চলতে বছর শেষের পাতা 

ওল্টাতে গিয়ে আমার ভালোবাসা করে তুললো বিবাগী। 

এখন আর আকাশ দেখিনা শুধু  ধার করি স্বপ্নরাত---

বিবাগী মনকে বাঁধবো আবার। 



সীমান্তে...

মৈত্রেয়ী পাল কর্মকার 


এক অজানা নদীর শঙ্খনিনাদ শুনে

ক্রমশ যারা মাটির দিকে হাঁটছিলো 

আমি সেই থেকে তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছি,


আমার আত্মহননপর্বের শেষ দৃশ্যটি

নিশ্চুপ নক্ষত্রের মতো বহুদূরে পড়ে আছে একলাই...


আমাকে আর কোনো ভালোবাসা কথা শুনিও না,

শীতের চাদরে কেঁপে ওঠা নিঃশ্বাস বইতে বইতে

হেরে গেছে অজস্র কান্না...


আমি নিশ্চিত

কোনো একদিন মাঝরাতে 

আমার মৃত্যু হবে।



পরবাস

সোমা প্রধান 


ধরো তোমার ভীষণ জ্বর

বাইরে প্রবল বৃষ্টি 

ধরো আমি কাকভেজা ভোর

এবং রোদ মিষ্টি 

নদীর জলে একটা দুটো

পাতার খেয়া ভাসে

রোজ হারায় মুখ ফেরায়

তবুও ভালোবাসে।


ধরো তোমার উঠোনে রোজ

হলুদ পাখির ডাক

ধরো হঠাৎ ঝড় উঠেছে

অচিন পথের বাঁক

দুলিয়ে আঁচল মাধবীলতা 

ঠোঁটে ঠোঁটে বলবে কথা

নদীর বুকে সাঁকোর পরবাস।



ফুল ফুটেছে

 মঞ্জির বাগ


চৈত্র শেষের বেলায় ধুয়ে যায় পুরনো আলপনা।

ভাঁটার জলে ভাসতে থাকে ফুল নামক স্মৃতি

প্রথম আলোয় ফুল ফুটে থাকতে দেখি

পাতার আড়ালে ফুলেদের সাথে কথাবার্তা সেরে নেয় প্রেম প্রজাপতি

আমার ঘুম ভাঙে, ফুলেরা তাকিয়ে আছে আলোর পাতায়

আমিও তাকিয়ে থাকি পথের দিকে

চৈত্র শেষ হলে নতুন গান গাওয়ার দিন এসে যায়।

নতুন গান গাইতে গেলে অন্তরের মাঝে থাকা পুরনোকে  ভুলে যাওয়া যায়?

ঘুমিয়ে আছে কত কিছু

আমার স্বপ্নে না ঘুমিয়ে আছে ফেলে আসা গান

পুরনো আছে বলেই নতুন গান গাই

ভালোবাসার কোন শেষ যাত্রা নেই

গাছ থেকে কুঁড়ি ঝরে পড়লেও, নদীর বয়ে যাওয়া চলতে থাকে

সমাপনী গান জানিনা বলে ভালোবাসায় ভাসতে থাকি

হে নূতন, একতারাটি দিও…



বসন্ত দিন 

মহাশ্বেতা দাস


 হাজার বছর যে পথ ধরে

     হাঁটছি আমি ধরার পথে 

সেই পথেরই মোড়ের কাছে 

   হাজার স্বপ্ন লুকিয়ে আছে। 


তুই তো ভাবিস বয়স বুঝি

 থমকে আছে কিশোর বেলায়

নাছোড় বান্দা বায়না ধরিস

     চৈত্র দিনের কী ব্যস্ততায়!


উড়ো মেঘের ঢেউয়ের দলে

   রৌদ্র ছায়া ধুলার ঝড়ে 

 মনটা যখন সঙ্গে চলে 

    স্মৃতির পাতা কথা বলে। 


হঠাৎ আসিস ঝড়ের বেগে

    ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে

উল্টো পাল্টা পাগলামিতে

     নবাব সেজে প্রেমের নায়ে।


আমি তখন ব্যস্ত ভীষণ

   এটা ওটা কাজের ছুতোয় 

উঠোন ভরা কেজো সুখে

বিকেল মরে প্রেমের জ্বালায়। 


মন খারাপের বাতিক যখন

   চায়ের কাপে দিচ্ছে চুমুক

আমিও তখন ঘাসের বনে

ছড়িয়ে মুক্তো ভাবছি যাহোক। 


শিউলি ঝরা সকাল যেমন 

     ঘাস গালিচায় মুক্ত ছড়ায়, 

মেঘ বালিকা সাদা ভেলায় 

 নীল আকাশে ওড়না ওড়ায়। 


হয়তো সেদিন ভীষণ আবেগ

     মন টা তুমুল অভিমানী 

বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি 

     স্বপ্ন গুলো ভীষণ দামী। 



দুই সখী

ইতি মণ্ডল


আমরা দুজন ভালোবাসি 

আপন মনের সখী।

আমরা দুজন অভিমানী

বৃষ্টি ফোঁটা মাখি।


আমরা দুজন বড্ড জেদী

সূয্যি চাঁদের খুনসুটি।

আমরা দুজন মনিমালা 

ভীষণ পরিপাটি।


আমরা দুজন আনমনা 

 চলি আপনবেগে

কাচের মতন মনখানা 

থাকি স্মৃতির মেঘে ।


আমরা থাকি ক্ষতের মাঝে

কাঁদি ডুকরে ডুকরে।

ভরিয়ে দিয়ে প্রেমের সাজে।

হারিয়ে  প্রেমের দোরে।


আপন মনে শিকল বেঁধে 

 চলি হাতটি ধরে। 

দিন আমাদের আপনি কাটে

  মনের দুয়ার ঘরে।



ঈশ্বর 

বনশ্রী রায় দাস 


শরীর জুড়ে লেখা আছে

মোহ মাৎসর্য, ভোগ বিলাস 

রাতদিন শুয়ে থাকি মেঘের নীচে 

ঠোঁট ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ে বল্গাহরিণ,

চলতে চলতে মোহচরে জেগে ওঠে

সবুজ ঘাস লতাগুল্ম,

হাই তোলে গর্ভবতী ফসলের মাঠ 

মাছ খেলা করে,

চাঁদের গায়ে লাগে 

সাতাশ নক্ষত্রের ঘাম।

সমস্ত কিছু আকাশের ঘুড়িটির মতো

সুতোর একটাই টান,

জেনে বুঝেই বাড়িয়ে চলি 

নিজস্ব চাওয়া পাওয়ার পরিধি!


শূন্যস্থানে ফেরার আগে

 তোমার কাছে

আর কিইবা চাইতে পারি ক্ষমা ছাড়া।



আশ্রয়

মানসী সাহু


যে বাতাস লেখে জোনাকি অক্ষর 

ভেষজ গন্ধরাত 

নোনাচরে পড়ে থাকে পাতালের আল 

রক্ত প্রবাল সেই জলসই গ্রাম 


অয়ন অতলান্তিক সেথা 

ধানশীষ বৈশাখ 

জমাটি মেঘ দুপুর

যেন তার নীলাদ্রি অভিমান।


হাঁটুজলে বৈশাখ 

কবিতা সামন্ত


জলচৌকির মতো হাঁটু জলে ডুবে আছে।


কাকের পিছনে পালক লাগিয়ে 

ময়ূর সাজলেও 

একবার করে অন্নদাতার 

ভিটেমাটি ছুঁয়ে আসে।


অস্বীকার করলেও...এ হলো শেকড় তোমাকে 

এখনো মাটির ওপর দাঁড়তে সাহায্য করতো না।


তা না হলে কেনইবা শোআপ করার জন‍্য 

পয়লা বৈশাখে ঘটা করে 

বাঙালিয়ানায় নিজেকে সাজিয়ে বাঙালির 

পরিচয়ে নিজেকে চিহ্নিত করো!


থাক, বৈশাখ আসুক,তোমার শেকড়ে লেগে থাকা 

মাটি জলে জন্মের ইতিবৃত্ত মনে করিয়ে 

দিক বাংলা বাঙালি সবাই আছে।



আবাহন

সুদেষ্ণা ঘটক অধিকার 


কি হারালাম; কিই বা পেলাম

হিসেব রাখিনি তার,

পাওয়া-না পাওয়ার

মোহ ভরা স্রোতে...

সে যে আসে যায় বার বার,

এই তো সেদিন এলো

রাগে অনুরাগে-আলো আঁধারেতে

কতো কথা বলে গেলো।

কতো কি নতুন; কতো গুনগুন

কতো পুরাতনী সুর,

কতো বেলা গেল; কতো সবুজেরা

অবেলায় হলো খুন।

কতো মার কোল-ভরে গেল সুখে

কতো কোল হলো খালি...

কতো ফোটা ফুল-ঝরলো অবাধে,

কতোক ভরলো ডালি।

গৃহ হীন কতো-গৃহ পেল খুঁজে

কতো গৃহস্থ গৃহছাড়া

কতোজন পেল জীবনসঙ্গী

কতো হলো সাথী হারা।

কতো ভালোবাসা-বদ্ধভূমিতে

সলিল সমাধি নিলো

কতো শত প্রেম-প্রহসনে শেষ,

কতো পরিণতি পেল।

আরো কতো বাকি জীবন মঞ্চে...

আমরা তো কুশীলব,

প্রতি নিতি নিতি-যেতে যেতে পথে

কতো জয়; পরাভব।

এসেছে সন্ধিক্ষণ, এসো এসো তবে

সবে মিলে করি সুদিনের আবাহন,

এসো সুখ; এসো শান্তি;

এসো নির্ভয়; এসো শক্তি;

এসো আশা; তোলো পাল...

এসো নবরূপে নব সাল।


এই যে, তোমাকে বলছি

মহুয়া ব্যানার্জী 


অনন্ত দ্রাঘিমা ধরে হেঁটে যাও কেন? 

আমি স্থবির হয়ে একা বাসস্টপে! 

ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালেই

দেখা হবে  তা অনিবার্য নয়! 

আনত দৃষ্টিপাতের রেখা ধরে 

একবার ভিক্ষা দিও মূহূর্তের ধন,

আমি চাতক সেই প্রস্তরকাল থেকে-

সমুদ্র ঢেউয়ের মত অলিখিত ভালোবাসা 

অলিগলি মাঠ ঘাট অন্নপূর্ণা পুজো 

পেরিয়ে লুকনো চাউনি অথবা ছেঁড়া 

চিঠি নিয়ে রবীন্দ্রজয়ন্তীর বিকেলের উত্তেজনায় ঘরবার, মায়ের শাড়িতে 

সেজে মঞ্চে দাঁড়ালে আমিও বয়েজ

স্কুলের রাস্তায় ক্যাবলা আজও।

তোমার স্কুলের রাস্তা বদলেছে জানি 

তবুও একদিনও কী অঙ্কে ভুল হতে নেই?

        


শেষ ফুলটি

রাখী দে


চৈত্রের শেষ ফুলটি খোঁজার মতো খুঁজে চলেছি তোমায়।


প্রতিটি ধুলোর বোঝা নিয়ে যতদূর পথ...


হেঁটে যাওয়ার দৃশ্যগুলি পিছিয়ে পিছিয়ে যায়।


কল্কের টানে মগ্নতা ফিরে এলে

চোখে ঝিমুনি ফুল ফুটে ওঠে।



অনামিকার চিহ্ন

বর্ণালী ভুঁইয়া


অন্ধকারের মধ্যে আসন পেতে বসে থাকতে থাকতে দেখেছি মাটির ভেতর লুকিয়ে থাকা অশ্রুও জানে কিভাবে আগুন হতে হয়,

কিভাবে ঘুমের সহবাসে মিশে থেকে ঈশ্বরী হতে হয়

শীত শোকে বিবস্ত্র শরীরে নদীর পাশে আলো রাখতে হয় 


রাতের নাম যদি স্নিগ্ধতা হয়

 ঘুম ভাঙে ব্রম্ভ মুহূর্তে

তখন যদি কেউ চিনিয়ে দেয় মেঘ-আলোর চুম্বন

আমি হেঁটে যাবো ধীরে ধীরে সবুজ বসন্তের দিকে...... 

রেখে যাবো অনামিকার চিহ্ন।

🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱



সম্পাদক - দুঃখানন্দ মণ্ডল

সহ সম্পাদক - শ্রীজিৎ জানা

প্রচ্ছদ ভাবনা - প্রেম মুখার্জি

কথা - ৯৪৩৪৪৫৩৬১৪


ইতি মণ্ডল এর কবিতা // ই-কোরাস ১৭৬

  ইতি মণ্ডল এর কবিতা   মগ্নতা হিমেল কুয়াশা ভরা ভোর,       আমার ছাদ বাগান। শীত সকালের আদর,              ওদের ঘ্রাণ।। চন্দ্রমল্লিকা ,পিটুনিয়...